মিয়ানমার-চীন সীমান্তে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করছে তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ)। সোমবার রাতে টিএনএলএ এই ঘোষণা দিয়েছে।
মিয়ানমারে স্থিতিশীলতার রক্ষক হিসাবেই দেশটির সেনাবাহিনীকে বিবেচনা করে চীন। গৃহযুদ্ধে সেই সামরিক বাহিনীর দ্রুত পতনের মধ্যেই বিদ্রোহীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে বেইজিং।
২০২১ সালে গণতন্ত্রের আইকন অং সান সু চি’র নেতৃত্বে একটি নির্বাচিত সরকারকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হিসাবে শুরু হলেও পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন কয়েকটি ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়।
টিএনএলএ তাদের অফিশিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের দাবি উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে সামরিক বাহিনী বিমান হামলা বন্ধ করুক। এছাড়াও বিবৃতিতে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করে চীনের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসাও করা হয়েছে।
গোষ্ঠীটির মুখপাত্র লোয়ে ইয়ে উ বলেছেন, “আমাদের বেসামরিক নাগরিকেরা বিমান হামলা এবং অন্যান্য সংকটে আক্রান্ত। তাই আমাদের একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে।”
২০২৩ সালে শুরু হওয়া “অপারেশন ১০২৭” নামে একটি সমন্বিত আক্রমণের অংশ টিএনএলএ। অপারেশন শুরুর তারিখ অনুসারে এই নাম ঠিক করা হয়েছে। অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে এই আন্দোলনেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। বেশ কয়েকটি শহর এবং সামরিক পোস্টের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেনাবাহিনী।
এর আগে জানুয়ারিতে চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছিল বিদ্রোহী জোটটি। কিন্তু জুনে এই চুক্তি ভেস্তে যায় এবং আবার যুদ্ধ শুরু হয়।
টিএনএলএ এর বিবৃতির প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলেও রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেননি মিয়ানমার জান্তার মুখপাত্র এবং ইয়াঙ্গুনে চীনের দূতাবাস।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সমান্তরাল প্রশাসন ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) বলেছে, দেশটির সংকটে মধ্যস্থতায় জড়ানোর সময় বেইজিংকে অবশ্যই মিয়ানমারের জনগণের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনায় রাখতে হবে।
এনইউজি এর মুখপাত্র কিয়াও জাও বলেছেন, “মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এমন বৈঠক না করার জন্য চীনকে উত্সাহিত করতে চাই, কারণ এটা দেশের শান্তির জন্য সহায়ক হবে না।”
ডিডাব্লিউ ডটকম
Leave a Reply