শ্রী নিখিলনাথ রায়
প্রাসঙ্গিক (Formal) সাক্ষীদিগের কথা ছাড়িয়া দিলে, ফরিয়াদীর পক্ষ হইতে কমল উদ্দীন, তাহার ভৃত্য হোসেন আলি, খাজা পিক্রস, সদর উদ্দীন, মোহনপ্রসাদ, নবকৃষ্ণ, সহবৎ পাঠক এবং কৃষ্ণজীবন দাস এই আটজন প্রধান সাক্ষীকে উপস্থিত করা হয়। ফরিয়াদীপক্ষ হইতে এরূপ প্রমাণ করিতে চেষ্টা করা হয় যে, বুলাকীদাসের অঙ্গীকার-পত্রে যে তিন জন সাক্ষী ছিল, তাহাদের মধ্যে শীলাবতের মৃত্যু হইয়াছে, মাতাব রায় নামে কোন লোকই ছিল না ও মহম্মদ কমল, কমল উদ্দীন খাঁ ব্যতীত আর কেহই নহে।
আসামী পক্ষ হইতে প্রমাণ করিতে চেষ্টা করা হয় যে, অঙ্গীকার-পত্রের তিন জন সাক্ষীরই মৃত্যু ঘটিয়াছে। আমরা এই সাক্ষীদিগের মধ্য হইতে দুই চারি জনের সাক্ষ্যের সংক্ষিপ্ত মর্ম্ম প্রদান করিতেছি। পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে যে, বুলাকীদাসের অঙ্গীকার-পত্রে মাতাব রায় ও মহম্মদ কমল মোহর করে ও শীলাবৎ নাম স্বাক্ষর করিয়া দেয়। কমল উদ্দীনের সাক্ষ্য হইতে প্রমাণ করিতে চেষ্টা করা হইয়াছিল যে, অহম্মদ কমলের মোহরই তাহার নিজের মোহর। এই কমল উদ্দীনই আমাদিগের পূর্ব্বোল্লিখিত সেই শয়তান-প্রকৃতি হিজলীর ইজারদার।
কমল উদ্দীন বলিতে আরম্ভ করে যে, ১৯৬৩খৃঃ অব্দে যখন নন্দকুমার নবাব মীর জাফরের সহিত মুঙ্গেরে অবস্থান করিতেছিলেন, সেই সময় সে মুঙ্গেরে মহারাজের নিকট তাহার মোহর পাঠাইয়া দেয়। মোহর পাঠাইবার এইরূপ কারণ উপস্থিত হয়। এক সময়ে কমল উদ্দীন কোন কারণে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল; পরে কারাগার হইতে মুক্তি লাভ করিলে, সে নবাব মীর জাফরের নিকট এক আর্জি দাখিল করিবার ইচ্ছা করে। নন্দকুমারকে সে কথা জানাইলে, তিনি আজি লিখাইয়া কমলের মোহরসংযুক্ত করিবার জন্য তাহা চাহিয়া পাঠান।
এইজন্য সে নবাবকে > স্বর্ণ মোহর ও ৪ টাকা নজর এবং নন্দকুমারকে সেইরূপ এক স্বর্ণ মোহর ও ৪ টাকা নজর পাঠাইয়া সেই সঙ্গে তাহার নামের মোহরও পাঠাইয়া দেয়। অঙ্গীকার-পত্রের মোহরে আবদুল মহম্মদ কমল লেখা থাকায় এবং তাহার নাম কমল উদ্দীন হওয়ায় উভয়ের পার্থক্যের কথা জিজ্ঞাসা করিলে, কমল উত্তর দেয় যে, পূর্ব্বে তাহার নাম মহম্মদ কমল ছিল; পরে নবাব নজম উদ্দৌলার সময় যে কমল উদ্দীন আলি খ। এই উপাধি পাইয়াছে এবং তদবধি সে সেই নামের একটি মোহর ব্যবহার করিয়া থাকে।
Leave a Reply