ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
ভৌগোলিক সীমানা অঞ্চল। ইনকা সাম্রাজ্যের ভৌগোলিক সীমানাকে এক নজরে এনে এইভাবে বলা যায়। উত্তর থেকে দক্ষিণে ২৫০০ মাইল প্রসারিত আন্দেস পর্বতমালার কলমরিফ থেকে চিলি হয়ে পূর্বদিকে আতাকামা মরুভূমি থেকে আমাজনের বনাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই ইনকা। ইনকা সাম্রাজ্য তার উন্নতি ও প্রসারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে বৈভর সম্পদ-এর প্রাচুর্য নিয়ে সারা দুনিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। বিশেষ করে প্রত্নঐতিহাসিকও নৃতাত্ত্বিকদের উৎসাহ ও কৌতূহল জাগিয়েছিল।
রাস্তাঘাট যোগাযোগ: ইনকা সাম্রাজ্যের প্রসার বিস্তারের অন্যতম কারণ ও ফল হল এর রাস্তাঘাট-এর বিস্তৃত অঙ্গণ। আদতে ইনকাদের রাস্তা যোগাযোগ-এর ব্যবস্থাটি ছিল খুবই উন্নত। একটি রাস্তার দৈর্ঘ্য হল দক্ষিণ আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল পর্যন্ত। আল্পস পর্বতমালার কোল ঘেষে থাকার জন্য রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে তাদের বিশেষ দক্ষতা দেখাতে হয়েছিল। এর মধ্যে যথেষ্ট কারিগরি, স্থাপত্য এবং প্রযুক্তি ও কৌশল যুক্ত করতে হয়েছিল।
উচ্চসড়কগুলি পাথর-এর দেয়াল দিয়ে ঘিরতে হয়েছিল যাতে পর্যটক এবং পথচারিরা উপর থেকে পড়ে না যায়। রাস্তা, পথঘাট সব কিছুকে সবরকমের ভাল হাওয়ার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছিল। চৌদ্দ হাজার মাইল লম্বা রাস্তা গাড়ি ঘোড়া চলার ফলে যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সেই দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। যানবাহন যোগাযোগ খুবই ভাল ছিল এবং খুব দ্রুত যাওয়া আসা করার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
কুজকো অঞ্চলের সঙ্গে পাহাড় পর্বতের যোগাযোগের সুব্যবস্থা ছিল। বাড়ি তৈরির মালমশলা এবং অন্যান্য মিছিল ঐ রাস্তা দিয়ে সহজেই যেতে পারত। রাস্তাগুলি এমনভাবে তৈরি করা হত যাতে ঝড়, বন্যা, খরার আঘাতেও তার কোন ক্ষতি না হয়। ইনকার কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও সড়ক ব্যবস্থার সৌকর্য সমসাময়িক রোমের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
(চলবে)
Leave a Reply