সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:২৩ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ ব্যাংক খাতের দুর্দশার দায় অডিট ফার্ম ও ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠানেরও

  • Update Time : রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯.৪০ এএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “কাগুজে কোম্পানি এখন ইচ্ছাকৃত খেলাপি”

একে একে তিনটি কাগুজে কোম্পানি খুলে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ৭৬৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। এর মধ্যে নতুন এক প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে পুরোনো একটি ঋণ শোধ করা হয়েছে। কিছু টাকা গেছে ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা সিকদার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবেও। ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এসব ঋণ বের করা হয়, যা নেওয়া হয়েছে টেলিভিশনের সম্প্রচার সরঞ্জাম ও ভবন নির্মাণের নামে।

এখন এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকটির পাওনা দাঁড়িয়েছে মোট ৭৬৯ কোটি টাকা। খেলাপিও হয়ে পড়েছে এসব ঋণ। যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও গ্রাহকের সাড়া পাচ্ছে না ব্যাংক। সে কারণে গ্রাহককে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি’ ঘোষণা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের নথিপত্র পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাজধানীর মালিবাগের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কের ৪২ নম্বর ভবনের ঠিকানা ব্যবহার করে এসব অর্থ তুলে নেওয়া হয়। ভবনটি দেশ টেলিভিশনের কার্যালয় হিসেবে পরিচিত। টেলিভিশনটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়। তবে ওই ঠিকানায় ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি ব্যাংক। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো প্রকৃতি অ্যাসোসিয়েটস, হাসান টেলিকম ও ব্রডওয়ে রিয়েল এস্টেট। এর মধ্যে ব্রডওয়ে রিয়েল এস্টেটের কাছে পাওনা ৬৬৮ কোটি টাকা, যাকে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি’ হিসেবে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক।

নগদ অর্থের সংকটে থাকা প্রথম প্রজন্মের এই ব্যাংকের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন শাখায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। এসব কর্মকর্তার অভিযোগ, টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া কিছু গ্রাহকের কারণেই ব্যাংকটি এখন বিপাকে পড়েছে।

 

দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় আজ”

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর আজ রবিবার রায় ঘোষণা করবে হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চের আজকের কার্যতালিকায় মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রয়েছে। গত ২১ নভেম্বর এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি গ্রহণ শেষ হয়। এরপর মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য সুনির্দিষ্ট দিন ধার্য না করে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের আজকের কার্যতালিকায় মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য আসল।

এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের কৌঁসুলিরা আসামিদের সাজার রায় বাতিল করে খালাস দেওয়ার আবেদন করেছেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মো. শিশির মনির।

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ ব্যাংক খাতের দুর্দশার দায় অডিট ফার্ম ও ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠানেরও”

বেসরকারি খাতের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবিএল) ঋণমান বা ক্রেডিট রেটিং দীর্ঘমেয়াদে ‘এ প্লাস’ (A+)। স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-২’। পাশাপাশি ব্যাংকটির ভবিষ্যৎ পূর্বাভাসও স্থিতিশীল। ২০২৩ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ব্যাংকটির এ ঋণমান দিয়েছে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)। এ সময় ব্যাংকটির বহির্নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ছিল খান ওয়াহাব শফিক রহমান অ্যান্ড কোম্পানি। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত এ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশীদার মোহাম্মদ শহিদ ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করেছিলেন।

ব্যাংকটির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এফএসআইবিএলের খেলাপি ঋণ মাত্র ২ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ শতাংশেরও কম। গত বছর ৩৩১ কোটি টাকা নিট মুনাফা করা ব্যাংকটির মূলধন কাঠামোও বেশ শক্তিশালী।

নিরীক্ষক ও ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠানের এসব তথ্য আমলে নিলে যেকোনো বিচারে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা বেশ ভালো। যদিও বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ব্যাংকটির আর্থিক সক্ষমতা। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকটির নিজস্ব নিরীক্ষায় উঠে আসতে থাকে ব্যাপক মাত্রায় জালিয়াতির তথ্য। অর্থ উত্তোলনের চাপে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় ব্যাংকটির ক্যাশ কাউন্টারও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক নিরীক্ষা বলছে, নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। আর ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হারও ২০ শতাংশের বেশি। সঠিকভাবে হিসাবায়ন করলে ব্যাংকটির কোনো মুনাফাই হওয়ার কথা নয়। অর্থাৎ নিরীক্ষক ও ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান যেসব তথ্যের সত্যায়ন করেছিল, সেগুলো পুরোপুরি অসত্য।

এফএসআইবিএলসহ যে ১০ ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, সেগুলোর প্রতিটি থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক, বহির্নিরীক্ষক ও ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষায় তা উদ্ঘাটন বা সংশোধনের পরিবর্তে সত্যায়ন করা হয়েছে। আর এসব অনিয়মকে বৈধতা দিয়েছে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন। এসব প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক যোগসাজশের কারণেই এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি এতটা নাজুক হতে পেরেছে বলে অভিযোগ আর্থিক খাতসংশ্লিষ্টদের।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “সামনের দৃশ্যপট কেমন হবে?”

ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সবে দায়িত্ব নিয়েছে। চারদিকে তখনও বিশৃঙ্খলা। দাবির খাতা খোলা শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা সরকারকে পরামর্শ দিলেন, একটি দাবিও যেন মানা না হয়। যুক্তি ছিল, কারও দাবি মানলে গেট খুলে দেয়া হবে। তখন অন্যরাও ফর্দ নিয়ে হাজির হবেন। আদতে হয়েছেও তাই। সরকারের বয়স আজ ১১৫ দিন। এরমধ্যে সুস্থির দিন কমই কেটেছে। একের পর এক আন্দোলন, বিক্ষোভ। এক হিসাবে এ সময়ে শ’ খানেক আন্দোলন হয়েছে। সরকার অবশ্য হার্ডলাইনে যায়নি। শুরু থেকেই চেষ্টা করেছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের। প্রশ্ন উঠেছে এর শেষ কোথায়?

কেন এই অস্থিরতা?
সরকার তখনও দায়িত্ব নেয়নি। এরইমধ্যে শাহবাগে একটি জনগোষ্ঠীর বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। আন্দোলনের ট্রেন এখনো চলছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সচিবালয়ে ঢুকে পড়া ছিল ব্যাপক আলোচিত। তারা অবশ্য দাবি আদায়ে সক্ষম হয়। অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন, এটি ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। পরে আনসার সদস্যদের একটি গ্রুপ বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে। সেটা অবশ্য শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হয়। পোশাক খাতে শুরু হওয়া আন্দোলন এখনো থামেনি। কিছু কারখানায় বেতন বকেয়া থাকাই এ খাতে অস্থিরতা প্রধান কারণ। জুট ব্যবসার হাত বদল নিয়েও শুরুতে কিছু সংঘাত হয়েছে। ভিনদেশি উস্কানির অভিযোগও করে থাকেন কেউ কেউ। শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা অবশ্য অনেককেই হতবাক করেছে। সর্বশেষ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের গ্রেপ্তার এবং আদালত এলাকায় আইনজীবীকে হত্যার ঘটনায় বড় ধরনের সংকট তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সতর্কতায় আপাত তা এড়ানো গেছে। এই অস্থিরতা কেন- বিশ্লেষকরা শুরু থেকেই সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন। এমনিতে দুনিয়ার যে কোনো দেশেই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অস্থির পরিস্থিতির তৈরি হয়। বাংলাদেশে ১৫ বছরের প্রবল পরাক্রমশালী শাসকের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনদিন দেশ সরকারবিহীন অবস্থায় ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির এটিও একটি কারণ। ৫ই আগস্ট সম্ভবত আধুনিক পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুলিশের সব সদস্য থানা ছেড়ে চলে যান। তাদের কর্মক্ষেত্রে ফেরাতেও সময় লাগে। তবে পুলিশকে এখনো শতভাগ সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ বাড়ার এটি প্রধান কারণ। প্রশাসনও পুরোমাত্রায় সরকারকে সহযোগিতা করছে না। পনেরো বছর এতো ধাপে দলীয়করণ করা হয়েছে যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইলেও তা থেকে বের হতে পারেনি। কিছু ক্ষেত্রে কয়েকজন উপদেষ্টার দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তারা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে দেশি-বিদেশি নানা পক্ষের ইন্ধনের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। পলাতক স্বৈরাচারের অর্থও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024