রেজাই রাব্বী
গত জুলাইতে গুঞ্জন ওঠে প্রার্থনা ফারদীন দীঘির বিয়ে নিয়ে। যার সূত্রপাত ঘটে দীঘি তার নিজের ফেসবুক একাউন্টে বিয়ের কার্ডের ছবি প্রকাশ করার মাধ্যমে। যেখানে দেখা গেছে দীঘির হাতে মেহেদী, আংটি আর হাতের নিচে একটি বিয়ের কার্ড। ক্যাপশন ছিল অপেক্ষা করতে পারছি না, আলহামদুলিল্লাহ। দীঘির সেই পোষ্ট নেটিজেনদের মধ্যে নানান জল্পনা—কল্পনার সৃষ্টি করেছিলেন। এবার প্রকাশ্যে এলো সেই বিয়ের কাহিনী যেখানে তিনি সবাইকে বিয়েতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
এদিকে গত জুলাইতে সেই বিয়ের কাহিনী মুক্তির কথা থাকলেও দেশের পরিস্থিতির কারনে মুক্তি পায় নভেম্বরে। বলছিলাম মিনিস্ট্রি অফ লাভ সিরিজের দেশের জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘৩৬-২৪-৩৬’ এর কথা।মিনিস্ট্রি অফ লাভ প্রোজেক্টের অন্যান্য গল্পগুলোতে রোমান্টিক গল্প প্রাধান্য পেলেও এই গল্পে ছিল ভিন্ন কিছু, ছিল রোমান্টিকতা এবং এর বাইরেও বিভিন্ন কিছু উপস্থাপন করা হয়েছে যেখানে দেখানো হয়েছে নিজেকে ভালোবাসার গল্প, নিজেকে ভালোবেসে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচার গল্প। গল্পের মাঝে সুন্দর এই মেসেজও দিয়েছেন পরিচালক। উপভোগ্য এই গল্পে যাদের বেশি ওজন তাদের কাহিনী নিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমায় প্রিয়ন্তী চরিত্রে দীঘি এবং তাহসির চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৈয়দ জামান শাওন।
বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবু হুরায়রা তানভীর। ফটোগ্রাফারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন গোলাম কিবরিয়া তানভীর । একটি বিয়েকে কেন্দ্র করে রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের সিনেমায় উঠে আসে প্রেম, কিছু সমস্যা ও অনুভূতির নানা দিক। অন্যদিকে অবাক করে দিয়েছে সিনেমায় সায়রা চরিত্রে অভিনয় করেছেন কারিনা কায়সার। গল্পে সায়রা স্বাস্থ্যবান। তার ওজন ১২০ এরও বেশি। সায়রা একটি ওয়েডিং প্ল্যানারে জব করে পাশাপাশি ক্র্যাপ্টের একটা পেইজ ও আছে তার। সেই পেইজে তাহসির তার ভালোবাসার মানুষকে প্রপোজ করার জন্য একটা গিফট অর্ডার করে।
এ নিয়ে সায়রা এবং তাহসিরের মাঝে অনেক কথা চলতে থাকে। তাহসির তার পছন্দের মানুষের কাছে রিজেক্ট হলে সেই গিফটটা সে সায়রার কাছেই রিটার্ন পাঠায়। তারপর দুজনের প্রতিনিয়তই প্রচুর কথা বলতে থাকে এবং সায়রার সাথে তাহসির দেখা করতে চাইলে সায়রা বারবার না করেন । একপর্যায়ে জোড়াজোড়িতে শেষ পর্যš Íদেখা করতে রাজি সায়রা। সাক্ষাতের দিন দুজনের ভালই আলাপচারিতা চলে এতে খুশি হয় সায়রা কারণ তার বেশি ওজনের কারণে খুব কেউ তার সাথে ঠিকমতো কথাও বলে না অন্যদিকে তার সাথে ভালো মতো কথা বলতে থাকেন তাহসির।
বেশ খুশি হয়ে বাসায় ফেরার পর সায়রা দেখেন তাহসিরের ফোন অফ তার ফেসবুকেও ব্লক দেখা যায়। অন্যদিকে সায়রা তাহসিরের বন্ধুদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তাহসিরের ক্যান্সার হয়েছে কয়দিন পর জানতেও পারে তাহসির মারাও গেছে। এতে ভীষণভাবে কষ্ট পায় সায়রা। কারন তার একমাত্র ভালোবাসার মানুষ ছিল তাহাসির। এরপর কেটে যায় চার বছর। এরপর নিজের একটি ওয়েডিং প্লানের বস হয় সায়রা। আর একটি ওয়েডিং ইভেন্টে সায়রা দেখা পায় তাহসিরের। যা ছিল প্রিয়ন্তী ও তাহসিরের বিবাহ প্রোগ্রাম।
বিবাহের হলুদের রাতে তাহসিন ও তার বন্ধুরা মিলে মদ্যপান করে সায়রা কে নিয়ে পূর্ব ঘটনা পর্যালোচনা করে। এদিকে তাহসিরের বন্ধুর সে সময়ের বলা সব কথা ভিডিওর মাধ্যমে দেখতে পায় সায়রা। এরপর তাহসিরের এর কাছে সেই ভিডিও পাঠায় সায়রা এবং তাহসিরকে বলে আমি সবার সামনে দেখাবো এই ভিডিও সেইসাথে অনেকবার থ্রেড করে সায়রা তাহসিরকে। এরপর দেখা যায় তাহসির এসে সায়রার কাছে ক্ষমা চায়। কিন্তু সায়রা এসব শুনতে চায় না। শেষ দিকে প্রিয়ন্তি কবুল বলে বসে আছে কিন্তু তাহসির অনেকবার চেষ্টা করার পরও কবুল বলতে পারে না।
তারপর প্রিয়ন্তীর কাছে পূর্বের সব ঘটনা বলে তাহসির দুঃখ প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে প্রিয়ন্তীর সব ঘটনা মেনে নেয় এবং শেষমেষ সায়রার সাথে একজন ফটোগ্রাফারের সম্পর্ক হয় সায়রার এভাবেই সমাপ্ত হয় গল্পের। সিনেমাটা সায়রা একাই টেনে নিয়ে গেছে, এবং তার সুন্দর অভিনয় ও এক্সপ্রেশন দিয়ে মুগ্ধ করে রেখেছে। তাকে খুব প্রাণবন্ত লেগেছে। এদিকে সিনেমার কয়েকটি দৃশ্যে দেখা মেলে সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় কায়সার হামিদের।
কারিনা কায়সার ও মোনতাসির মান্নানের রচনায় এবং রেজাউর রহমানের পরিচালনায় সিনেমার অভিনয় করেছেন সৈয়দ জামান শাওন, প্রার্থনা ফারদীন দীঘি, কারিনা কায়সার, মিলি বাশার, আবু হুরায়রা তানভীর, গোলাম কিবরিয়া তানভীর, শহীদুল আলম সাচ্চু, রোজী সিদ্দিকী, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, শামীমা নাজনীনসহ আরো অনেকে।
Leave a Reply