আর্কাদি গাইদার
অষ্টম পরিচ্ছেদ
এদিক-ওদিক দেখে নিয়ে তিঙ্কা ফিসফিস করে বললে:
‘আজ সন্ধেয় আমাদের ওখানে আসিস। বাপি বলে দিয়েছে আসতে। ভুলিস না যেন।’
‘তোর বাবার আমাকে কী দরকার? এবার কী মতলব এ’টেছিস বল দেখি?’
‘কিছুই মতলব আঁটি নি। আসবি কিন্তু, ভুলবি না।’
তিষ্কাকে গম্ভীর ঠেকল, কিছুটা যেন উৎকণ্ঠাও রয়েছে মনে হল। বুঝলুম, ও তামাশা করছে না।
সেদিন সন্ধেয় কবরখানায় গেলুম। তখন তুষার-ঝড় বইছে। তুষারে-মোড়া টিমটিমে বাতিগুলোয় রাস্তায় আলো হয়েছে কিনা সন্দেহ। বনে আর কবরখানায় যেতে গিয়ে একটা ছোট মাঠ পার হতে হল। ধারালো তুষারফলক মুখে কেটে বসতে লাগল। মাথাটা কোটের কলারের মধ্যে ডুবিয়ে তুষারের জাজিম-পাতা পথ ধরে জোরে-জোরে কবরখানার গেটের সবুজ বাতিটা লক্ষ্য করে হাঁটতে লাগলুম। হঠাৎ একটা কবুরের পাথরে পা বেধে বরফের ওপর আছাড় খেলুম। চৌকিদারের বাসার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ধাক্কা দিলুম, সাড়াশব্দ নেই। আবার ধাক্কা দিলুম। তারপর দরজার ওধারে পায়ের শব্দ পেলুম।
‘কে?’ চৌকিদারের পরিচিত হে’ড়ে গলা শোনা গেল।
‘আমি, ফিয়োদর-কাকা।’
‘বরিস, তুমি?’
‘হ্যাঁ। শিগগির দোর খুলুন।’
আগুনে উত্তপ্ত হয়ে-থাকা বাসার মধ্যে ঢুকলুম। টেবিলের ওপর সামোভার দাঁড় করানো। একটা প্লেটে খানিকটা মধু আর পাঁউরুটি। যেন কিছুই হয় নি এমন ভাব করে তিকা বসে-বসে একটা খাঁচা সারাচ্ছিল।
Leave a Reply