শ্রী নিখিলনাথ রায়
তাহার পিতামহ হুগলীতে বাস করিতেন; কিন্তু বর্দ্ধমানের মানকরে তাঁহার কারবার ছিল। মাতাব রায়ের সহিত হাজারীমল ও কাশীনাথের পরিচয় ছিল বলায়, তেজরায়ের সাক্ষ্য শেষ হইতে না হইতে, হাজারীমল ও কাশীনাথ বাবু নামে দুইজন সাক্ষীকে উপস্থিত করা হয়। এই সাক্ষিদ্বয়কে কোন্ পক্ষ হইতে আহ্বান করা হইয়াছিল, তাহার প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিন্তু কেহ কেহ ইহাকে আদালতের মানিত সাক্ষী বলিয়া অনুমান করিয়া থাকেন। হাজারীমল হেষ্টিংস-স্থাপিত কুঠীর একজন অংশীদার এবং কাশীনাথ হেষ্টিংসের বন্ধু রসেল সাহেবের বেনিয়ান ছিল।
হাজারীমল প্রথমতঃ কোন মাতাব রায়কে দেখিয়াছে কিনা বলিতে চাহে না; পরে বলে যে, একজনকে দেখিয়াছে, কিন্তু তাহার সহিত তেজ রায়ের সাক্ষ্যানুযায়ী তাহার ভ্রাতার বয়সের মিল হয় না; অনেক বৎসরের পার্থক্য হয়। কাশীনাথ বলে যে, সে যে মাতাব রায়কে চিনিত; সে তেজ রায়ের ভ্রাতা নহে; কিন্তু বঙ্গুলালের পুত্র। তেজ রায়কে সম্মুখে উপস্থিত করিলেও সে তেজ রায়কে সাহেব রায়ের পুত্র বলিয়া চিনিতে পারে নাই। পরে বলে যে, আমি আর একজন বগুলালকে চিনিতাম, তাহার হুগলীতে বাস ছিল এবং সে মানকরে কাজ করিত।
বর্দ্ধমানের বাণীয় পেস্কার রূপনারায়ণ চৌধুরী সাক্ষ্য দেন যে, তিনি তেজ রায় ও মাতাব রায় দুই ভ্রাতাকে চিনিতেন এবং তাহাদিগকে সাহেব: রায়ের পুত্র বলিয়াই জানেন; মাতাব রায়ের মোহরযুক্ত এক পত্রেরও প্রাপ্তি স্বীকার করেন। রূপনারায়ণের পর জয়দেব চোৰেকে সাক্ষীর স্থলে উপস্থাপিত করা হয়। জয়দেব চোবে বলে যে, আমি জানি বুলাকীদাসের আদেশে তাহার মুহুরী মহারাজ নন্দকুমারকে অঙ্গীকার-পত্র লিখিয়া দেয়। মাতাব রায় নামে এক ক্ষত্রিয়, মহম্মদ কমল ও. বুলাকীদাসের উকীল শীলাবৎ সাক্ষী হয়।
অঙ্গীকার-পত্রে টাকার কথা ৪০ হাজার হইতে ৪৫ হাজারের মধ্যে লেখা হয় বলিয়া মনে হইতেছে। আর একবার বলে যে, ৪০ হইতে ৫০ হাজারের মধ্যে লিখিত হয়। কমল উদ্দীন খাঁ মহম্মদ কমল কিনা জিজ্ঞাসা করিলে, সে উত্তর দেয় যে, কমল উদ্দীন মহম্মদ কমল নহে। মহম্মদ কমল ৫।৬ বৎসর হইল প্রাণত্যাগ করিয়াছে। সে মহারাজের বাটীর এক পার্শ্বে থাকিত, তথায় তাহার মৃত্যু হয়। আমি তাহার মৃতদেহ বহন করিয়া কবর দিতে লইয়া যাইতে দেখিয়াছি। মাতাব রায় ক্ষত্রিয়কেও সে জানিত বলিয়া স্বীকার করে।
Leave a Reply