সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ভয়মুক্ত নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি: প্রধান উপদেষ্টা”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভয়মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার কথা বলেছেন, যেখানে জনগণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলছি। আমরা সবাই একমত যে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি আছে। আমি সম্প্রীতির সঙ্গে একটি জিনিস যোগ করতে চাই, সেটা হলো ভয়। সম্প্রীতির পাশাপাশি আমাদের মনে ভয়ও রয়েছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ভয়ে ভীত নাগরিক নই। আমরা নির্ভীক নাগরিক। এমন পরিবেশ তৈরি করা হবে, যাতে মানুষের মধ্যে কোনো ভয় না থাকে।’ তিনি এমন এক বাংলাদেশ গড়ার ওপর জোর দেন, যেখানে একজন নাগরিক অন্য নাগরিককে ভয় পাবেন না।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “কেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্ব?”
বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কার্যত ভেঙে পড়ার অবস্থায় পৌঁছেছে। গত আগস্ট মাসে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে টিকতে না পেরে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালানোর পর থেকেই হিমশীতল পর্যায়ে পৌঁছেছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
তবে গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর বুলিয়ে দেখলে সহজেই অনুমেয় যে হিমশীতল অবস্থা থেকে চরম তিক্ত অবস্থার দিকে যাচ্ছে দু’দেশের সম্পর্ক। এই অবস্থার শুরু বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর। একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি হিসেবে গত ২৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।
এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন দুই ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় আন্দোলন শুরু করে বিজেপি এবং তার অন্যান্য মিত্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশন কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে হিন্দু সংঘর্ষ জোট নামের একটি সংস্থার শতাধিক কর্মী-সমর্থক।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়েছে”
গণবিক্ষোভের মুখে দুই বছর আগে শ্রীলংকায় গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকারের পতন হয়। ওই সময় অর্থনৈতিকভাবে নজিরবিহীন দেউলিয়াত্বের মুখোমুখি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটি। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে মূল্যস্ফীতির হার ঠেকেছিল প্রায় ৭০ শতাংশে। ডলার সংকটের কারণে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করা দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ঋণাত্মক পর্যায়ে আছে তিন মাস ধরে। গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি নয়, মূল্যসংকোচনের ধারায় রয়েছে দেশটি। অর্থাৎ শ্রীলংকার বাজারে পণ্যের দাম না বেড়ে উল্টো কমছে। সর্বশেষ নভেম্বরে এসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল ঋণাত্মক ২ দশমিক ১০ শতাংশ (মাইনাস ২.১০%)।
কয়েক বছর ধরে চরম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা না ফিরলেও চলতি বছরে এসে অর্থনৈতিকভাবে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশটি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় সাফল্যের দেখা পেয়েছে পাকিস্তানও। নভেম্বরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, যা সাড়ে ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “কম দামের পণ্য শেষ হয়ে যায়, লাইন শেষ হয় না”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারে হাঁসফাঁস অবস্থা। কাঁচা সবজি থেকে মাছ, মাংস, চাল, ডাল, তেল- এমন কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই যা কিনতে ঘাম ঝরছে না সাধারণ মানুষের। তাই একটু স্বস্তিতে পণ্য কিনতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর ট্রাক সেল ও ওএমএস ট্রাক সেল সেন্টারে ছুটছে সাধারণ মানুষ। তবে চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন অনেকে। টিসিবি-ওএমএস-এর ট্রাকে পণ্য কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন- লাইন শেষ হওয়ার আগেই পণ্য শেষ হয়ে যায়।
সরজমিন দেখা যায়, মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকার র্যাব ক্যাম্পের ঠিক উল্টো পাশে টিসিবি ট্রাক সেল কার্যক্রম চলছে। ট্রাক সেলের ব্যানারে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল, ৬০টাকা কেজি মশুর ডাল ও ১০০ টাকা লিটার তেল বিক্রি করার কথা উল্লেখ থাকলেও চাল পাননি অনেকে। চালের বদলে টিসিবি’র ট্রাকে দেয়া হচ্ছে আলু। আর টিসিবি’র এসব পণ্য নিতেই প্রখর রোদের মধ্যেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন অন্তত এক থেকে দেড়শ’ মানুষ। যাদের বেশির ভাগই নারী। কেউ এসেছেন কোলে বাচ্চা নিয়ে, কেউ আবার ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা। নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি আছেন মধ্যবিত্ত পরিবারেরও অনেক সদস্য। অনেকে মুখে মাস্ক লাগিয়ে দাঁড়ান লাইনে।
তাদের একজন রাবেয়া বেগম। কোলে তিন মাসের শিশু নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন টিসিবি’র লাইনে। রোদ থেকে শিশুকে রক্ষার জন্য বার বার তার মাথায় কাপড় জড়িয়ে দিচ্ছিলেন। রাবেয়া বলেন, আমার স্বামী আগে ছোটখাটো একটা ব্যবসা করতেন। এখন তার ব্যবসাটা ভালো চলে না। এরপর বাজারে পণ্যের যে দাম কিছু কেনা যায় না। এক কেজি ভালো চাল বর্তমানে ৭৫ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। মাছ, মাংস, সবজি এমন কিছু নেই যে, যার দাম বাড়েনি। তাই এখানে এসেছি একটু কম দামে পণ্য কিনবো বলে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও আমাদের খালি হাতে ফিরতে হয়। সবাই পণ্য পাই না। আমার এই ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে লাইনে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে আছি, তারপরও পণ্য পাবো কিনা জানি না।
যুগান্তরের একটি শিরোনাম “২০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের শঙ্কা”
রাজনৈতিক পালাবদলের ধাক্কা লেগেছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। অধিকাংশ প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি নেই। এর ফলে চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে বৈদেশিক সহায়তা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত অর্থবছর ছেঁটে ফেলা হয়েছিল ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ। তবে এবার বেশি টাকার বরাদ্দই বাদ দিতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চাওয়া হচ্ছে বৈদেশিক ঋণ বা অনুদান আছে এমন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়িয়ে ডলার সংগ্রহ বৃদ্ধি করা।
এদিকে এরই মধ্যে সংশোধিত এডিপি তৈরির জন্য প্রকল্পভিত্তিক বৈদেশিক অর্থের বরাদ্দ নির্ধারণে চার দিনের সিরিজ বৈঠকে বসছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। আগামী ৯ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া এসব বৈঠকে ৫১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইআরডির সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আজম বুধবার যুগান্তরকে বলেন, দেশে একটা অনিশ্চিত পরিস্থিতি চলছে। যেভাবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে অতীতে এ রকম ঘটনা ঘটেনি। সেই সঙ্গে প্রশাসনে রদবদল হচ্ছে। নতুন সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে।
Leave a Reply