ডিসেম্বর ৬, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: বেইজিং এমব্রয়ডারি চীনের নকশাকারুশিল্পের এক অনন্য ধারা। এই শিল্প ইমপেরিয়াল এমব্রয়ডারি বা রাজকীয় এমব্রয়ডারি নামেও পরিচিত।
একসময় সম্রাটের পরিবারের সদস্যরা ছাড়া এই ধরনের এমব্রয়ডারি করা পোশাক কারও ব্যবহার করার অনুমতি ছিল না। তবে আধুনিক চীনে এই ধরনের এমব্রয়ডারি যে কোন মানুষই ব্যবহার করতে পারেন। এই বিশেষ ধরনের এমব্রয়ডারি অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় রয়েছে। এই ঐতিহ্যের একজন ধারক চিন সিন।
দক্ষিণ চীনের কুয়াংসি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ১৯৭৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন চিন সিন। ইয়াও জাতির নারীদের নকশী কাজের দক্ষতার কথা সর্বজনবিদিত।
চিন নিজেও ছোটবেলা থেকে ইয়াও এমব্রয়ডারি কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন। গ্রামের মেয়েরা সকলেই ছিলেন সেলাই ও নকশীকাজে পারদর্শী। ২০০৩ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে এমব্রয়ডারি বিষয়ে আরও লেখাপড়া করার সিদ্ধান্ত নেন। বেইজিং শহরে আসেন এবং ইমপেরিয়াল এমব্রয়ডারি শেখা শুরু করেন।
বেইজিং এমব্রয়ডারি অত্যন্ত জমকালো ও অভিজাত। এই এমব্রয়ডারিতে ড্রাগন ও অন্যান্য নকশার বিশেষ অন্তর্নিহিত তাৎপর্য রয়েছে। থাং রাজবংশের সময় (৬১৮-৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) এই ধরনের নকশিকাজের সূচনা হয়। অষ্টাদশ শতকে ছিং রাজবংশের সময় এই নকশী কাজ সারা বিশ্বে খ্যাতি পায়।
শিল্প বিষয়ে তার তেমন কোন ধারণা ছিল না। তবে তিনি এ বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ২০০৫ সালে তিনি বেইজিং এমব্রয়ডারি নিয়ে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেন। ২০০৮ সালে তিনি নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। । ২০১০ সালে চিন বেইজিং এমব্রয়ডারির একজন ইনহেরিটর ইয়ু মেইইয়িং এর কাছে শিক্ষানবিশ হিসেবে ভর্তি হন। তিনি বেইজিং এমব্রয়ডারিতে নিজেকে দক্ষ করে তোলেন। বর্তমানে তিনি নিজেই বেইজিং এমব্রয়ডারির একজন ইনহেরিটর। তিনি শুধু ঐতিহ্যবাহী শিল্পকেই ধরে রাখছেন না, পাশাপাশি আধুনিক ধারাও এতে যোগ করেছেন।
তিনি এমব্রয়ডারি করা পর্দা, টি টেবল ম্যাট, স্কার্ফ, টুপি, হ্যান্ডব্যাগ, টাই ইত্যাদি তৈরি করেন যেন আধুনিক জীবনেও এগুলো ব্যবহার করা যায়।
চিন সিন বলেন তিনি চান আরও বেশি মানুষ বেইজিং এমব্রয়ডারি বিষয়ে জানতে পারুক এর সৌন্দর্য উপলব্ধি করুক। তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই নকশী কারুশিল্পকে জনপ্রিয় করে তোলা
শান্তা/ফয়সল
Leave a Reply