ম্যাকসিম গোর্কী
আটাশ
“কিছুর” অর্থটা সর্বদাই এক-এক গেলাশ মদ, তাতে কতকটা বরফ।
ঐ বাড়ির নিচের তলায় তিনজন রাজবংশীয়া যুবতী ভদ্রমহিলা-ও থাকতেন। তাঁদের মা মারা গিয়েছেন, এবং বাবা কমিসারিয়েট জেনারেল, তিনি অন্যত্র কোথায় কাজে গিয়েছেন।
জেনারেল কর্ণেটের স্ত্রী এই মেয়ে তিনটির প্রতি বিরূপ হ’য়ে উঠেছে। এবং তাদের প্রতি যতো প্রকারের ইতরামি সম্ভব তা ক’রে তাদেরকে তাড়াতে চেষ্টা করছে। এই নিরীহ মেয়েদের প্রতি তার এই মনোভাবটাকে আমি মোটেই পছন্দ করতাম না। মেয়ে গুলিকে অত্যন্ত বিমর্ষ, আতংকিত এবং অসহায় মনে হোতো। একদিন বিকালবেলা তাদের মধ্যে দুজন বাগানে বেড়াচ্ছিল। এমন সময় অকস্মাৎ জেনারেল কর্ণেটের বিধবা পত্নী তার অভ্যাসমত মাতাল অবস্থায় হাজির হোলো, এবং তাদের বাগান থেকে ভাগাবার জন্যে চীৎকার করতে লাগলো।
মেয়ে দুটি নীরবে শান্তভাবে চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু জেনারেলের স্ত্রী গেটের ওপর এসে নিজের শরীর দিয়ে ছিপির মতো পথ আগলে দাঁড়াল এবং রীতিমত অশ্লীল গাড়োয়ানী ভাষায় গালি পাড়তে লাগলো। আমি তাকে গালিগালাজ বন্ধ ক’রে মেয়েগুলিকে পথ ছেড়ে দিতে বললাম। কিন্তু সে তখন আমার উদ্দেশ্যে চেঁচাতে শুরু করল:
“তুই! তুই তো বলবি। তোকে চিনি না আমি। তুই রোজ রাত্তিরে জানলা গলে ওদের ঘরে যাস!” কথাগুলো আমায় রাগিয়ে দিলো; তার ঘাড় ধ’রে তাকে গেট থেকে আমি সরিয়ে দিলাম; তখন সে আমার হাত ছাড়িয়ে আমার সুমুখে এসে দাঁড়াল এবং দ্রুত পোশাক খুলে সেমিজটা তুলে জোর গলায় বলল, “আমি ওই লে টি ইদুরগুলোর চেয়ে দেখতে অনেক, অনেক ভালো।”
আমার আর মেজাজ ঠিক রইল না। আমি তার ঘাড়ে ধরে তাকে ঘুরিয়ে ধরলাম এবং তার পাছায় চাটুর গুঁতো মারতে লাগলাম। সে তখন এক লাফে গেটের বাইরে গেলো এবং প্রচুর বিস্ময়ে তিন বার “উ! উ! উ!” ক’রে উঠান পার হ’য়ে ছুটে পালালো।
তারপর আমি তার বিশ্বস্ত অনুচরী পলিনের কাছ থেকে আমার পাশপোর্ট নিয়ে পোঁটলাটি বগলে ক’রে সে স্থান ত্যাগ করলাম; জেনারেলের স্ত্রী তখন একটা লাল রঙের শাল হাতে নিয়ে জানলায় দাঁড়িয়েছিল, সে চেঁচাতে লাগলো:
“আমি পুলিস ডাকবো না-শোনো-কোনো ভয় নেই-ফিরে এসো-“
Leave a Reply