সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন হয়েছে। তার পতনের চেষ্টা অনেকদিন ধরেই চলছিলো। এই পতনের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে কে লাভবান হলো আর কে দুর্বল হলো তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। কারণ, এ মুহূর্তে বিজয়ীদের যে রূপ দেখা যাচ্ছে তা আরো বদলে যেতে পারে। কট্টরপন্থা আরো বেড়ে প্রত্যক্ষও পরোক্ষ বিজয়ী পক্ষগুলোকে হতাশও করতে পারে। আবার যদি সিরিয়ার জনগোষ্টি তার নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে তাহলে তা হতে পারে আরেক ইতিহাস।
তবে কোন রাষ্ট্র ব্যবস্থার পুরো কাঠামো এভাবে ভেঙ্গে ফেললে সেখানে বিজয়ী বিজিত কেউই নিরাপদ থাকে না। মূর্খরা কিছুক্ষণ বিজয়ের আনন্দ করে মাত্র। সে আনন্দও থাকে এক ধরনের বর্বরতার উল্লাস। আর এই বর্বরতার উল্লাসে সব থেকে বিপদে পড়ে ধর্ম, বর্ণ বা অন্য কোনভাবে সৃষ্ট মাইনোরিটি গোষ্টিগুলো।
সিরিয়ার মাইনোরিটি গোষ্টি বলতে সিরিয়ান ক্রিশ্চিয়ানরাই প্রথমে আসে। সিরিয়ান ক্রিশ্চিয়ানরা কম বেশি সকলে আসাদের সমর্থক ছিলো। কারণ, আসাদ তাদেরকে নিরাপত্তা দিতো। সব দেশে মাইনোরিটিরা সব সময়ই তাকেই সমর্থন করে- যে তাদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়। এখন আসাদের এই পতনের পরে স্বাভাবিকই সব থেকে বেশি সমস্যায় ও বিপদের পড়বে সিরিয়ান ক্রিশ্চিয়ানরা- তাদের জীবন, নারীর ইজ্জত ও সম্পদ নিয়ে।
বিশ্বের যে খেলোয়াড়রা সিরিয়ার এই পতনকে নতুন যুগের সূচনা, একটি পরিকল্পিত ডিজাইনের বিজয় বলে অভিহিত করছেন- তাদের কাছে ওই অল্প কিছু ক্রিশ্চিয়ানের জীবন, তাদের নারীর শ্লীলতা কোন বিষয় নয়। কিছু ক্রিশ্চিয়ান নারীর শরীর যদি এ মুহূর্তে বিজয়ের বা বিজয়োল্লাসের ব্যাটল ফিল্ড হয় তাও সেটা তাদের জন্যে কোন লজ্জার বা বেদনার নয়। কারণ, এটা তো সেই রাজা সাহেবের বাঘ শিকারে মতো। বাঘকে শিকার করতে টোপ হিসেবে কিপারের ছেলেকে ব্যবহার করা যেমন কোন অন্যায় নয়। এখানেও বিজয়ের উল্লাসে কিছু মাইনোরিটির এই মৃত্যু ও বিপদ বাস্তবে “টোপ” গল্পের ওই ভাষায় প্রকাশ করা যায়- “ কিপারের একটি ছেলে যায় যাক, রাজা সাহেব তো বড় শিকারী” ।
Leave a Reply