বোহেমিয়ান কবি বলতে যা বোঝায় কবি হেলাল হাফিজ ছিলেন তাদের একজন। কবিতাকে নিয়ে তিনি যেমন খেলা করেছেন তেমনি খেলা করেছেন নিজের জীবনকে নিয়েও। আর পেয়েছিলেন পাঠক প্রিয়তা। তাঁর আগে ও পরের অনেক কবিই তাঁর থেকে বেশি পাঠক প্রিয়তা পেয়েছিলো তবে হেলাল হাফিজের পাঠক প্রিয়তাও ছিলো তাঁর নিজস্ব চরিত্রের মতো। তিনি যেমন তাঁর কবিতাকে সকলের থেকে আলাদা করতে পেরেছিলেন তেমনি তাঁর পাঠক প্রিয়তা ছিলো আলাদা ধরনের। যদিও রাজনৈতিক টানা পোড়েনের এই দেশে, স্বাধীনতা সংগ্রামের এই দেশে তাঁর কবিতা স্লোগানে পরিণত হয়েছিলো- তারপরেও তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থে প্রেমের কবি। কষ্ট ও সুখ দুইকে একসঙ্গে মিলিয়ে তিনি প্রেমকে সোনা ও কাঁদা মাটি দিয়ে এক করেছিলেন। তাঁর কবিতা তাই তরুণ জীবনকে যেমন প্রেমিক বা প্রেমিকা হতে শেখায় তেমনি শেখায় প্রেমের জন্যে আলাদা রঙ খুঁজতে।
যতটা তাঁর প্রতিভা ছিলো তার থেকে তিনি লিখেছেন খুবই কম। তবে বেশি লিখলেই যে বেশি লেখা হয় না তাও তিনি তাঁর কবিতা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। নিজে বোহেমিয়ান হলেও কবিতায় তিনি নৈরাশ্য ছড়াননি বরং আনন্দ বেদনার রঙিন যে মানব জীবন তাই জুড়ে রয়েছে তাঁর কবিতায়।
পৃথিবীর অনেক প্রেমের কবির প্রভাব ইচ্ছে করলে তাঁর কবিতায় খুঁজে বের যায় তারপরেও তাঁর কবিতাগুলো সবই হেলাল হাফিজের কবিতা।
আজ তিনি পৃথিবী থেকে চলে গেলনে। এ মুহূর্তে শুধু তাঁর কথা থেকে ধার নিয়ে বলা যায়- এক জীবনের কতটুকই নষ্ট হবে- আসলে তোমাকে কাছে ও দূর থেকে দেখলে মনে হতো- তুমি মনে হয় জীবনটা নষ্ট করে দিলে কবি। কিন্তু আজ তুমি যখন চলে গেলে পৃথিবী থেকে তখন কোন দুঃখ না রেখেই বলা যায় ভবিষ্যতেও পাঠক তোমার একটি কবিতা পড়লে আরেকটি খুঁজবে। জেনারেশান পরিবর্তিত হলেও তোমার কবিতা ঠিক চির নতুন থেকে যাবে।
মানুষকে চলে যেতে হয় পৃথিবী থেকে। তাই তোমার চলে যাওয়া নিয়ে দুঃখ না করে বলা যায়- একটি পশ্চাদপদ, অস্থিতিশীল দেশে জম্মেও তুমি কম দেওনি পৃথিবীকে। তোমাকে স্যালুট।
Leave a Reply