প্রদীপ কুমার মজুমদার
সামবেদের অন্তর্গত গোপথ ব্রাহ্মণে অক্ষর ও বর্ণের লক্ষণ লেখা আছে। তাণ্ড্য ব্রাহ্মণেও অক্ষর ও বর্ণের আভাস পাওয়া যায়। বিভিন্ন উপনিষদে বর্ণ, স্বর, মাত্রা প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
মনুসংহিতার অষ্টম অধ্যায়ের ১৪৮ শ্লোকে “লেখিত” শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে-
বলাদ্দক্তং বলাভুক্তং বলাদ যজ্ঞাপি লেখিতম্। সর্ব্বান্ বলঙ্কতানর্থাকৃতান্ মনুবব্রবীৎ।
অর্থাৎ “বলপূর্বক যাহা কিছু দত্ত হয়। বলপূর্বক যাহা কিছু ভুক্ত হয়। বল পূর্বক যাহা লেখিত হয় সকলই অসিদ্ধ, ইহা মনু বলিয়াছেন।” রামায়ণের সময়েও লিপির প্রচলন ছিল। কারণ সীতার বিশ্বাস জন্মাবার জন্য হনুমান রাম নামাঙ্কিত স্বর্ণাঙ্গুরীয় সীতাকে দেখিয়েছিলেন। মহাভারতের শান্তিপর্বে ব্রাহ্মীলিপির কথা উল্লেখ আছে।
পদ্মপুরাণের পাতাল খণ্ডের কোন একজায়গায় বলা হয়েছে:
“শ্রীতালপত্রলিখিতং দেবলিপ্যন্বিতং শুভম্” অর্থাৎ তালপত্রে দেবাক্ষর লিখিত সুন্দর পুস্তকের পূজা করিবেন। অবশ্য এই দেবলিপির আকৃতি কেমন হ’বে সে কথাও এখানে বেশ ভালভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিখ্যাত ব্যাকরণবিদ পাণিনির গ্রন্থে তাঁর পূর্বে যাস্ক, পারস্কর, শাকটায়ন, ব্যাস ও তাঁহার শিল্প প্রশিষ্যেরা যো গ্রন্থ রচনা করেছেন সে কথা উল্লেখ আছে। পাণিনির ব্যাকরণে ‘গ্রন্থ’ শব্দটি বহুবার দেখা যায়। যেমন তিনি কোথাও লিখেছেন “কৃতে গ্রন্থে”, ‘গ্রন্থাতাধিকে’, “অধিকৃত্যা রুতে গ্রন্থে’, ‘সমুদ্রাঙভো জনোহগ্রন্থে’ প্রভৃতি শব্দ।
(চলবে)
Leave a Reply