ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
চিঠিখানি ছিল তিক্ত। তাই অবশেষে সেখানিকে আমি আর তাঁর কাছে পাঠাই নি। যাই হ’ক, তাঁর মতবাদকে যথাসম্ভব অধিক অর্থময় ক’রে তুলবার জন্যেই সম্ভবত এবার তিনি তাঁর শেষ আক্রমণ চালাচ্ছেন। ভাসিলি বুলাইয়েভের মতো তিনি তাঁর এই আক্রমণগুলিকে ভালোই বাসেন এবং ভালোবাসার একমাত্র কারণ এই যে এতে তিনি তাঁর পবিত্রতাটাকে জোরের সংগে জাহির করতে পারেন এবং তাঁর শিরদেশের চারিদিকে একটি জ্যোতির্মণ্ডলও উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে পারে।
রাশিয়ার প্রচীন ইতিহাস এবং তাঁর প্রতিভার আত্মপীড়নের ফলে তাঁর মতবাদগুলি হ্যায়সংগত হ’য়ে উঠলেও সেগুলির মধ্যে স্বৈরশাসনের একটা ভাব র’য়ে গিয়েছে। বাঁচবার ইচ্ছাকে দমন ক’রে, পাপের সংগে প্রেমের অভিনয় ক’রে-যেন এই পবিত্রতা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাঁচতে মানুষের গভীর আকাংখা রয়েছে, কিন্তু মানুষকে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে “আমাদের পথিক জীবন অর্থহীন।” কোনো রাশিয়ানকে এ-কথা বোঝানোও অত্যন্ত সহজ।
কারণ, সে একটি অলস প্রাণন্ট, সে নিজের নিষ্ক্রিয়তার একটি অজুহাত আবিষ্কার করতেই সর্বাপেক্ষা ভালোবাসে, ব্যস্ত থাকে। তবে, মোটামুটি, কোনো রাশিয়ান যে একজন প্লাতন কারাতাইয়েভ, কিম্বা একজন আকিম, কিম্বা বেজনি, কিম্বা নেব্লিউভ নয়, তাও অবধারিত। এই মানুষগুলির জন্ম দিয়েছিল ইতিহাস এবং প্রকৃতি, আর তাও ঠিক টলস্টয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী নয়। টলস্টয় তাঁর মতবাদের সমর্থনের জন্যে এই মানুষগুলির উপর রঙ চড়িয়েছেন। কিন্তু এ-ও অস্বীকার করা যায় না যে, রাশিয়া হ’ল মোটামুটি-উপরে টিউলিন এবং নিচে অবলমভ।
উপরকার টিউলিনের জন্যে ১৯০৫ খৃস্টাব্দে সন্ধান করো, আর নিচেকার অবলমফের জন্তে লক্ষ্য করো কাউন্ট এ. এন, টলস্টয়কে, আই বুনিনকে এবং তোমার চারি দিকের সব কিছুকে। জানোয়ার আর জুয়াচোর-তাদের কথা না হয় আমরা ছেড়েই দিলাম, যদিও জানোয়ারটা আমাদের অতি বেশী স্বজাতীয়। আর তাদের সমস্ত নৃশংসতা সত্ত্বেও, অতীব ঘৃণ্য কাপুরুষ এই জানোয়ারগুলো। আর জুয়াচোররা, তারা অবশ্য আন্তজাতিক।
Leave a Reply