বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সভা শেষে তিনি বলেন, ‘‘স্থায়ী কমিটি মনে করে যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে গেছে, সেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিলম্বের প্রয়োজন নেই৷ নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব৷ জনগণ এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ হতে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে৷’’
একই কথা বলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ৷ সরকারের কাছ থেকে দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ প্রত্যাশা করেন৷ বিএনপির এই রাজনীতিবিদের মতে, নির্বাচন দেরি হলে বাড়বে সামাজিক অস্থিরতা৷ সুষ্ঠু নির্বাচনই স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন তিনি৷
নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেক হারুনুর রশীদ বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি, করে যেতে চাই৷ এখন সংস্কার আর বিচারের কথা বলে নির্বাচন ঝুলিয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই৷ দেশের মানুষ এগুলো বোঝে৷ আমরা বলছি, সংস্কারও চলছে, বিচারও চলবে৷’’
তবে এখনই এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বিএনপি ভাবছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সরকারও নিশ্চয় বিষয়টি বুঝবে৷’’
এদিকে, গতকাল শনিবার সমমনা ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি৷
বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘‘বিএনপি, ১২ দলীয় জোটসহ যারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে, আমাদের সেই আন্দোলন এবং সেই ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায় নাই৷ আগামীতে সেটা আরও গভীরভাবে অনুভূত হবে৷ বিএনপি অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে খুব শিগগিরই কর্মসূচি ঘোষণা করবে৷ বর্তমানে দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের আগামী দিনে কর্মসূচি কি হওয়া উচিত, সেসব বিষয় নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি৷’’
বৈঠক শেষে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘‘আমরা চাই, সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে৷ সংস্কারের নামে নির্বাচনে দেরি করা ঠিক হবে না৷ আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর আন্দোলন করেছি এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য৷ বাংলাদেশে সব সমস্যার সমাধান হবে যদি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়৷’’
এদিকে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী৷ অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নিয়ে দলের নেতার কোনো কথা না বললেও শনিবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এ. জে মডেল হাই স্কুল মাঠে শনিবার জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘‘২০২৫ সালের ভেতরেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে৷ তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে আগামী বছরের শেষের দিকে নির্বাচনের আয়োজন করা হবে, এটাই আমাদের দাবি৷’’
‘২০২৫ সালে নির্বাচন হয়ে যাওয়া ভাল’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) এবং নাগরিক ঐক্য ২০২৫ সালে নির্বাচন হতেই হবে এমন দাবি না করলেও দল দুটি মনে করে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন হয়ে যাওয়া ভাল৷
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ২০২৫ সালের মধ্যেই ভোটের ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘তিনি (প্রধার উপদেষ্টা) বলেছেন, ঐক্যমতের ভিত্তিতে যদি আরও কিছু সংস্কার প্রয়োজন হয় তাহলে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণ সম্ভব হতে পারে৷ এখন আমরা যদি সবাই মিলে চাই, ২০২৫ সালের মধ্যেই ভোট দিয়ে দিতে হবে, তাহলে তিনি সেটাই দেবেন৷ আমরা মনে করি, সংবিধান সংস্কারের মতো বিষয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত৷ আমাদের দল থেকে আমরা যেটা বলেছি, আমরাও চাচ্ছি ২০২৫ সালের মধ্যে ভোট হয়ে যাওয়া ভালো হবে৷’’
Leave a Reply