আর্কাদি গাইদার
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
মুখে বসন্তের দাগ। কৃষকটির একহাতে একটা ইস্তাহার, অন্য হাতে একটা ছোঁড়াখোঁড়া ঘোড়ার লাগাম। লাগামটা বোধহয় মেরামত করছিলেন উনি, জমায়েতে লোকে কাঁ বলছে শোনার জন্যে এখন ঘর থেকে বাইরে এসেছেন।
‘জয়যুক্ত করতি হবে আহা মরি রে!’ কথাগুলো আবার বললেন কৃষকটি। আর সভার ভিড়ের দিকে থতমত খেয়ে অবাক হবার ভঙ্গিতে এক নজর তাকালেন।
অবশেষে মাথা নেড়ে ঘরের দাওয়ায় বসে পড়লেন। তারপর ইস্তাহারের দিকে একটা আঙুল দেখিয়ে পাশে-বসা এক কালা বুড়োর কানের কাছে চিৎকার করে বললেন:
‘আবার সেই জয়যুক্ত করতি হবে, বুইলে? কদ্দিন থেকে কথাগুলো শুনচি, প্রোখর-ঠাকুন্দা? সেই উনিশ শো চোদ্দ থেকে, লয়? কী মনে লিচ্চে কও দেখি ঠাকুন্দা?’
মাঠের মাঝখানটাতে একটা গাড়ি ঠেলে নিয়ে যাওয়া হল। সভার সভাপতিকে কে যে নির্বাচিত কনাল তা জানি না। তবে দেখলাম ছটফটে ছোটখাট চেহারার একটা লোক সেই গাড়িটার ওপর লাফিয়ে উঠে চে’চিয়ে বলল:
‘নাগরিকমণ্ডলী! আমি ঘোষণা করছি, সভার কাজ আরম্ভ হচ্ছে। সোশ্যালিস্ট- রেজোলিউশনারি কমরেড কুগলিকভকে আমি কিছু বলতে অনুরোধ করছি। কমরেড হুগলিকভ অস্থায়ী সরকার, যুদ্ধ আর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনাদের কাছে কিছু, বলবেন।’
সভাপতি গাড়ি থেকে লাফিয়ে নামল। এরপর মিনিটখানেকের জন্যে ‘মঞ্চ’ ফাঁকা রইল। তারপর হঠাৎ ক্রুগুলিকভ লাফ দিয়ে উঠল মন্ডে, আর খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে একটা হাত তুলল। গোলমাল থেমে গেল।
‘মহান, মুক্ত রাশিয়ার নাগরিকমণ্ডলী! সোশ্যালিস্ট-রেভোলিউশনারিদের পার্টির পক্ষ থেকে আমি আপনাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
কুলিকভ বলতে শুরু করল। একটা কথাও যাতে ফসকে না যায় সেজন্যে গভীর মনোযোগ দিয়ে আমি শুনতে লাগলুম।
Leave a Reply