বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমান লাইব্রেরি কর্মসূচীতে নতুন ফান্ড না আসাতে বন্ধ হওয়ার খবর দেখিয়াছে দেশবাসী। তাহাতে তাহারা বিচলিত হইয়াছে কিনা জানা যায়নি। তবে তাহাদের বিচলিত হইবার খুব কোন কারণ আছে বলিয়া মনে করা উচিত নয়।
কারণ, দেশে কিছুকাল ধরিয়া ছাত্র ছাত্রীদের হাতে শিক্ষকরা যেভাবে লাঞ্ছিত হইলো- আর সেই শিক্ষক লাঞ্ছনা করিবার কাজটিকে অনেকে বীরত্ব বলিয়া গন্য করিলেন। যে সকল ছাত্র ছাত্রী অবলীলায় বা কোন রাজনৈতিক বিশ্বাসের বশবর্তী হইয়া শিক্ষককে প্রকাশ্যে লাঞ্ছনা করিলো এবং সেই সকল সংবাদ সচিত্র দেখিবার পরেও এমন কোন খবর প্রকাশ হইলো না যে অন্তত একজনের পিতা মাতা ওই সন্তানকে শিক্ষক লাঞ্ছনার জন্য গঞ্জনা করিয়াছেন।
এমনকি দেশের শিক্ষা প্রশাসক, প্রধান প্রশাসক শিক্ষক হইবার পরেও তাহারা এই কাজের কোনরূপ দোষারোপ করিলেন না। তখন ধরিয়াই লইতে হয়, এ কাজটি এভূমিতে পূণ্যতর কাজ। যাহাদের সন্তানরা এ কাজ করিতে পারে নাই তাহাদের সন্তান মানুষ করিবার কাজের ভেতর খাঁদ রহিয়া গিয়াছে। তাহারা এ জাতির বীরত্বের সঙ্গে পা ফেলিতে শেখে নাই।
তবে কোন ভূখন্ডে শিক্ষক লাঞ্ছনা বৈধ হইবার পরে ওই ভূখন্ডে বই পড়িবার কোন গুরুত্ব থাকে কিনা তাহা লইয়া পুরানো দিনের শিক্ষক যিনি এই বই পড়ার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত- তিনি নতুন করিয়া ভাবিতে পারেন- আসলে তাহার এই বই পড়ানোর কাজের আদৌ কোন দরকার আছে কিনা? বরং পরশুরাম পিতার আদেশে মাতৃ হত্যা করিয়া যেমন কাব্যে বীর বলিয়া গণ্য হইয়া থাকে তেমনি হয়তো এই নবতর সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার যোগত্যা অর্জন ঢের বেশি মূল্যবান- বই পড়িবার থেকে। তাই এখন কোনটা শেখা বেশি জরুরী; শিক্ষকের মুখে ঘুষি পাকানো না বই পড়া তাহা যাহারা এখনও বুঝিয়া উঠিতে বা শিখিতে পারেন নাই তাহারা নতুন করিয়া শিখিয়া লইবেন। আর সেই শিক্ষা গ্রহনের জন্যে আর যাই হোক এত বই পড়িবার কোন প্রয়োজন পড়িবে না।
Leave a Reply