সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “নতুন শিক্ষাবর্ষের বিপুলসংখ্যক বই ছাপাই হয়নি”
মাত্র দুই দিন পরই শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। কিন্তু এখনো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিপুলসংখ্যক বই ছাপার কাজ শেষ করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। মোট ৪০ কোটির বেশি বইয়ের মধ্যে গত শনিবার পর্যন্ত পৌনে ৫ কোটি বই উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র বা পিডিআই হয়েছে।
এর ফলে এবার নতুন বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে সব শিক্ষার্থী সব বই পাবে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে অন্ততপক্ষে তিনটি করে নতুন বই (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) দিয়ে শিক্ষাবর্ষ শুরু করার পরিকল্পনা করছে এনসিটিবি। কিন্তু বই ছাপার যে পরিস্থিতি, তাতে সেই পরিকল্পনাও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান গতকাল রোববার আশা প্রকাশ করে প্রথম আলোকে বলেছেন, বছরের প্রথম দিনেই সব শিক্ষার্থী অন্তত তিনটি করে বই পাবে। এর মধ্যে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ের কিছু বইও পাবে। ৫ জানুয়ারির মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সব বই পৌঁছে যাবে। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য তিনটি করে বই বছরের প্রথম দিনে যাবে। এসব শ্রেণির আরও ৫টি করে বই ১০ জানুয়ারির মধ্যে যাবে। বাকি বইগুলো ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থীর হাতে যাবে।
তবে এনসিটিবি ও মুদ্রণকারী সূত্র বলছে, প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই ছাপায় অগ্রগতি ভালো। চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার অগ্রগতি খুবই কম। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জন, আগের দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র দেওয়া, দেরি করে পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করাসহ ছাপাসংক্রান্ত কাজে বিলম্বের কারণে এবার এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখনো বেশ কিছু পরিমাণ বই ছাপার জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র সইয়ের কাজটিও শেষ হয়নি।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়াল ২৬ বিলিয়ন ডলার”
দাতা সংস্থার ঋণ ও অনুদান এবং প্রবাসী আয় বাড়ায় দেশের রিজার্ভের পরিমাণও বাড়ছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিদেশি অনুদান যোগ হয়েছে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো, এসব কারণে রিজার্ভ বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যনুযায়ী, চলতি মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২ হাজার ১৩৩ কোটি ডলার (২১ বিলিয়ন)। এই হিসাবেও আগের চেয়ে বেড়েছে রিজার্ভ।
তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুব একটা প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “আইএমএফের দর্শনেই চলছে দেশের অর্থনীতি”
আর্থিক খাতে নৈরাজ্য ও লুটপাট জেঁকে বসেছিল দুরারোগ্য ব্যাধির মতো। জনজীবনে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিল মূল্যস্ফীতি। ধস নামছিল রিজার্ভে। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের শেষ বছরগুলো পার হয়েছিল যেকোনো সময় অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধসের আশঙ্কার মধ্য দিয়ে। বিপর্যয় ঠেকাতে সরকার দ্বারস্থ হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ)। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বেশকিছু শর্ত বেঁধে দেয়া হয়। চাপ প্রয়োগ করা হয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানোসহ বেশকিছু খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া হয় সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণের। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে দেয়া, নিট রিজার্ভ বাড়ানো, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার কাঠামোগত সংস্কার এবং ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ হ্রাসেও জোরারোপ করা হয়। এসব শর্ত পূরণ করতে গিয়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি তো হয়ইনি, উল্টো আরো জোরালো হয়ে জেঁকে বসে মূল্যস্ফীতি। পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক কর্মসূচির বড় অংশ জুড়ে ছিল আইএমএফের শর্ত পূরণ।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন দেশের আর্থসামাজিক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রত্যাশা তৈরি করে। তীব্রতর হয়ে ওঠে অর্থনীতি জনকল্যাণমুখী হয়ে ওঠার প্রত্যাশা। অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলের প্রায় পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। যদিও এখনো আইএমএফের দর্শনেই চলেছে দেশের অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের নীতিগত কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না এখনো।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “সংবিধান বাতিল চায় ছাত্ররা”
‘সংবিধান বাতিল চায় ছাত্ররা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ’৭২ সালের সংবিধানের সংস্কার অথবা বাতিলের দাবি এবার জোরেশোরে তুলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের নেতারা বলেছেন, ঘোষণাপত্রে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে।
প্রকাশের আগে ঘোষণাপত্রের খসড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠনসহ সব অংশীজনের কাছে পাঠিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই খসড়ায় সংবিধানের সংস্কার অথবা বাতিলের কথা বলা হয়েছে। অবশ্য দলগুলোর মতামতের প্রেক্ষাপটে ঘোষণাপত্রের কোনো কোনো বিষয় পরিবর্তনও হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ছাত্রনেতাদের সংবাদ সম্মেলন
ঘোষণাপত্র প্রকাশকে সামনে রেখে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে গতকাল রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মুজিববাদী ’৭২-এর সংবিধানের কবর রচনার কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত ৫ আগস্ট জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র না হওয়ার কারণে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে ফ্যাসিস্টরা। এটি গণ-অভ্যুত্থানের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গণ-অভ্যুত্থানকে ঘিরে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে এবং ’৭২-এর সংবিধান মানুষ যে প্রত্যাখ্যান করেছে, তার একটি দালিলিক প্রমাণ হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর জাতির সামনে মুজিববাদী ’৭২-এর সংবিধানের কবর রচিত হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে ৩১ ডিসেম্বর সবাই শহীদ মিনারে জড়ো হবে।
Leave a Reply