সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে দুদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা হচ্ছে। হঠাৎ করে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি কেন সামনে আনা হলো, এর প্রভাব কী হতে পারে—এসব বিষয় বুঝতে চাইছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ঘোষণাপত্রের পক্ষে–বিপক্ষে তর্কবিতর্কের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে একধরনের উত্তাপ তৈরি হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার রাত পৌনে দুইটার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে নিজেদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে বলা হয়, আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, হাজারো শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দলিলস্বরূপ ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ অত্যাবশ্যক ছিল। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ঐতিহাসিক দায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর বর্তায়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র প্রণয়ন ও ঘোষণার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচক সাড়া সঞ্চারিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।
এর আগে গত রাত সোয়া ৯টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের জরুরি ব্রিফিংয়ে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমতে৵র ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “বইয়ের ঘাটতি নিয়েই শুরু হতে যাচ্ছে পাঠদান”
শিক্ষাপঞ্জি মেনে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও থাকছে পাঠ্যবইয়ের ঘাটতি। বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে ৪০ কোটি ১৬ লাখ পাঠ্যবই প্রয়োজন। ছাপাখানার মালিক, মুদ্রণ শিল্প সমিতি ও এনসিটিবি সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি বই উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র বা পিডিআই হয়েছে। এখনো ৩৩ বই ছাপানোই বাকি। ফলে এবার নতুন বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে সব শিক্ষার্থী সব বই পাবে না।
ছাপাখানাগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১১৬টি ছাপাখানায় ২৪ ঘণ্টা বিরামহীন পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। তবে ছয় মাসের কাজ এক মাসে শেষ করতে সরগরম ছাপাখানাগুলো। কোনো ফুরসত নেই শ্রমিকদের। মিনিটে মিনিটে বেরিয়ে আসছে ছাপা কাগজ। অন্যপাশে চলছে বাঁধাইয়ের কাজ। ২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয়েছিল। তারপরও সবার হাতে সব বই পৌঁছাতে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এবার মাধ্যমিকের পাঠ্যবই ছাপাতে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ (নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড বা নোয়া) দেওয়া হয় ১০ ডিসেম্বর থেকে। কাগজসংকট না থাকলে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০ লাখ কপি পাঠ্যবই পাঠানোর সক্ষমতা আছে ছাপাখানাগুলোর।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানিয়েছে, এবার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের বইয়ের সংখ্যা ১২ কোটি ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫২টি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির অর্থাৎ মাধ্যমিক পর্যায়ের বইয়ের সংখ্যা ২৮ কোটি ৬ লাখ ২২ হাজার ৩৩৭টি। তাছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে ৮ হাজারের বেশি ব্রেইল বই ছাপা হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষকদের জন্য দেওয়া হবে প্রায় ৪১ লাখ ‘শিক্ষক সহায়িকা’। জানা গেছে, প্রায় প্রতিটি ছাপাখানায় এনসিটিবির মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক অবস্থান করছে।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ছাপাখানাগুলো ২৪ ঘণ্টা বই ছাপাচ্ছে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে তারা কতটুকু পেরে উঠবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বছরের প্রথম দিন প্রাথমিকের সব বই এবং মাধ্যমিকের বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজি বই সবার হাতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন। কিন্তু বই ছাপার যে পরিস্থিতি, তাতে সেই পরিকল্পনাও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “জ্বালানি খাতে ব্যবসায়িক ও ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকতে পারে ২০২৫ সালেও”
বৈশ্বিক অর্থনীতির অভিমুখ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রভাবক জ্বালানি খাত। অর্থনীতির সাধারণ প্রবণতার মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ চক্র, যা পূর্ব অনুমানযোগ্য। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন ও অপ্রত্যাশিত ঘটনায় এ ধরনের চক্রের নিয়মিত ছন্দ পাল্টে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো, যা ২০২৫ সালের জ্বালানি খাতকে অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।
সাম্প্রতিক এ অনিশ্চয়তার বিভিন্ন দিক নিয়ে দ্য ন্যাশনালের এক বিশ্লেষণে তুলে ধরেছেন কামার এনার্জির প্রধান নির্বাহী ও ‘দ্য মিথ অব দি অয়েল ক্রাইসিস’ বইয়ের লেখক রবিন এম মিলস।
তার মতে, ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ চক্রের সংযোগস্থলে রয়েছে জ্বালানি চক্র। সাধারণত ব্যয়বহুল, দীর্ঘমেয়াদি ও পুঁজিনিবিড় উদ্যোগ হয়ে থাকে জ্বালানি ও খনিজ প্রকল্পগুলো। গভীর সমুদ্র তেলক্ষেত্র, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্লান্ট, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা ইউরেনিয়াম বা তামার খনি গড়ে তুলতে এক দশক বা তারও বেশি সময় লাগে।
সাধারণত জ্বালানির মূল্য যখন ঊর্ধ্বমুখী থাকে তখন এ ধরনের প্রকল্প অনুমোদন পেয়ে থাকে, যাতে প্রয়োজন হয় প্রচুর অর্থপ্রবাহ এবং সরকারি সহায়তা। কিন্তু এসব প্রকল্প যখন কার্যকর হতে শুরু করে তখন অর্থনৈতিক পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন হতে পারে। ২০২৫ সালে পরিস্থিতি সেদিকে গড়াতে পারে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা আজ”
শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে ৩রা আগস্ট একদফার ঘোষণা হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে। দ্রোহ ও বিদ্রোহের প্রতীক সেই শহীদ বেদি থেকেই ঘোষণা আসছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের। আজ বিকাল ৩টায় ভূতাপেক্ষ এ ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যেখানে উপস্থিত থাকবেন ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পাওয়া প্রতিনিধিরাও। বিপ্লবের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে অভ্যুত্থানের প্রায় চার মাস পর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ছাত্র অধিকারসহ সমমনা অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন এ জনসমাগমে যোগ দেবে না বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে ছাত্রশিবিরে সরাসরি কিছু না বললেও সংগঠনটির নেতাকর্মীরা সেখানে থাকবেন বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫৮ সমন্বয়কের শপথের মধ্য দিয়ে এ ঘোষণাপত্রকে স্বীকৃতি দেয়া হবে। রোববার ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানানো হয়।
বিপ্লবীদের এ ঘোষণাপত্র ৫ই আগস্টের হিসেবে বিবেচিত হবে। ভূতাপেক্ষ এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিগত জনবিরোধী ব্যবস্থার বিলোপ ও আগামী দিনের নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাবে বলে মনে করেন অনেকে। তবে এই ঘোষণাপত্র নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই রাজনৈতিক অঙ্গণে। সাধারণ মানুষেরও আগ্রহ, কী থাকছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণায়। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন, এ বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে। আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক করা হবে দেশের রাজনীতিতে। কবর রচনা করা হবে মুজিববাদী ১৯৭২ সালের সংবিধানের। ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ঘোষণাপত্রে স্থান পেতে পারে ঔপনিবেশিক শাসনামল থেকে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সংগ্রামী ইতিহাস। এ ছাড়াও ’৭২ এর মুজিববাদী সংবিধানের সমালোচনা থাকতে পারে ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্রে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মনে করেন, দেশের গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ সংবিধানের কারণে ধ্বংস হয়েছে। এ সংবিধানের দোহাই দিয়ে কেড়ে নেয়া হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার। সমালোচনা থাকতে পারে ১/১১ এর ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়েও। শেখ হাসিনা ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কীভাবে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছেন তার উল্লেখও থাকতে পারে। যার মাধ্যমে দেশে গুম-খুনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বলে মনে করেন বিপ্লবীরা। উল্লেখ থাকতে পারে রাষ্ট্রীয় মদদে পিলখানা, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন হত্যাযজ্ঞের। ঘোষণাপত্রে উল্লেখ থাকতে পারে ভারতবিরোধী অবস্থানের কারণে কীভাবে দেশে গুম খুনের রাজনীতি কায়েম করেছে হাসিনা সরকার। এ ছাড়াও কীভাবে বিগত শেখ হাসিনা সরকার সংখ্যালঘু টার্মকার্ড ব্যবহার করে এ দেশে বিভাজন তৈরিতে কাজ করেছে।
Leave a Reply