বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৪ অপরাহ্ন

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১২৭)

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২.০০ পিএম

শশাঙ্ক মণ্ডল

সুন্দরবনের অনেক গৃহস্থ আছে যারা তাদের বাস্তু সাপকে আঘাত করে না; কোন কারণে ঐ সাপ মারা গেলে তার জন্য তারা অশুচি পালন করে থাকে। অনেক মনসার মন্দির বা থান আছে যেখানে জীবন্ত সাপেরা থাকে এবং তাদের জন্য নৈবেদ্য দেওয়া হয়।

মনসা প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় মেলা, নৌকা বাইচ এবং নানা ধরণের আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানার চৈতল গ্রামে মনসা প্রতিমার বিসর্জনকে কেন্দ্র করে বিদ্যাধরী নদীতে নৌকা বাইচের আয়োজন হয়। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিনে দূর দূরান্ত থেকে মনসা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য এখানে নিয়ে আসা হয়।

অসংখ্য নৌকায় প্রচুর মানুষ এই ভাসান দৃশ্য দেখার জন্য উপস্থিত হয়। বিসর্জন উপলক্ষে ডোবাই নাচ এর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। নৌকার ওপর বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে নাচ দেখানো হয়; নানা গান ও ছড়ার সাহায্যে এই নাচ অনুষ্ঠিত হয়। এখানকার এই অনুষ্ঠান শতাব্দীপূর্ব বলে মনে করার সঙ্গত কারণ আছে।

শীতলা

সুন্দরবনবাসীর জীবনে ব্রিটিশ রাজত্বের শেষ যুগেও পাণীয় জলের কোন ব্যবস্থা ছিল না। জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নিচু, স্বাস্থ্য, শিক্ষার সুযোগ ছিল না বললেই চলে- এ রকম অবস্থায় বসন্ত কলেরার আক্রমণ ছিল নিত্যসহচর, প্রতি বছর মহামারী আকারে বসন্ত কলেরা দেখা দিত, গ্রামের পর গ্রামে এদের তাণ্ডব সমান বেগে চলত।

দলে দলে মানুষ এর কবলে পড়ে প্রাণ হারাত। বসন্ত, কলেরা, সে যুগে এক ভয়ঙ্কর রোগ – এর হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য মানুষ রোগ প্রতিষেধক দেবতার সৃষ্টি করেছে- রোগমুক্তির কামনায় শীতলার পূজা করা হত। অনেক গ্রামের গাছতলায় নানা দেবতার থানের পাশে শীতলার থান লক্ষ করা যায়। দেবীর প্রতি ভয়ে তার নাম উচ্চারণ করে না দেবীর পূজা করার জন্য ভিক্ষা প্রার্থনা করার সময় বলে ‘মায়ের দয়া হয়েছে’।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024