শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৩৪)

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২.০০ পিএম

শশাঙ্ক মণ্ডল

ঢেক কুড়াকুড়                   ঢেক কুড়াকুড়

ধান ভানিরে……

ধানের বরে গাই কিননু

দিনু পুতের বিয়ারে,

ঢেকি আমার পিতা মাতা

ধান আমার সই

ধান ভানিরে সোনার ঢেকি দিয়া-

                                                             ইত্যাদি।

বরিশাল জেলায় নবান্ন উৎসব ডাকশাখ উৎসব নামে পরিচিত। বাড়ির মেয়েরা নবান্ন

পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে নিবেদন করার জন্য কলাপাতায় করে বাইরে রেখে দেয়। কোন কাক যদি সেই প্রসাদ না খায় তা হলে গৃহস্থরা অমঙ্গলের আশঙ্কা করে থাকে। তাদের বিশ্বাস পূর্বপুরুষরা কাকের রূপ নিয়ে তাদের ঐ প্রসাদ গ্রহণ করে। নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে কৃষিজীবী মানুষগুলি নতুন উদ্দীপনায় মেতে ওঠে; সারা বছরের শ্রমের ফসল তার সামনে উপস্থিত- স্বভাবতই মনে তার খুশির জোয়ার। পিঠে পুলি পায়েস সূর্য পৃথিবী বৃক্ষ পক্ষী সবাইকে উৎসর্গ করা হয়। প্রকৃতি ও মানুষের এমন গভীর আত্মীয়তা সুন্দরবনের লোক সংস্কৃতির এক উল্লেখযোগ্য অবদান।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষরা এ সময় সহরাই পরবে অংশ গ্রহণ করে এই উৎসব নবান্নের মতো আদিবাসীদের একটা উল্লেখযোগ্য বড় পরব। সুন্দরবনের বিভিন্ন আদিবাসী মহল্লাতে সহরাই কম বেশী একসপ্তাহ ধরে চলে। বিবিধ অনুষ্ঠান, গোয়াল পূজা, মৃতদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন, অপদেবতাদের তুষ্ট করার জন্য মুরগি উৎসর্গ- সেই সঙ্গে নাচ গান ও হাড়িয়া মদের আসর সমানে চলে।

এ সময় আদিবাসী পাড়াতে মুরগির লড়াই সারা দিন ধরে চলে। এই লড়াই এ জয় পরাজয়ের মধ্য দিয়ে শিকারজীবী আরণ্যক মানুষগুলি আদিম অরণ্য জীবনের স্মৃতি মুহূর্তের জন্য বিদ্যুৎ চমকের সৃষ্টি করে, এসময়ে অসংখ্য গান তারা নিজেরা সৃষ্টি করে, ছেলে মেয়েরা একত্রে নাচ গান শুরু করে। এ গানের ভাষা অনেকটা বাংলার কাছাকাছি হলেও সদারী ভাষাতেই তারা বেশি গান রচনা করে থাকে।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024