সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ নিয়ে কৌতূহল”
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে রাজনীতিকসহ বিভিন্ন মহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ সেনাপ্রধানের এ সাক্ষাৎ নিয়ে নানা আলোচনাও হচ্ছে। যদিও সাক্ষাতে দুজনের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তা জানা সম্ভব হয়নি।
তবে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার প্রাক্কালে সেনাপ্রধানের এ সাক্ষাৎ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হচ্ছে। সবাই বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সস্ত্রীক গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় যান। প্রায় ৪০ মিনিট সেনাপ্রধান তাঁর বাসায় ছিলেন। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, কিছু সময় তাঁরা একান্তে কথা বলেন।
সেনাপ্রধান খালেদা জিয়ার বাসভবনে পৌঁছালে তাঁকে স্বাগত জানান খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর। খালেদা জিয়ার অন্য একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওনারা একান্তে কথা বলেছেন। এ সময় বিএনপির অন্য কোনো নেতা ছিলেন না।’
অবশ্য বিএনপির নেতারা সেনাপ্রধানের এই সাক্ষাৎকে ‘সৌজন্য’ হিসেবেই দেখছেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন। সে জন্য তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে সেনাপ্রধান সস্ত্রীক এসেছিলেন। যতটুকু জেনেছি, সাক্ষাতে ম্যাডামের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়েই কথাবার্তা হয়েছে, রাজনীতি বা অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি।’
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “এশিয়াতে চোখ রাঙাচ্ছে ‘এইচএমপিভি’ ভাইরাস”
করোনা ভাইরাসের আতংক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব। এর মধ্যেই চীনে পাওয়া একটি নতুন ভাইরাস এশিয়ায় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। চীনে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতেও ভিড় বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। নতুন এই ভাইরাসটি করোনা ভাইরাসের মতোই সংক্রামক হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। ভাইরাসটির নাম দেওয়া হয়েছে হিউম্যান মেটোপনিউমো ভাইরাস বা এইচএমপিভি। এর আগে করোনা ভাইরাসটিও চীনের উহানের একটি গবেষণাগার থেকে উদ্ভুত হয়েছিল বলে অনেক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ব্যাপক ভিড়। ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, রোগীদের প্রায় প্রত্যেকেই এইচএমপিভিতে আক্রান্ত। চীন সরকার ভাইরাসটি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স রোগ প্রতিরোধ বিভাগের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, চীনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এইচএমপিভি ভাইরাস। বিশেষ করে উত্তর চীনে সংক্রমণের হার বেশি। ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চীন সরকার ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ব্যাপক ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। স্ক্রিনিং, শনাক্তকরণ এবং বিচ্ছিন্নতা প্রোটোকলের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
এইচএমপিভি কী এবং কেন ছড়িয়ে পড়ছে?
জানা গেছে, করোনার মতো এইচএমপিভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়। হালকা সর্দি-কাশির লক্ষণগুলোর সঙ্গে এটি নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। এই ভাইরাস বিশেষ করে ছোট শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রভাবিত করছে। রয়টার্সের মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া, রাইনোভাইরাস এবং কোভিড-১৯ এর মতো অন্যান্য ভাইরাসের সংক্রমণও রয়েছে। ক্রমবর্ধমান রোগীর সংখ্যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরো চিন্তার মুখে ফেলে দিচ্ছে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “বিদ্যুৎ খাতের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ হতো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে”
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিশেষ আইনের মাধ্যমে শতাধিকের মতো চুক্তি হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে। এর বেশির ভাগই বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি। এ খাতের বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি দিকগুলো কাগজে-কলমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ঠিক করলেও মূলত সবকিছুরই দেখভাল হতো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৫ বছরের বেশি সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছেই রেখেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা চারবার সরকার গঠনে প্রতিবারই মন্ত্রণালয় বণ্টন হলেও টেকনিক্যাল ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ বিভাগকে তিনি কখনই হাতছাড়া করেননি। একচেটিয়াভাবে অনুমোদন দেয়া হয় আদানি, রামপাল ও মাতারবাড়ীর মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো। এমনকি এসব চুক্তির বিষয়ে জনসাধারণকে জানার কোনো সুযোগও দেয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুতের মতো টেকনিক্যাল মন্ত্রণালয় বিগত সরকার তার পছন্দের আমলাদের মাধ্যমে চালাত। প্রকল্প অনুমোদন করাত নিজেদের সুবিধামতো। এর মাধ্যমে দুর্নীতি-অনিয়ম করে বিদ্যুৎ খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে এ খাতে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ দায়-দেনা তৈরি হয়েছে, তেমনি এসব ঘাটতি মেটাতে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দায় চাপানো হয়েছে ভোক্তার ওপর।
দেশের বিদ্যুৎ খাতে বিভিন্ন কোম্পানি বা সংস্থা, বিশেষত বিপিডিবির আওতাধীন তৎকালীন ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও বিদ্যুতের নীতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের দায়িত্ব পালন করেছেন বিডি রহমত উল্লাহ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ এমন একটি খাত যেখানে বৃহৎ প্রকল্পগুলো নেয়া হতো। এখানে প্রচুর অর্থ। ফলে অনেক কিছু বিবেচনায় নিলে এ মন্ত্রণালয় হাতছাড়া করতে চান না সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বরা। এখানে বিভিন্ন চুক্তি পাস করানোর জন্য বিগত সরকার তাদের পছন্দের সচিবদের নিয়োগ দিয়েছিল।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “রাজনীতিতে নয়া শক্তির আওয়াজ, নানা গুঞ্জন”
হঠাৎই যেন গোলপোস্ট বদলে গেছে। চিরচেনা বন্ধুরা জড়াচ্ছেন বিরোধে। শত্রুদের কাছে টানার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষমতার লড়াই অবশ্য চিরকাল এমনই। কঠিন এবং নিষ্ঠুর। এ ভূমের রাজনীতি ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত পার করছে। শেখ হাসিনার পলায়নের পর দৃশ্যপটে নানা পরিবর্তন আসছে। বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন মূলত দু’টি-এক. আগামী নির্বাচন কবে হবে? দুই. নির্বাচনে কারা জয় পাবেন।
এই প্রশ্নের প্রেক্ষাপট সামনে রেখেই আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দলের। বলে রাখা ভালো, এদেশে রাজনৈতিক দল নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা কম হয়নি। গবেষকদের শ্রম ও মেধারও হয়তো ঘাটতি ছিল না। সামরিক-বেসামরিক, তন্ত্র-তত্ত্ব। বৈচিত্র্য ছিল নানা রকম। কিন্তু সফলতার হার একেবারেই নগণ্য। দল আসে, দল যায়। এটাই যেন এখানে নিয়ম।
তবে এবারের দৃশ্যপট কিছুটা হলেও ভিন্ন। ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই নতুন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। নেতাদের কেউ কেউ তীব্র ভাষায় জামায়াত-শিবিরের সমালোচনা করছেন। নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগের নেতাদের নিয়েও নানা বক্তব্য দিচ্ছেন। ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা’ নিয়েও একদফা নাটক হয়ে গেছে। মুখোশে যাই থাকুক এটাও আসলে রাজনীতিরই লড়াই। যেকারণে বিএনপি এতটা রিঅ্যাক্ট করেছে। বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা রুহুল কবির রিজভী কারও নাম উল্লেখ না করে বলেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা একটি দল গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীরা নতুন এই রাজনৈতিক উদ্যোগকে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে অভিহিত করছেন। নাগরিক কমিটির সমর্থকরাও অবশ্য এর জবাব দিচ্ছেন। সংগঠনটির এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রথম কিংস পার্টি হচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো সূত্র মনে করে, নতুন এই রাজনৈতিক উদ্যোগের নেপথ্যে জামায়াতের সমর্থন রয়েছে। এটা বিএনপি’র মধ্যে একধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে। নির্বাচন কবে হবে এ নিয়েও দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে নানা জিজ্ঞাসা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এ নিয়ে একধরনের ডেটলাইন দিলেও তা বিএনপিকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপি কি সরকারের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে যাবে? বিএনপি’র একজন নেতা বলেন, এখনো তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এ প্রশ্ন বিএনপি’র জন্য বেশ কঠিন। কিছু কিছু সূত্র দাবি করছে, আওয়ামী লীগ দৃশ্যপটে ফেরার চেষ্টা করবে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও যদি তারা যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তা বিস্ময়কর হবে না।
Leave a Reply