সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ঢাকার বায়ু আজ দুর্যোগপূর্ণ, বিশ্বে স্থান শীর্ষে: গুলশানের ২ এলাকার স্কোর ৭০০-এর বেশি”
বিশ্বের ১২৫টি নগরীর মধ্যে বায়ুদূষণে আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালে শীর্ষে ঢাকা। এমন অবস্থানে ঢাকা মাঝেমধ্যেই থাকে; কিন্তু আজকের ব্যতিক্রম হলো দূষণের মান বা স্কোর। আজ সকাল সোয়া ৮টার দিকে আইকিউএয়ার মানসূচকে ঢাকার বায়ুর মান ৪৯৩। বায়ুর এই মানকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সকালের দিকে এতটা ভয়ানক দূষণ সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। সেই সতর্কবার্তায় নগরবাসীর উদ্দেশে আইকিউএয়ারের পরামর্শ, বাইরে বেরুলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
বায়ুর মান ৩০০ পার হলেই তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলা হয়। আজ সকালে শুধু নয়, গতকাল শনিবার রাত ১০টার পর থেকেই এ স্কোর ৩০০–এর বেশি ছিল। আজ ভোর ৫টার দিকে তা ৫৭৫ পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। রাত ১০টার দিকে ছিল ৩৭৫। শুধু দিবাগত রাত ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তা ২৭৬–এ নেমে গিয়েছিল।
এসব তথ্য দিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ বায়ুর যে মান, তা সত্যিই ভয়ানক। টানা তিন দিন ধরে তিন ঘণ্টা করে যদি স্কোর ৩০০–এর বেশি থাকে তবে সেই এলাকায় স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়। এখন ঢাকার বায়ুর যে মান, তাতে মানুষকে সচেতন করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের উচিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রিনক মাধ্যমে এবং সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা তৈরিতে বার্তা দেওয়া। সেই তৎপরতার কথা আমরা অনেক দিন থেকেই বলে আসছি; কিন্তু তাদের কোনো হেলদোল নেই।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “বাংলাদেশিদের ভিসা কমিয়ে ভারতে বিদেশি রোগী অর্ধেকে নেমেছে”
বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া কমিয়ে দেওয়ায় ভারতের হাসপাতালগুলোতে বিদেশি রোগীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদেন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কিছু দিন স্থগিত রেখে গত কয়েক মাস ধরে সীমিত আকারে ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাস। এতে বিপাকে পড়েছে চিকিৎসার জন্য ভারতীয় হাসপাতালগুলোর শরণাপন্ন হওয়া বাংলাদেশি রোগীরা। এই ভিসা প্রতিবন্ধকতার জন্য ধুঁকছে ভারতের চিকিৎসা খাতও।
আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত প্রতি বছর ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন প্রায় ২০ লাখ বিদেশি রোগী, যার ৬০ শতাংশই বাংলাদেশি। গত ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমে গেছে। অর্থাৎ, এসব হাসপাতালে বিদেশি রোগীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া বিদেশি রোগীরা দেশটির অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখেন। আল জাজিরার মতে, ২০২৩ সালে এই ‘মেডিকেল ট্যুরিজম’ খাত থেকে প্রায় ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার (৭৭ হাজার ১৮৯ কোটি রুপি) যোগ হয় ভারতের অর্থনীতিতে।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “ব্যাংকের মুনাফার প্রধান উৎস এখন সরকারি কোষাগার”
দেশের ব্যাংকগুলোর আয়ের প্রধান উৎস এতদিন ছিল বেসরকারি খাত। মুনাফা করত শিল্প ও সেবা খাতে দেয়া ঋণের সুদ ও কমিশন থেকে। কিন্তু এ মুহূর্তে ব্যাংকের আয় ও মুনাফার প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে সরকারি কোষাগার। ব্যাংকগুলো এখন ব্যক্তি খাতকে না দিয়ে সরকারকেই বেশি ঋণ দিচ্ছে। এতে ফুলেফেঁপে উঠেছে বেশির ভাগ ব্যাংকের মুনাফা।
ব্যাংকের অর্জিত মুনাফার বড় অংশ এসেছে সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে। এক বছর ধরেই সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার ১১-১৩ শতাংশ, যা নিকট অতীতে দেখা যায়নি। এত উচ্চ সুদের কারণে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানতের বড় অংশই সরকারকে ঋণ দেয়ার কাজে ব্যবহার করছে। এতে ব্যাংকের মুনাফা বাড়লেও সরকারের সুদ খাতের ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশি সুদে ঋণ নেয়ায় এ খাতে সরকারের ব্যয়ও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আর সুদ খাতের বাড়তি ব্যয় সংস্থানে জনগণের ওপর নিত্যনতুন কর আরোপের পথে হাঁটছে সরকার। এতে মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা সাধারণ মানুষ আরো বেশি দুর্ভোগে পড়ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পরিচালন খাতে ব্যয় হয়েছে ৮২ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল সুদ পরিশোধেই ৪২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ, প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পরিচালন ব্যয়ের ৫১ শতাংশই ছিল সুদ ব্যয়। এর আগে কখনই সরকারকে সুদ খাতে এত বেশি ব্যয় করতে দেখা যায়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও সুদ ব্যয় ছিল পরিচালন ব্যয়ের মাত্র ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ। বিপুল অংকের সুদ পরিশোধসহ পরিচালন ব্যয় মেটাতে ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “সরকারের মেয়াদ আরও স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস”
নির্বাচনের রোডম্যাপ আরও স্পষ্ট করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইংরেজি দৈনিক নিউ এজকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে বৃহত্তর ঐকমত্যে পৌঁছাতে তার সরকার চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি রাজনৈতিক দল ও সমাজের অন্যান্য অংশের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক বৃহত্তর সংলাপ শুরু করবে। নির্ধারিত সময়ে (এ বছরের শেষের দিকে অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে) সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। গতকাল নিউ এজ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে। এর চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: আপনার ৪ মাস হলো প্রায়। এই ৪ মাস ও তার আগের ৪ মাসের সময়ের মধ্যে যদি আপনি নিজে কখনো চিন্তা করেন, তাহলে কোন পর্বটা আপনার ভালো বা খারাপ লাগে?
ড. ইউনূস: খারাপ কোনোটাই না। খারাপটা বলবো না। তবে এটা ভিন্ন, আগে ছিল আমার নিজস্ব জগত, সারাজীবন ধরে যা যা করে আসছি তার মধ্যেই ছিলাম। নিজস্ব আয়োজন, নিজস্ব চিন্তা। তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। সেটা আমার মতো করে আমি ট্যাকেল করেছি। আমার উত্তরগুলো দিয়েছি। আমি আমার মতো করে চলেছি। সেটা একেবারেই আমার নিজস্ব জগত। এটা একটা ভিন্ন জগত। এটা আমার নিজস্ব জগত না। এই জগতে আমি কোনোদিন ছিলাম না। থাকার কোনো আগ্রহও ছিল না। এটার ডান-বাম আমার জানা নেই। অনেকটা হাতড়িয়ে হাতড়িয়ে চলার মতো অবস্থা। কাজেই ভিন্ন জগত। কিন্তু এতে একটা চ্যালেঞ্জ আছে। আমাকে আহ্বান জানিয়েছে, তবে প্রথমে একটু সংকোচ করছিলাম যে যাওয়া ঠিক হবে না। যেহেতু আমি এই জগতের মানুষ নই। তারা আমাকে পার্সুয়েট করেছে যে, এই পরিস্থিতিতে আপনার আসা দরকার। শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছি। এইভাবে তোমরা প্রাণ দিয়েছো, রক্ত দিয়েছো। আমার জন্য না হয় একটু চ্যালেঞ্জিং হলো। তাহলে আমি যাই। সেভাবেই আমি রাজি হলাম। কাজেই ভিন্ন জগতের মধ্যে চলছি। দেখা যাক কতোদূর যেতে পারি।
প্রশ্ন: আগস্টের ৮ তারিখ এই জগতটা যদি আপনার জন্য শুরু না হতো, তার পেছনের যে ৪ মাস। মনে হয় ততদিনে আপনার জেলে থাকার কথা ছিল?
ড. ইউনূস: হয়তো, তখন আমি প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কোন কোন দেশে যাবো। বাংলাদেশে যাতে ফিরে যেতে না হয়। একটি উপলক্ষে আমি আরেক দেশে ছিলাম। সেখানে বসে প্রস্তুতি নিচ্ছি ফিরে যাওয়া ঠিক হবে কিনা। যাওয়ার সময় উত্তেজনা দেখে গেলাম। কারফিউ দেখে গেলাম। এর ভেতর দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে। কাজেই উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। কারফিউ ভেঙেই গেলাম, না হলে যেতে পারতাম না। ভাগ্যিস পথে কেউ ধরেনি। তবে অত কড়াকড়ি কারফিউ ছিল না। এমন অবস্থা দেখে গেছি, ক্রমাগতভাবে এটা দেখছি। পত্র-পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখছি। কাজেই ক্রমাগতভাবে ফিডিংটা পাচ্ছিলাম। তারমধ্যেই এই ঘটনা ঘটলো। এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। তখনো বুঝিনি এর মধ্যে আমাকে জড়িত হতে হবে। এরমধ্যে একটা ভূমিকা পালন করতে হবে। কাজেই চার মাস এভাবেই গেছে আমার।
Leave a Reply