ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
তারপর অকস্মাৎ চীৎকার ক’রে ব’লে উঠলো, যেন অনেকটা মর্মাহত হয়েই: “আমি ভেবেছিলুম, তিনি সত্যিকার এনার্কিস্ট বুঝি। সবাই দিনরাত বলছে ‘এনার্কিস্ট, এনার্কিস্ট’। আমিও বিশ্বাস করতাম…”
লোকটি কারখানার একজন ধনী মালিক। বিপুল চেহারা, বিশাল উদর; কাঁচা মাংসের মতো দগদগে মুখের রং-টলস্টয় এনার্কিস্ট হন, এটাই বাসে চায় কেন? এটি হোলো রুশাত্মার “গভীর রহস্য- গুলির” মধ্যে একটি!
লিও নিকোলাইয়েভিচ যখন কাউকে খুশী করতে চাইতেন, তখন তিনি তা পারতেন অতি সহজেই, কোনো বুদ্ধিমান সুন্দরী মেয়ের চেয়েও সহজে। কল্পনা করো, বিভিন্ন ধরণের একদল মানুষ তাঁর ঘরে ব’সে আছেন। গ্র্যাণ্ড ডিউক নিকোলাইয়েভিচ, মিখাইলোভিচ, প্রাচীর-চিত্রকর ইলাইয়া, ইয়াল্টা থেকে সমাগত একজন স্যোসাল ডেমোক্রাট, স্টান্ডিস্ট পাৎজুক, জনৈক সাংগীতিক, জনৈক জার্মান, কাউন্টেস ক্লাইন মাইকেলের জমিদারীর ম্যানেজার, কবি বৃঙ্গাকভ, এবং এ’রা সকলেই তাঁর দিকে প্রীতিমুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। তিনি তাঁদের সবাইকে লাওৎসের বাণী ব্যাখ্যা ক’রে শোনাচ্ছেন।
মনে হচ্ছে, তিনি যেন একটি মানবিক-ঐক্যতানিক; ভেরী, মৃদংগ, হারমোনিয়াম, বাঁশী-অনেকগুলি যন্ত্রই একসাথে বাজাবার দক্ষতা তাঁর আছে। অন্য সবার মতো আমিও তাঁর পানে তাকিয়ে থাকতাম। এখন তাঁকে একটি বারের জন্যে দেখতে আমার প্রবল ইচ্ছা করছে-কিন্তু, জানি, আর কোনদিনই তাঁকে আমি দেখতে পাবো না।
সাংবাদিকরা এসেছে। তারা জোরের সংগে বলছে যে “টলস্টয়ের মৃত্যুর জনরব অস্বীকার ক’রে” রোমে একটি টেলিগ্রাম পাওয়া গেছে। তারা ভীড় ক’রে গুঁতোগুঁতি করছে, গল্পগুজব করছে, রাশিয়ার প্রতি তাদের সহানুভূতি পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রকাশ করছে। রাশিয়ান সংবাদ- পত্রগুলো কোনো সংশয়ের অবকাশ রাখে নি।
Leave a Reply