ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
এমন কি করুণা পরবশ হয়েও তাঁর কাছে মিথ্যা বলা ছিল অসম্ভব। এমন কি যখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ ছিলেন, তখনো তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়া ছিল অসম্ভব। তাঁর মতো মানুষকে সান্ত্বনা দিতে যাওয়া মারাত্মক। তাঁদের যত্ন করতে হবে, লালন করতে হবে, প্রাণহীন, শত-ব্যবহৃত কথার ধূলোর বোঝা দিয়ে তাঁদের ভরিয়ে তুললে চলবে না।
তিনি প্রায়ই জিজ্ঞাসা করতেন, “আমাকে তোমার ভালো লাগে না, না?” তখন তার জবাব দিতে হোতো, “না, লাগে না।”
“আমায় তুমি ভালোবাসো না?”
“না, আজ বাসি না।”
তাঁর প্রশ্নগুলি ছিল নির্মম, কিন্তু উত্তরগুলি ছিল জ্ঞানী ব্যক্তির মতোই সংযত।
এমন মনোজ্ঞভাবে তিনি অতীত সম্পর্কে আলাপ করতেন ফে বিস্মিত হ’তে হয়, বিশেষ করে টুর্গেনেভ সম্পর্কে। ফেট * সম্পর্কে যখন তিনি কিছু বলতেন, তখন সস্নেহ সহাস্য কৌতুকে তাঁর মুখখানা ভরে যেতো। কিন্তু নেক্রাসভের। সম্বন্ধে তিনি নিরাসক্ত ও সংশয়ী হ’য়ে উঠতেন। কিন্তু, যাই হোক, সকল লেখক সম্বন্ধেই তাঁর ভাবাট এমন ছিল যে, তাঁরা সবাই যেন তাঁদের নিজেদের দোষ ত্রুটিগুলি জানেন।
তাঁদের গুণগুলি উল্লেখ করার আগে দোষগুলিকে তিনি উল্লেখ ক’রে দেখাতেন, এবং প্রতিবারে, যখনই তিনি কারো নিন্দা করতেন, তখনই মনে হোতো, তিনি যেন তাঁর দরিদ্র শ্রোতাদের মুষ্টি-ভিক্ষা : দিচ্ছেন। ঐ সময় তাঁর কথাগুলো মন দিয়ে শুনতে বেয়াড়া লাগতো, তাঁর ধারালো মৃদু হাসির সামনে চোখ দু’টো নত হ’য়ে আসতো-আর সব কিছুই যেন মন থেকে যেতো মুছে।
একবার তিনি ভয়ানকভাবে তর্ক করতে লাগলেন যে, জি, ওয়াই, উল্কি টুলা ভাষায় লিখতেন এবং লেখার ক্ষমতা তাঁর মোটেই ছিল না। কিন্তু পরে আমি তাঁকে আণ্টন পান্ডুলোভিচ শেকভকে বলতে শুনি: “তিনি (উত্পত্ত্বি) একজন লেখক বটে! তাঁর আন্তরিকতার শক্তি আমাকে ডস্টইয়েভ স্কির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কেবল মাত্র পার্থক্য হোলো এই যে, ডস্টইয়েভস্কি রাজনীতিতে গিয়ে রাজনীতির সংগে পীরিতের ভাণ করেছিলেন, আর উস্পেনস্কি ছিলেন সহজ এবং সরল। তিনি যদি ভগবানে বিশ্বাস করতেন, তবে হয়ে উঠতেন কোন না কোন সম্প্রদায়ভুক্ত।
Leave a Reply