ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
“কিন্তু আপনি বলেছিলেন যে তিনি ছিলেন একজন টুলা ভাষার লেখক, এবং তাঁর কোনো শক্তি নেই।”
টলস্টয় তাঁর রোমশ ভ্রূ দুটোকে টেনে চোখের উপর নামিয়ে আনলেন, বললেন, “লেখার কায়দা ছিল খারাপ। ও কী ধরণের ভাষা তিনি ব্যবহার করতেন? লেখার মধ্যে শব্দের চেয়ে দাঁড়ি কমা বেশি। শক্তি হোলো একরকম ভালোবাসা। যে ভালোবাসে, তারই শক্তি আছে। প্রেমিকদের দিকে তাকিয়ে দ্যাখো, তারা সবাই শক্তিশালী।”
ডস্টইয়েভ স্কি সম্পর্কে তিনি আলাপ করতেন অনিচ্ছার সংগে, স’যমের সংগে, যেন কিছু এড়িয়ে গিয়ে, চাপা দিয়েঃ “কনফুসিয়াস এবং বৌদ্ধদের বাণীর সংগে নিজেকে পরিচিত করা উচিত ছিল তাঁর; তা তাঁকে অনেকখানি শান্ত ক’রে দিতো। ওইটি হোলো প্রধান জিনিষ, যা প্রত্যেক মানুষেরই জানা উচিত। তিনি ছিলেন এমন একটি মানুষ, যাঁর রক্তমাংস বিদ্রোহ ক’রে উঠতো।
তিনি রাগলেই তাঁর টেকো মাথার ওপর মাংসপিণ্ডগুলো অকস্মাৎ উঠতো মাথা তুলে; কান দুটো কাঁপতো। তাঁর অনুভূতি ছিল প্রচুর; কিন্তু তিনি চিন্তা করেছিলেন অতি সামান্য। কুরিয়ের-পন্থীদের কাছ থেকে, বা বুটাশেভিচের পাশ থেকে, বা অন্যদের কাছ থেকে তিনি চিন্তা করতে শিখেছিলেন। এবং পরে তাঁর সমস্ত জীবন ধ’রে তাদের তিনি ঘৃণা করেছেন। ইহুদি-সুলভ একটা বস্তু ছিল তাঁর মধ্যে। বিনা কারণেই তিনি সন্দিগ্ধ হ’য়ে উঠতেন। তিনি ছিলেন উচ্চাকাঙ্ক্ষী, ছিলেন মন্থর, ছিলেন সৌভাগ্যহীন। বড়ো অদ্ভুত পড়ে। আমি ঠিক বুঝি না, কেন।
তেমনি অকারণ। কারণ, ওই সব লাগে যে তাঁকে মানুষে এতো তাঁকে পড়া যেমন বেদনাদায়ক, ‘ইডিয়ট’, ওই সব ‘বাড়ন্তবয়সী’ ওই সব রাস্কনিকভ, কিম্বা বাকী অন্য সবাই, ওরা বাস্তব নয়। বাস্তব জগতে তারা ওদের চেয়ে অনেক সরল, অনেক সহজবোধ্য। দুঃখের বিষয় লোকে লিয়েসকভের লেখা পড়ে না। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের লেখক-তাঁর কোনো লেখা তুমি পড়েছ?”
“পড়েছি। তাঁকে আমার ভারী ভালো লাগে, বিশেষ ক’রে তাঁর ভাষা।”
Leave a Reply