শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০১ পূর্বাহ্ন

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৪৬)

  • Update Time : শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২৫, ৩.৫৫ পিএম

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

কথাগুলো এমন সহজে স্ফূর্ত হোলো এবং তাঁর সৌন্দর্য-বোধের আনন্দটা এতোই অকপট ছিল যে, তখন, সেই মুহূর্তে আমি যে কা আনন্দ পেয়েছিলাম তা কখনো ভুলবো না। সে আনন্দ আমি প্রকাশ করতে পারি না। প্রকাশ করতে জানি না। তখন এই আনন্দকে কেবল মাত্র প্রবল চেষ্টা দিয়ে দমন করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল।

মুহূর্তের জন্যে আমার হৃৎস্পন্দন রুদ্ধ হয়ে গেলো, এবং তার পরক্ষণেই আমার চারিদিকের সমস্ত কিছু যেন পুনরায় সঞ্জীবিত হয়ে উঠলো।

তাঁর কথাগুলির মধ্যে কী সে এক অসামান্য অবর্ণনীর সৌন্দর্য থাকতো, তা হৃদয়ংগম করার জন্যে তাঁর মুখের কথা শোনা প্রয়োজন। এক অর্থে এই ভাষণ রীতিটি ছিল অশুদ্ধ, একই শব্দের প্রচুর পুনরাবৃত্তি, আর তার সবটুকুতে গ্রাম্য সারল্য।

কণ্ঠস্বর ও মুখের অভিব্যক্তি দিয়েই কেবল তাঁর শব্দগুলি অর্থপূর্ণ হ’য়ে উঠতো না, তাদের পূর্ণতা দিতো তাঁর চোখের চাপল্য, চোখের জ্যোতি, চোখের প্রগল্ভতা- এমনটি আমি আর কখনো দেখিনি। কিন্তু নিকোলাইয়েভিচের চোখ ছটির মধ্যে নিহিত ছিল হাজারো চোখ।

একবার সুলার, সার্গেই দ্বওভিচ শেখভ এবং আরেক জন কে, তাঁরা বাগানে ব’সে মেয়েদের সম্পর্কে আলাপ করছিলেন; টলস্টয় অনেকক্ষণ কথাগুলি নীরবে কান পেতে শুনলেন, তারপর অকস্মাৎ বললেন:

“আমি যখন কবরে এক পা দেবো, তখন মেয়েদের সম্পর্কে সত্যটা প্রকাশ করে যাবো-বলবো, আর এক লাফে কফিনে চড়বো, তারপর নিজের ওপর ডালাটা টেনে নিয়ে বলবো: ‘এবার তোমাদের যা ইচ্ছে করো’।”

তারপর তিনি আমাদের পানে একবার এমন উদ্‌ভ্রান্ত ভয়ংকর দৃষ্টিতে তাকালেন যে খানিকক্ষণ সবাই নীরব হ’য়ে রইলাম।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024