বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২১)

  • Update Time : রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ৮.০০ পিএম

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

‘তাইলে শোন আমাদের বক্তব্য,’ শেষ করার আগে বাস্কাকভ বললে, ‘আমরা বলি, যুদ্ধ জয়ফয় শেষ করে শান্তি চাই না আমরা, বাড়ির মরদরা সব মরে ভূত হোক, আরও হাজার হাজার মজুর চাষী কানা-খোঁড়া-পঙ্গু হোক এ আমরা চাই না – এখুনি শান্তি চাই আমরা, তা সে যুদ্ধজয় হোক আর নাই হোক। আমাদের নিজেদের দেশেই তো আমরা জমিদারবাবুদের যুদ্ধে হারাতে পারি নি এখনও। কেমন, কথাটা খাঁটি কিনা, ভাইসব? যদি এতে কারো অমত থাকে তো সে আসুক সামনে, কয়ে যাক আমি মিথ্যেবাদী, কয়ে যাক আমি খাঁটি কথা কচ্চি না। আর আমার কিছু কওয়ার নেই!’

এখনও মনে পড়ে, জনতার মধ্যে একটা আর্ত চিৎকার ফেটে পড়ল। ‘এস-আর’ কুলিকভ রক্তশূন্য মুখে মঞ্চে লাফিয়ে উঠে হাত নেড়ে-নেড়ে সবাইকে চুপ করিয়ে কিছু বলতে চাইল। কিন্তু ওকে ধাক্কা দিয়ে লোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে।

বাস্স্কাকভ পাইপ ধরাতে মুখে-বসন্তের-দাগওয়ালা কৃষকটি- সেই যাঁকে বাস্স্কাকভ জিজ্ঞেস করেছিল সে কনস্টানতিনোপ্‌ল্ চায় কী জন্যে, তিনি এসে বাস্কাকভের জামা ধরে টানলেন। ওঁর কাড়েয় চা খাওয়ার নেমন্তন্ন জানালেন উনি।

প্রায় অনুনয়ের সুরে বললেন, ‘মধু দে’, বুইলে? এখনও এক-আধটুক আছে। তা তোমার স্যাঙাতদেরও ডাক না কেন।’

শুকনো র‍্যাস্কেরি ফলের নির্যাস-মেশানো ফুটন্ত জল খেলুম আমরা। কাড়ের ভেতরটা মৌচাকের মিষ্টি গন্ধে ম-ম করছিল।

‘এস-আর’দের নিয়ে দ্রোঙ্কিটা ধুলোয়-ভরা রাস্তা বেয়ে আমাদের জানলার পাশ দিয়ে চলে গেল। দেখতে-দেখতে শুকনো, গুমোট সন্ধে নেমে এল। দূরে শহরে তখন গির্জেগুলোর ঘণ্টা বাজছে। তিরিশটা গির্জের সন্ন্যাসী আর পাদ্রিরা বিক্ষুদ্ধ বিদ্রোহী মাতৃভূমিকে তুষ্ট করার জন্যে জানাচ্ছে আকুল প্রার্থনা।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024