বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন

পোলার নাইটের দেশে ঘুম

  • Update Time : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ৬.১৮ পিএম

এরিকা বেঙ্কে

পৃথিবীর অতি উত্তর প্রান্তে শীতকালের চূড়ান্ত পর্যায়ে টানা কয়েক সপ্তাহ সূর্য উঠবে না। এ সময় অনেকের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। কিন্তু সেখানকার মানুষজন কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করেনআর আমরা কী শেখতে পারি?

শীতের অন্ধকার

কল্পনা করুনটানা কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে সূর্যের দেখা নেই। চারিদিকে অন্ধকারহিমশীতল হাওয়াআর পুরু তুষারে ঢাকা পথঘাট। তবু পোলার নাইট” বা দীর্ঘ মেরু রাত্রির মাঝেও পুরোপুরি অন্ধকার থাকে না। সূর্যের রশ্মি কখনো উচ্চ বায়ুমণ্ডল ভেদ করে নীলগোলাপি আর বেগুনি রঙের ম্লান আলোর আভা ছড়ায়।

চাঁদ ও তারাগুলোও আলো দেয়। আকাশে প্রায়ই দৃষ্টিনন্দন নর্দান লাইট দেখা যায়আর তুষার যেন কৃত্রিম আলোকে প্রতিফলিত করে স্নোগ্লো” সৃষ্টি করেযা পরিবেশকে তুলনামূলক উজ্জ্বল রাখে। এই দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

উত্তর মেরুর কাছে যারা বসবাস করেনতাদের জন্য শীতকালীন এই দীর্ঘ রাত জীবনেরই অংশ। অনেকে এ সময়টায় বেশ স্বস্তি পানকেউ কেউ বলেনএই সময়ে তাদের ঘুম অন্য যেকোনো মৌসুমের তুলনায় ভালো হয়। উদাহরণ হিসেবেফিনল্যান্ডের ইনারি অঞ্চলে (যেখানে প্রায় ছয় সপ্তাহ পোলার নাইট থাকে) বাস করেন ৪২ বছর বয়সী এস্থার বেরেলোভিশ। তিনি বলেন, “পোলার নাইট খুব দ্রুত চলে যায়। আমি চাই এটা আরও দীর্ঘ হোকদুই মাসের মতো। সূর্যের আলো না থাকলেও প্রকৃতি তার সৌন্দর্য দেখায়… আমি আগে ঘুমোতে যাই এবং ভালো ঘুম হয়। বসন্ত কবে আসবেসেটা আমি ভাবতে চাই না।

তবে সবারই এই অভিজ্ঞতা একই রকম নয়। অনেকে দিনের আলো না থাকায় বিষণ্ণতায় ভোগেন। সূর্যালোকের অভাবে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিজনাল অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার (স্যাড) দেখা দেয়। তবু যারা বছরের পর বছর মেরু অঞ্চলে বসবাস ও কাজ করেনতারা জানেন কীভাবে শীতের এই নাটকীয় পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে হয়। গবেষণায় দেখা যায়যারা বরাবরই অতি উত্তরে থাকেনতারা বহিরাগতদের তুলনায় পোলার নাইটের ঘুমের সমস্যাকে ভালোভাবে সামলে নিতে পারেন। তাহলেআমরা বাকি সবাই এ থেকে কী শিখতে পারি?

দৃষ্টিভঙ্গি বদল

নরওয়েসুইডেনফিনল্যান্ডগ্রিনল্যান্ডরাশিয়াকানাডা আর আলাস্কার অতি উত্তরে শীতকালে সূর্য প্রায় সারাক্ষণই দিগন্তের নিচে অবস্থান করে। কোথায় কতদিন করে পোলার নাইট চলবেসেটা নির্ভর করে অক্ষাংশের ওপর। যেমন ফিনল্যান্ডের ল্যাপল্যান্ডের রাজধানী রোভানিয়েমিতে শীতকালীন অয়নদিবসে মাত্র দুই দিন সূর্য ওঠে না। আর নরওয়ের ট্রমসো শহরে (আর্কটিক সার্কেল থেকে ৩৫০ কিলোমিটার উত্তরে) প্রায় ছয় সপ্তাহ সূর্য দেখা যায় নাপ্রায় নভেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত। অন্যদিকে কানাডার আলার্ট অঞ্চলের সামরিক স্থাপনায় (যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের স্থায়ী জনবসতি রয়েছে) প্রায় চার মাস কোনো সূর্যোদয় হয় নাএটি উত্তর মেরু থেকে মাত্র ৮১৭ কিলোমিটার দূরে।

উত্তরের অনেক দেশে পোলার নাইটের সময় মানুষের মধ্যে স্যাডের হার বেশ বেশি। যেমন গ্রিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে স্যাডের প্রকোপ দক্ষিণের তুলনায় বেশি। কানাডিয়ান আর্কটিকের ইনুয়িট সম্প্রদায়ের মধ্যেও স্যাডের হার অন্টারিওর তুলনায় দ্বিগুণআর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের তুলনায় চার গুণ বেশি।

কীভাবে শীতকালীন এই অন্ধকারকে দেখা হয়তা এখানে বড় ভূমিকা রাখে। নরওয়ের একটি গবেষণায় ২৩৮ জনের ওপর জরিপ করে দেখা গেছেযারা শীতকালটিকে ইতিবাচকভাবে নেন (যেমন এই সময় স্কি করা বা আগুনের সামনে পরিবার-পরিজন নিয়ে আরামদায়ক সময় কাটানো)তারা শীতকালে তুলনামূলকভাবে ভালো মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী।

গবেষণার সহলেখক ও মনোবিদ কারি লেইবোউইৎস বলছেন, “ঠান্ডা আর অন্ধকার সবার ওপরই প্রভাব ফেলে। পার্থক্য শুধু এই যেআমাদের আবেগ ও আচরণ কেমন।” পোলার নাইটের সময় কেউ কেউ ঘরের আলো বাড়িয়ে অন্ধকারকে তাড়াতে চানযা আসলে উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে। বেশি আলো ব্যবহারের ফলে বাইরের অন্ধকার আরও গাঢ় মনে হয়আর অতিরিক্ত কৃত্রিম আলো ঘুমের ছন্দকেই বিঘ্নিত করতে পারে।

কৃত্রিম আলো কমান

আমাদের শরীরের ঘুমের ছন্দ বা সার্কাডিয়ান রিদম ঠিক রাখতে দিনের আলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। সন্ধ্যা গড়াতে গড়াতে মস্তিষ্ক মেলাটোনিন তৈরি করতে থাকেযা আমাদের দেহকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে। কিন্তু পোলার নাইটের কারণে দীর্ঘ অন্ধকারে মেলাটোনিনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করতে পারে।

উদাহরণস্বরূপজানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় পোলার নাইটের চূড়ান্ত পর্যায়ে মেলাটোনিনের মাত্রা বেশ বেড়ে যায় বলে কিছু গবেষণায় জানা গেছে। মাসের শেষদিকে সামান্য আলো ফিরতে শুরু করলে মেলাটোনিনের মাত্রা আবার কমতে থাকে। যাদের প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ বা স্কুলে যেতে হয়তাদের জন্য এটি বেশ বিব্রতকর হতে পারে। নরওয়ের ট্রমসো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছেশীতকালে সকালের দিকে মানুষ গ্রীষ্মের তুলনায় অনেক বেশি ক্লান্ত বোধ করে।

কৃত্রিম আলো সূর্যের প্রয়োজনীয় মাত্রা পুরোপুরি সরবরাহ করতে পারে না। তবে কানাডিয়ান আর্কটিকের সেনাদের ওপর করা এক গবেষণা থেকে জানা যায়বিশেষ ধরনের লাইট ভিজর” দিয়ে চোখে একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নীলচে-সবুজ আলো (৫০৫ ন্যানোমিটার) ফেললে মেলাটোনিনের নিঃসরণ ঘুমের সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা সম্ভব হয়। এভাবে ১১ দিনের ব্যবধানে সেনারা ঘুমের মান আর মনোভাবের উন্নতি লক্ষ্য করেন। এন্টার্কটিকার কিছু স্থাপনায় নীল-আলো সমৃদ্ধ ল্যাম্পও ইতিবাচক ফল দিয়েছে।

ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিভিত্তিক আলো ডিজাইন কোম্পানি এসএএএস ইন্সট্রুমেন্টস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকৌশলী হকান লংস্টেড্ট বলেন, “পোলার নাইটের সময় ঘরের আলোর মাত্রা কম রাখাই ভালো। অন্ধকার যখন বেশিঅতিরিক্ত আলোর দরকার হয় না। বরং ধাপে ধাপে আলো কমানো উচিতবিশেষ করে ঘুমের সময়ের কাছাকাছি।

গবেষণায়ও দেখা গেছেঘুমের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে নীল আলো কমিয়ে ধীরে ধীরে আলো নিভিয়ে আনলে ঘুমের প্রস্তুতি ভালো হয়। ধীরে ধীরে আলোর পরিমাণ কমলে শরীর মেলাটোনিন নিঃসরণ শুরু করার সঙ্কেত পায়।

লেইবোউইৎসও (যিনি নিজেও ঘুমের সমস্যায় ভুগেছেন) বিকাল ও সন্ধ্যায় অতিরিক্ত কৃত্রিম আলো এড়িয়ে মৃদু বা প্রাকৃতিক আলোযেমন মোমবাতি বা আগুনের আলো ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এতে ঘুমের গুণগত মান বাড়তে পারে।

ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলুন

সকালে উঠে বা বিকেলের দিকে অল্প সময়ের জন্য সাইক্লিং করাএমনকি প্রতিদিন প্রায় ২০ মিনিট করে সময় এগিয়ে নিয়ে ব্যায়াম করলে ঘুমের সময়ের সামঞ্জস্য ঘটতে পারে। আবার খুবই তীব্র দু-ঘণ্টার ব্যায়াম সার্কাডিয়ান রিদম বদলে দিতে পারে (যদিও এটি কেবল রাতের শিফট বা ভিন্ন টাইম জোনে মানিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হওয়া উচিত)।

নরওয়ের আল্টায় কিছু শিক্ষার্থীর ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছেনিয়মিত ব্যায়ামের কারণে বিকেলের দিকে মেলাটোনিনের মাত্রা কম থাকেফলে তখন ঘুম ঘুম অনুভূতি কম হয়।

ফিনল্যান্ডের উত্তরে ল্যাপল্যান্ডের ইনারিতে বসবাসকারী এস্থার বেরেলোভিশ প্রতিদিন প্রায় দুই ঘণ্টা বাইরে হাঁটেন বা স্কি করেন। তিনি বলেন, “অল্প কিছুটা আলো থাকলেই আমি বাইরে যাই। কেবলমাত্র তাপমাত্রা -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও নিচে থাকলে বাড়ির ভেতরে থাকি। অন্য সময়ে প্রায়ই আমি বাইরে হেঁটে বেড়াইকিংবা স্কি করি।

শীতের মাঝে খোলা বাতাসে শরীরচর্চা করলে বেশি ক্যালোরি ক্ষয় হতে পারে। তবে বেশিরভাগ গবেষণা নিম্ন অক্ষাংশে করা হয়েছেযেখানে রোদ পেতে পেতে মানুষ ব্যায়াম করে। ফলে পোলার নাইটের অন্ধকারে ঠিক কী ধরনের অতিরিক্ত উপকারিতা মেলেতা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।

যারা নির্দিষ্ট সময়ের কাজে বাধ্যতারা কী করবেন

স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম ও মানসিক চাপবিষয়ক গবেষকঅ্যাসোসিয়েট প্রফেসর আর্নে লডেন বলেন, “আমরা দেখতে পাইশীতকালে মানুষ রাতের দিকে দেরি করে ঘুমোতে যায়। কিন্তু যারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজে যেতে বাধ্যতাদের সকালে ঠিকই উঠে যেতে হয়এতে ঘুমের ঘাটতি দেখা দেয়।

লডেন ও তার সহকর্মীরা সুইডেনের কিরুনায় (যেখানে পোলার নাইট ২৮ দিন স্থায়ী) ১,২০০ জন অফিসকর্মীর ওপর ঘুম সংক্রান্ত গবেষণা করেন। দেখা গেলশীতকালে তারা গ্রীষ্মের তুলনায় ৩৯ মিনিট দেরিতে ঘুমোতে যায় এবং প্রতি সপ্তাহে ১২ মিনিট কম ঘুম হয়।

লডেনের মতে, “ঠান্ডা ও দিনের আলো কম পাওয়ায় সার্কাডিয়ান রিদম ব্যাহত হয়। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ২৪ ঘণ্টার ছন্দে কাজ করে। কোনো একটি সময় এগুলো সক্রিয় থাকেআর অন্য সময় পুনর্গঠন ও বিশ্রামে থাকে। এই ছন্দ ব্যাহত হলে দিনে ঘুম ঘুম ভাব থাকে। আরও খারাপ পর্যায়ে গেলে সম্পূর্ণ ভুল সময়ে ঘুম থেকে ওঠা বা ঘুমাতে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়যা কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

জার্মানির একদল গবেষক ১৮৮ জন মানুষের ঘুমের রেকর্ড বিশ্লেষণ করে দেখেছেনতাদের আরইএম (REM) ঘুমে মৌসুমী পরিবর্তন ঘটে। ডিসেম্বরে আরইএম ঘুম ৩০ মিনিট বেড়ে যায়যা জুনের তুলনায় বেশি। আরও কিছু গবেষণায়ও দেখা গেছেশীতকালে মানুষ সামান্য বেশি সময় ঘুমায়।

ফিনল্যান্ডভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানি ওউরা হেলথ” ৪৫,০০০ জন ওউরা রিং” ব্যবহারকারীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেশীতকালে ঘুমের সময় ৩% বা প্রায় ১০ মিনিট বাড়ে। সেইসঙ্গে বিশ্রামের সময় হৃদস্পন্দনের হার গ্রীষ্ম থেকে শীত পর্যন্ত ৩% বেড়ে যায়।

তবে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ শারীরবিদ্যা বিষয়ক প্রধান হেলি কোস্কিমাকি বলেন, “ক্রোনোটাইপ” অনুযায়ী যারা ঘুম ও জাগরণের সময় ঠিক রাখেনতাদের ঘুমের মান ভালো হয়। সহজভাবে বললেযিনি ভোরে ওঠার অভ্যস্ত (মর্নিং টাইপ”), তিনি তাড়াতাড়ি ঘুমোনোর ব্যবস্থা করলে ভালো ঘুম পাবেন। আবার নাইট আউল” টাইপ যারাতাদের জন্য একটু দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া ও ওঠা ভালো। আধুনিক সমাজ সাধারণত সকালে ওঠার দিকটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। ফলে যারা রাতে দেরি করে ঘুমোনো পছন্দ করেনতাদের অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ের চাপে ঘুমের সময় কেড়ে নিতে হয়। এ অবস্থায় যতটা সম্ভব নিয়মিত একটি সময় ধরে রাখার চেষ্টা করাই উত্তম।

সব মিলিয়ে এসব তথ্য থেকে বোঝা যায়সারা বছর ধরে প্রতি দিনের রুটিন একই রকম রাখার প্রয়োজন নেই। বরং নিজের কাজ ও ব্যক্তিজীবনের সময়সূচি যদি মৌসুম অনুযায়ী” সামঞ্জস্য করা যায়তবে শীতকালে বেশি ঘুমের সুযোগ রেখে স্বাস্থ্যকর ঘুমের ছন্দ বজায় রাখা সহজ হবে।

শীতের ধীর ছন্দ আর একত্রে থাকা

পোলার নাইটকে ভালোবাসেন এমন মানুষদের মধ্যে এস্থার বেরেলোভিশ উল্লেখ করেনএই সময়টায় তিনি সবকিছু ধীরে করেনহাঁটতে বের হনধীরগতিতে খানআর ধীরস্থিরভাবে ঘুমোন। কখনো বাইরে বেরোতে বেশি ঠান্ডা লাগলে ঘরে হাতে তৈরি কাজ বা গিটারের অনুশীলন করেন। আবার সন্ধ্যায় পরিবারের সবার সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেন।

আর্নে লডেনও বলেন, “পোলার নাইট পরিবার আর বন্ধুদের সাথে একত্রে সময় কাটানোর দারুণ সুযোগ দেয়।

মিশেল নোয়াকযিনি যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের ভাডসোর মধ্যে সময় ভাগ করে কাটানবলেন যে মাঝে মাঝে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে আগুনের পাশে নয় ঘণ্টা বসে থাকেনসময় কোথা দিয়ে যায় বোঝাই যায় না। তিনি উল্লেখ করেন, “এই অন্ধকার দুই মাস অন্য রকম। এ সময় আমি শিল্পকর্মে নিজেকে ডুবিয়ে দিই। আর্কটিক অঞ্চলে বলেই শুনেছিপোলার নাইটের সময় নিজের অভ্যন্তরীণ আলো’ জ্বালিয়ে রাখতে হয়। অনেকে হয়তো বিষণ্ণতায় ভোগেনকিন্তু বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটা এক অন্য রকম উত্তেজনাময় অভিজ্ঞতা।

শীতের এই গাঢ় অন্ধকারে ঘুমকে ভালো রাখা বা নিজের শরীর আর মনের যত্ন নেওয়া যে সম্ভবসেটা উত্তর মেরুর অধিবাসীদের জীবনযাপন দেখেই বোঝা যায়। সঠিক আলোর ব্যবহারব্যায়ামের অভ্যাসনিজের ঘুমের ছন্দ মেনে চলাআর বছরের এই সময়কে ইতিবাচকভাবে নেওয়ার মধ্য দিয়েই তারা এই দীর্ঘ রাত্রিকে স্বাগত জানায়। হয়তো আমাদের সকলেরই কিছুটা শিখে নেওয়ার আছে এই ঠান্ডাঅন্ধকারের সৌন্দর্যময় জীবনযাপনের গল্প থেকে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024