বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন

গুপ্তচর হিসেবেও কাজ করেছিলেন অড্রে হেপবার্ন

  • Update Time : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ৬.৩২ পিএম

অস্কারের জন্য পাঁচ বার মনোনীত হয়েছিলেন অড্রে হেপবার্ন। ‘রোমান হলিডে’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার জিতেছিলেন ১৯৫৩ সালে। ১৯৫০ ও ‘৬০ এর দশকে চলচ্চিত্র ও ফ্যাশন জগতের আইকন হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বিশ্বের অসংখ্য মানুষের মন জয় করা এই অভিনেত্রীর জীবনের এমন একটা অধ্যায়ও ছিল যা অনেকেরই অজানা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। নাৎসি দখলদারির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য অর্থ সংগ্রহের করতে ব্যালে মঞ্চস্থ করতেন এই অভিনেত্রী। তখন তিনি কেবল কিশোরী।

বিবিসি রেডিও ৪-এর ‘হিস্ট্রিজ ইয়ংগেস্ট হিরোজ’ শীর্ষক পডকাস্টে নিকোলা কফলান ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা এমন সব তরুণদের গল্প বলছেন যারা বিশ্বকে পরিবর্তন করেছে। বিদ্রোহ, ঝুঁকি ও তরুণ শক্তির মিশেলের অসাধারণ সব গল্পের তালিকায় অড্রে হেপবার্নও স্থাপ পেয়েছেন।

রোমান হলিডে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অস্কার জিতেছিলেন তিনি
রোমান হলিডে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অস্কার জিতেছিলেন তিনি

পরিবার ও শৈশব

মিজ হেপবার্নের জন্ম ১৯২৯ সালে ব্রাসেলসে। ডাচ ব্যারোনেস এলা ভ্যান হেমস্ট্রা এবং ব্রিটিশ-অস্ট্রিয়ান ব্যবসায়ী জোসেফ হেপবার্ন-রাস্টন দম্পতির ঘরে জন্ম হয় তার।

লন্ডনে থাকা অবস্থায় তার বাবা-মা আকৃষ্ট হন ইহুদিবিদ্বেষী ও সহিংস সংগঠন ব্রিটিশ ইউনিয়ন অফ ফ্যাসিস্টস বা বিইউএফ নেতা ওসওয়াল্ড মোসলের প্রতি। নাৎসি জার্মানির মহিমার কথা উল্লেখ করে বিইউএফ এর ম্যাগাজিনের জন্য একটি নিবন্ধও লিখেছিলেন এলা ভ্যান হিমস্ট্রা।

অড্রে হেপবার্নের বয়স যখন ছয় বছর তখন তার বাবা জোসেফ হেপবার্ন রাস্টন বাড়ি ছাড়েন। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ‘বিদেশি ফ্যাসিবাদীদের সহযোগী’ হিসেবে ভূমিকা পালনের অভিযোগ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়টা ব্রিটিশ কারাগারে কেটেছিল তার।

অড্রে হেপবার্ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায় রবার্ট ম্যাটজেনের লেখা ‘ডাচ গার্ল’ বই থেকে। ‘হিস্ট্রিজ ইয়ংগেস্ট হিরোজ’ পডকাস্টের জন্য এক সাক্ষাৎকারে ওই লেখককে অড্রে হেপবার্নের কনিষ্ঠ পুত্র লুকা ডটি বলেছিলেন, “একেবারে শিশু অবস্থাতেও উনি খুব মিশুক ছিলেন। হাসতেন, খেলতেন, অভিনয় করতেন। আমার নানা তাকে মজা করে ‘মাংকি পাজল’ বলে ডাকতেন।”

অ্যাড্রে হেপবার্নের ছেলেবেলার বিষয়ে অনেক কথা উল্লেখ করেছেন লেখক রবার্ট ম্যাটজেন। তিনি বলেন, “অড্রের মা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে ইংল্যান্ড বিশেষত কেন্ট তার জন্য ঠিক জায়গা নয়। কারণ জার্মানরা ফ্রান্সে ঢুকে পড়তে এবং ইংল্যান্ড আক্রমণ করতে পারে।”

মায়ের সঙ্গে অভিনেত্রী
মায়ের সঙ্গে অভিনেত্রী

নেদারল্যান্ডসে ফিরে আসা

অর্ড্রেকে তার ব্রিটিশ বোর্ডিং স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নেদারল্যান্ডসে পারিবারিক এস্টেটে চলে আসেন এলা।

সেখানে অড্রে ভর্তি হন নাচের স্কুলে। আরো বেশি ডাচ প্রভাব আনসে তার নাম বদলে রাখা হয় অ্যাড্রিয়ান্টজে ভ্যান হেমস্ট্রা। তবে পরে অভিনয় জগতে প্রবেশ করার পর নিজের উপাধি হেপবার্নই ব্যবহার করতে শুরু করেছিলেন তিনি।

নিজের মায়ের জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে মি. ডটি জানান, নেদারল্যান্ডের জীবন অড্রের জন্য খুব সহজ ছিল না, তিনি ডাচ বলতে পারতেন না। একটা শব্দ না বুঝলেও তাকে ডাচ স্কুলে যেতে হচ্ছিলো। সেখানকার ছাত্ররা তাকে নিয়ে মজা করত।

এদিকে এলা ভ্যান হিমস্ট্রা কিন্তু অ্যাডলফ হিটলারকে খুব শ্রদ্ধা করতে আর বিশ্বাস করতেন, হিটলার কখনোই ‘তার’ দেশকে আক্রমণ করবেন না। তবে হিটলার ১৯৪০ সালের মে মাসে নেদারল্যান্ডস আক্রমণ ও দখল করেন।

মি. ম্যাটজেন সেই সময়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেছেন, “পূর্ব ফ্রন্ট তখন একটা অগ্নিকুণ্ডের মতো ছিল, সেখানে জরুরি সামগ্রী দ্রুত যোগান সম্ভব ছিল না। এদিকে নিজেদের সৈন্যবাহিনীর জন্য জার্মানদের খাবারের ও পোশাকের প্রয়োজন ছিল। এই সবকিছুই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল ডাচ ও জার্মানদের দখলে থাকা অন্যান্য দেশগুলো থেকে।”

কিশোরী অবস্থা থেকেই ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য লুকিয়ে কাজ করতেন তিনি
কিশোরী অবস্থা থেকেই ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য লুকিয়ে কাজ করতেন তিনি

নাৎসিদের বিরুদ্ধে অবস্থান

নীতিগতভাবে নাৎসিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন অড্রে হেপবার্নের চাচা কাউন্ট অটো ভ্যান লিমবার্গ স্টিরাম। ১৯৪২ সালে একটা প্রতিরোধকারী গোষ্ঠী রটারডামের কাছে একটি জার্মান ট্রেন বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এই ঘটনায় জড়িত না থাকার পরও গ্রেফতার করা হয় কাউন্ট লিমবার্গ স্টিরামকে।

নাৎসি এজেন্টরা তাকে ও আরো চারজনকে ধরে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে এবং দেহগুলো মাটি চাপা দিয়ে আসে।

চাচাকে বাবার মতোই ভালোবাসতেন অড্রে হেপবার্ন। এই হত্যাকাণ্ড তার মনের গভীরে দাগ ফেলে এবং তিনি একেবারে বিদ্ধস্ত হয়ে পড়েন।

লেখক রবার্ট ম্যাটজেন বলেছেন, “এই হত্যাকাণ্ডটি জাতীয় স্তরের ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় এবং ডাচ জনগণের জন্য একটা মোড় ঘোরানো ঘটনা ছিল এটি।”

যদিও অড্রে হেপবার্নের পরিবার অবস্থাসম্পন্ন ছিল, কিন্তু নাৎসিরা খাদ্য ও সম্পদ নেদারল্যান্ডস থেকে সরিয়ে নিতে থাকায় এর প্রভাব পড়ে তার পরিবারের ওপর। হেমস্ট্রা পরিবার দারুণ অভাবে পড়ে যায়।

অড্রে হেপবার্নের বয়স যখন ১৫ বছর, তখন তাকে একটা শর্ত দেওয়া হয়। নাৎসি শিল্পীদের ইউনিয়ন ‘কাল্টরকামার’-এ যোগ দিতে হবে অথবা প্রকাশ্যে নাচ করা ছেড়ে দিতে বলা হয় তাকে। খুব পছন্দের বিষয় হলেও প্রকাশ্যে নাচের পারফরম্যান্স ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মি. ডটির কথায়, “নাচের মাধ্যমে তিনি স্বপ্ন দেখতেন, উড়তেন, অনেক কিছু ভুলে থাকতে পারতেন। তার কাছে বাস্তব থেকে পালিয়ে বাঁচার উপায় ছিল এই নাচ।”

তবে নাচ তিনি আসলে ছাড়েননি। করতেন লুকিয়ে। সেফ হাউসের পর্দা নামিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে নাচ করতেন যাতে তাকে কেউ দেখতে না পায়।

লুকিয়ে আয়োজন করা ব্যালে অনুষ্ঠানে মৃদু সুরে পিয়ানো বাজানো হতো। কেউ হাততালি দিতে পারতেন না। সব শেষে অনুষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করা অর্থ ব্যবহার করা হতো নাৎসিদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা প্রতিরোধ বাহিনীর কাজকর্মের জন্য।

ব্যালে জানতেন অড্রে হেপবার্ন
ব্যালে জানতেন অড্রে হেপবার্ন

ব্যালেরিনা থেকে গুপ্তচর

১৯৪৪ সালের বসন্তে হেনড্রিক ভিসার হুফ্ট নামে এক চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করা শুরু করেন অড্রে হেপবার্ন, যিনি প্রতিরোধ যোদ্ধা দলের সদস্য ছিলেন। তার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতেন অড্রে।

যদিও এলার মা ব্যাপকভাবে নাৎসিদের সহযোগী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও মি. হুফ্টের সাঙ্ঘাতিকভাবে অড্রে হেপবার্নের সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, নাৎসিদের হাত থেকে লুকিয়ে থাকা হাজার হাজার মানুষকে সাহায্য করা। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য যতটা বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন তার ঠিক ততটাই ভরসা ছিল মিজ হেপবার্নের ওপর।

ঘটনাটা ১৯৪৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরের। তখন গীর্জায় ছিলেন মিজ হেপবার্ন। সেই সময় হঠাৎই ইঞ্জিনের তীব্র আওয়াজ শোনা যায়।

ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে ‘অপারেশন মার্কেট গার্ডেন’ যা ছিল রাইন নদীর ওপর বিস্তৃত নয়টা সেতু দখল করার জন্য মিত্র বাহিনীর একটা পরিকল্পনা।

এক ছুটে বাইরে এসে অড্রে হেপবার্ন দেখেন মিত্র বাহিনীর হাজার হাজার সেনা প্যারাসুটের সাহায্যে ভাসছে।

দুর্ভাগ্যক্রমে, নাৎসিদের দু’টো সাঁজোয়া ওই অঞ্চলে আবার অবস্থান নিচ্ছিল। এলা ভ্যান হিমস্ট্রাসের বাড়ির সামনে নাৎসি ট্যাংক চলাচল করতে থাকে।

যুদ্ধ চলাকালীন অড্রে হেপবার্ন ও তার পরিবার নয় দিন সেলারে লুকিয়ে ছিলেন। যখন তারা বাইরে আসেন, তখন খবর আসে নাৎসিরা জিতেছে।

কাছাকাছি ভবন থেকে মানুষের চিৎকার ভেসে আসে তার কানে। সেখানে নাৎসিদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যদের নির্যাতন ও হত্যা করা হচ্ছিল।

জার্মানির উদ্দেশে রওনা হওয়া মিত্রবাহিনীর বৈমানিকরা নেদারল্যান্ডসে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিল। সেই সময় অড্রে হেপবার্নকে দিয়ে তাদের কাছে খবর পাঠাতেন চিকিৎসক হুফ্ট।

প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য একসময় বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম হয়ে ওঠেন তিনি।
প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য একসময় বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম হয়ে ওঠেন তিনি।

এক ব্রিটিশ প্যারাট্রুপারের সঙ্গে দেখা করার জন্য অড্রে হেপবার্নকে জঙ্গলে পাঠিয়েছিলেন ডাক্তার হুফ্ট। অড্রে তার মোজার মধ্যে লুকিয়ে নেন সাংকেতিক বার্তা।

বৈঠকের পর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসার সময় তিনি লক্ষ্য করেন, তার দিকে ডাচ পুলিশ এগিয়ে আসছে।

এটা দেখে হঠাৎ করে ঝুঁকে বুনো ফুল কুড়াতে শুরু করেন তিনি। তারপর মোহময়ী ভিঙ্গিতে তা পুলিশককর্মীদের দিকে এগিয়ে দেন। মিজ হেপবার্নকে দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকে আর বিশেষ জিজ্ঞাসাবাদ করেনি তারা।

এরপর থেকে নাৎসিদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য প্রায়শই বার্তা বহন করতেন তিনি।

মায়ের বিষয়ে মি. ডটি বলেছেন, “উনি ভীষণভাবে বিশ্বাস করতেন, যখন ভালো আর মন্দের মধ্যে যুদ্ধ চলে তখন আপনাকে কোনও একটা পক্ষকে বেছে নিতেই হবে।”

সেই সময় নাৎসিদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠা অড্রে হেপবার্নের মতো কিশোর-কিশোরীদের কথা উল্লেখ করেছেন মি. ম্যাটজেন।

তিনি জানিয়েছেন, নাৎসিরা তেমন গুরুত্ব সহকারে নিত না এই ‘বাচ্চাদের’। আচরণটা ছিল অনেকটা এমন- আমার পথ থেকে সরে যাও বাছা! আর সেটা চোখ এড়ায়নি প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যদের। এটাকেই কাজে লাগায় ডাচরা।

অভিনয় জীবনে খ্যাতি ও সাফল্য দুই-ই পেয়েছেন তিনি
অভিনয় জীবনে খ্যাতি ও সাফল্য দুই-ই পেয়েছেন তিনি

তীব্র খাদ্য সংকট

১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট আসে যে প্রতি সপ্তাহে পাঁচশোর মতো ডাচ অনাহারে মারা যাচ্ছেন। অন্য অনেকের মতোই অড্রে হেপবার্ন ও তার পরিবারও তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছিলেন। তিনি রক্তশূন্যতা, জন্ডিসসহ বিভিন্ন রোগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এই অবস্থাতেই তার বাড়ির দোরগোড়ায় আবার ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়। অড্রে হেপবার্ন ও তার পরিবারের সদস্যরা তিন সপ্তাহ ধরে সেলারে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হন।

শেষ পর্যন্ত ১৯৪৫ সালের ১৬ এপ্রিল পরিবেশ ঠান্ডা হয়। যুদ্ধ শেষ হয়েছে এটা তিনি আঁচ করতে পেরেছিলেন নাকে তামাকের গন্ধ পেয়ে, কারণ যুদ্ধের সময় নেদারল্যান্ডসে অসম্ভব ঘটনা ছিল এটা। সেলার থেকে বাইরে এসে সিঁড়ি বেয়ে উঠে দরজা খুলে দেখেন পাঁচজন কানাডিয়ান সৈন্য সিগারেট খাচ্ছেন।

তাকে দেখতে পেয়েই সৈন্যরা মেশিনগান তাক করে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করেন মিজ হেপবার্ন। তার কথা শুনে একজন সৈন্য চিৎকার করে বলে ওঠে, “আমরা শুধু একটা জনপদই স্বাধীন করিনি, আমরা এক ইংরেজ মেয়েকেও মুক্ত করেছি।”

পরবর্তীকালে মিজ হেপবার্ন তার ছেলেকে বলেছিলেন ফ্যাসিবাদের প্রতি সহানুভূতি থাকায় তিনি কখনই তার মাকে ক্ষমা করেননি।

ইউনিসেফের 'গুড উইল অ্যাম্বাসেডর ছিলেন অড্রে হেপবার্ন
ইউনিসেফের ‘গুড উইল অ্যাম্বাসেডর ছিলেন অড্রে হেপবার্ন

কী হয়েছিল যুদ্ধের পর?

যুদ্ধ শেষে আবার লন্ডনে ফেরেন অড্রে হেপবার্ন। লন্ডনে ‘রাম্বার্ট স্কুল অফ ব্যালে অ্যান্ড কনটেম্পোরারি ডান্স’-এ বৃত্তি পান তিনি।

তবে প্রতিভা থাকার পরও অপুষ্টির কারণে তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। ব্যালেরিনা হওয়ার মতো শক্তি আর অবশিষ্ট ছিল না।

তাই অভিনয়কে বেছে নেন তিনি। ‘ওয়েস্ট অ্যান্ড’ থিয়েটারে কাজ শুরু করেন। ‘দ্য ল্যাভেন্ডার’ এবং ‘ হিল মব’-এর মতো চলচ্চিত্রে ছোটখাটো ভূমিকাও পান।

মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান ১৯৫৩ সালে ‘রোমান হলিডে’ চলচ্চিত্রে। এই সিনেমাটি সমালোচনামূলক ও বাণিজ্যিক সাফল্য যেমন পায়, তাকে বিখ্যাতও করে তোলো। এতে অভিনয়ের জন্য তিনি অস্কার যেতেন। তার ঝুলিতে এমি, গ্র্যামি ও টনি পুরস্কারও আসে।

পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে অভিনয় ছাড়াও জনহিতকর কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন অড্রে হেপবার্ন। তিনি ইউনিসেফের ‘গুড উইল অ্যাম্বাসেডর ছিলেন।

তার মৃত্যু হয় ১৯৯৩ সালে।

লেখক ম্যাটজেন বলেছেন, “যুদ্ধের সাক্ষী থাকা এবং নানান পরিস্থিতির সম্মুখিন হওয়ার ফলে অড্রের ইন্দ্রিয় সুতীক্ষ্ণ হয়ে উঠেছিল। আর তার অভিজ্ঞতার কারণে যে কোনো চরিত্রকেই সহজে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন তিনি।”

এই নিবন্ধটি অ্যালেক্স ভন টুনজেলম্যানের লেখা থেকে নেওয়া।

বিবিসি বাংলা

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024