নিকোল জাও
বুধবার তেলের দাম ১% এর বেশি কমে গেছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের বিশাল মজুত এই দরপতনের মূল কারণ। যদিও রাশিয়া ও অন্যান্য ওপেক সদস্যদের সরবরাহ কমে আসায় বাজারে শুরুতে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
ব্রেন্ট ক্রুড ৮৯ সেন্ট বা ১.১৬% কমে ব্যারেলপ্রতি ৭৬.২৩ ডলারে স্থির হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড ৯৩ সেন্ট বা ১.২৫% কমে ব্যারেলপ্রতি ৭৩.৩২ ডলারে নেমে আসে।
উভয় বেঞ্চমার্কই দিনের শুরুর দিকে ১% এর বেশি বেড়েছিল।
লিপোও অয়েল অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু লিপোও বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহে পেট্রোল ও ডিজেলের বড় মজুত বৃদ্ধি তেলের বাজারকে চাপে ফেলছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে রিফাইনারিগুলো উৎপাদন বাড়াতে থাকায় জ্বালানি মজুত ফুলে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে পেট্রোলের মজুত ৬.৩ মিলিয়ন ব্যারেল বেড়ে ২৩৭.৭ মিলিয়ন ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে, যেখানে রয়টার্সের জরিপে ১.৫ মিলিয়ন ব্যারেল বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হয়েছিল।
সেই সঙ্গে ডিজেল ও অন্যান্য মধ্যগত জ্বালানির মজুত ৬.১ মিলিয়ন ব্যারেল বেড়ে ১২৮.৯ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছেছে, যেখানে মাত্র ৬ লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল।
বাইসন ইন্টারেস্টস-এর চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার জোশ ইয়াং বলেন, “পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে যদি পণ্য মজুত আরও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে থাকে, তা হলে চিন্তার বিষয় হতে পারে। অন্যদিকে শীতের তীব্র আবহাওয়া অপরিশোধিত জ্বালানির সরবরাহ সীমিত করতে পারে এবং হিটিং অয়েলের চাহিদা বাড়াতে পারে।”
গত সপ্তাহে কাঁচা তেল মজুত ৯৫৯ হাজার ব্যারেল কমে ৪১৪.৬ মিলিয়ন ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে, যেখানে রয়টার্সের জরিপে ১ লাখ ৮৪ হাজার ব্যারেল হ্রাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
অন্য মুদ্রাধারীদের জন্য তেলকে তুলনামূলক ব্যয়বহুল করে তোলায় ডলারের শক্তি তেলের দামের ওপর আরও চাপ ফেলেছে।
তবে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছে ওপেকের সরবরাহসংকোচন। ডিসেম্বর মাসে, আগের দুই মাস ধরে উৎপাদন বৃদ্ধির পর, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফিল্ড রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ওপেকের উৎপাদন কমে যায়। নাইজেরিয়াসহ অন্যান্য সদস্যদেশের উৎপাদন বৃদ্ধির পরও এই সামগ্রিক হ্রাস দেখা গেছে।
রাশিয়ার ক্ষেত্রে, ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয় যে ডিসেম্বরে দেশটির তেল উৎপাদন গড়ে দৈনিক ৮.৯৭১ মিলিয়ন ব্যারেল ছিল, যা সরকারি লক্ষ্য থেকে কম।
বিশ্লেষকরা আশা করছেন, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে তেলের গড় মূল্য কিছুটা কমতে পারে, কারণ তখন নন-ওপেক দেশগুলো উৎপাদন বাড়াতে পারে।
ফিচ গ্রুপের একটি বিভাগ বিএমআই তাদের ক্লায়েন্ট নোটে জানিয়েছে, “আমরা এখনো আমাদের পূর্বাভাস ধরে রেখেছি যে ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুডের গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৬ ডলার হবে, যা ২০২৪ সালের গড় ৮০ ডলারের তুলনায় কম।”
Leave a Reply