রাজেন্দ্র যাধব
ভারতে গমের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সরবরাহ ক্রমশ কমে যাওয়া ও আটার কলগুলোতে শক্তিশালী চাহিদা থাকায় তারা প্রয়োজনীয় গম সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে এবং পুরো ক্ষমতায় চালাতে পারছে না, শিল্প সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানায়।
রেকর্ড উচ্চ মূল্যের কারণে খুচরা মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা গত বছরের নভেম্বর মাসে কিছুটা কমলেও অক্টোবর মাসে ১৪ মাসের সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছিল। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও প্রভাবিত হতে পারে।
শিবাজি রোলার ফ্লাওয়ার মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অজয় গোয়াল বলেন, “বাজারে গমের সরবরাহ কম। রেকর্ড দামে কিনলেও আটার কলগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে গম পাচ্ছে না, ফলে তারা পুরো ক্ষমতায় কারখানা চালাতে পারছে না।”
ডিসেম্বর মাসে, গমের মজুত নিশ্চিত করতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের গম মজুতের সীমা কমিয়েছে নয়াদিল্লি। তবে এই পদক্ষেপও গমের দাম কমাতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে রাজধানী দিল্লিতে গমের দাম প্রায় ৩৩,০০০ রুপি (প্রতি মেট্রিক টনে), যা গত এপ্রিলে ছিল ২৪,৫০০ রুপি এবং সরকার-নির্ধারিত সর্বনিম্ন সহায়ক মূল্যের (গত মৌসুমের) ২২,৭৫০ রুপি থেকেও অনেক বেশি।
ফ্লাওয়ার মিল মালিক প্রমোদ কুমার বলেন, “মজুতসীমা আরোপ করেও সরবরাহ বাড়েনি ও দাম কমেনি। এতে বোঝা যায় বেসরকারি খাতে তেমন গম নেই। সরকারকে তাদের মজুত থেকে আরও বেশি গম বাজারে ছেড়ে বড় ভোক্তাদের সহায়তা করতে হবে।”
ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এফসিআই) প্রতি সপ্তাহে বড় ভোক্তাদের কাছে ১,০০,০০০ মেট্রিক টন গম বিক্রি করছে। কিন্তু বেসরকারি খাতের বিক্রি কমে যাওয়ায় এই পরিমাণ যথেষ্ট নয় বলে কুমার জানান।
গত নভেম্বর মাসে সরকার ঘোষণা দেয় যে, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মজুত থেকে মোট ২৫ লাখ টন গম বিক্রি করা হবে বড় ভোক্তাদের কাছে। অথচ আগের মৌসুমে প্রায় এক কোটি (১০ মিলিয়ন) টন গম বিক্রি করেছিল।
এফসিআই-এর অতিরিক্ত গমের মজুত এখন সীমিত, তাই তারা বেসরকারি খাতে বেশি পরিমাণে গম ছাড়তে পারছে না, বলছেন নয়াদিল্লিভিত্তিক এক বৈশ্বিক বাণিজ্য সংস্থার ডিলার।
ডিসেম্বর মাসের শুরুতে সরকারি গুদামগুলোতে ২০.৬ মিলিয়ন টন গম মজুত ছিল, যা আগের বছরের ১৯.২ মিলিয়ন টনের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে এই পরিমাণ বিগত পাঁচ বছরের গড় ২৯.৫ মিলিয়ন টনের তুলনায় বেশ কম।
Leave a Reply