বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন

ভ্যাট–কর বৃদ্ধি: দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলবে

  • Update Time : শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২.১০ পিএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ভ্যাট–কর বৃদ্ধি: দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলবে”

অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক দুটি সিদ্ধান্ত—শুল্ক-কর বৃদ্ধি এবং টিসিবির ট্রাক সেল কর্মসূচি বন্ধ—স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রীয় নীতির অদূরদর্শিতা এবং অসামঞ্জস্যের প্রতিফলন। প্রথম সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শতাধিক পণ্যের ওপর শুল্ক-কর বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা জনসাধারণের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

মূল্যস্ফীতির উচ্চ মাত্রা বর্তমানে সাধারণ মানুষের ওপর ব্যাপক আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছে, এবং এভাবে শুল্ক-কর বাড়ানো আরও বেশি চাপ তৈরি করবে। এর ফলে বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, যা দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।

এটি সত্যিই অত্যন্ত আশ্চর্যজনক এবং উদ্বেগজনক যে বর্তমান সরকার কর আয় বাড়ানোর জন্য পরোক্ষ করের ওপর অতিমাত্রার নির্ভরতা আরও বাড়াচ্ছে। পরোক্ষ কর সাধারণত সাধারণ জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। কারণ, এসব কর সরাসরি পণ্যের মূল্য বা সেবার সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং জনগণ এগুলোর পুরো বোঝা বহন করে।

বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, তখন এই ধরনের কর বৃদ্ধির ফলে গরিব ও মধ্যবিত্ত জনগণের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। অথচ সরকার যদি তাদের রাজস্ব নীতির পুনর্বিবেচনা করে এবং ধনীদের কাছ থেকে আরও কর আদায় করার পথে পদক্ষেপ নেয়, তবে তা বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে।

বর্তমানে, দেশে কিছু ধনী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দেয় বা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কর রেহাই পেয়ে থাকে। এরা উচ্চ মূল্যের পণ্য ও সেবা বিক্রি করলেও, তাদের আয় ও সম্পত্তির ওপর যথাযথ কর আদায় করা হয় না।

এই বৈষম্য সমাজে ন্যায্যতা ও আস্থা নষ্ট করে এবং দেশীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। যদি সরকার তাদের কর ব্যবস্থাপনায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নিত এবং কর ফাঁকি দেওয়া ধনীদের থেকে প্রকৃত কর আদায় করত, তবে সরকারের রাজস্ব আয় আরও শক্তিশালী হতে পারত। বিশেষ করে, যারা অবৈধভাবে কর ফাঁকি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের দায়িত্ব।

 

 

দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দু’পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার মিরপুরের থানা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে সংগঠনটির কার্যালয়ে এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

আহতদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন – মিরপুর মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নাহিয়ান, ঢাকা পলিটেকনিকের ছাত্র শিক্ষার্থী রনি ও সাফরান।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের মিরপুর থানা কমিটি ঘোষণার পর বেশ কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। পদ বঞ্চিতরা বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা পুনরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসে আসেন।

তারা জানান, পদবঞ্চিতরা একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেল সম্পাদক (দপ্তর) জাহিদ আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, কিছু লোক এসে মিরপুর থানায় যুক্ত হতে চায়। তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। কথা কাটাকাটি হয়, ওরকম হামলার ঘটনা ঘটেনি।

 

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “লুক্কায়িত খরচে হাত দিচ্ছে না সরকার, উল্টো জনপরিষেবায় দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা”

আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে ১৬ বার। পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার ও খুচরায় ১৪ বার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দামও। এতবার এসব জনপরিষেবার মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বিগত সরকারের দুর্নীতি-অনিয়ম, লুটপাট এবং লুক্কায়িত বা গোপন নানা ব্যয়কে (হিডেন চার্জ) দায়ী করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও এসব জনপরিষেবার দাম বাড়ানোর নানা উদ্যোগ, প্রস্তাব ও পরিকল্পনা চলমান রয়েছে। এসব ব্যয়ের কারণ অনুসন্ধান ও তা কমানোর উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো জনপরিষেবাগুলোর মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতিবিদ ও নাগরিক সংগঠনগুলোর ভাষ্যমতে, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনসাধারণের বড় প্রত্যাশা ছিল উচ্চ মূল্যস্ফৃীতির তীব্র চাপ থেকে রেহাই দিতে নাগরিকদের ইউটিলিটি বা জনপরিষেবা খাতের ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। এজন্য খাতগুলোর দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধের পাশাপাশি অযাচিত ব্যয় কমিয়ে আনা হবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার আমলে সে পথে না গিয়ে জনসাধারণের ব্যয়ের বোঝা আরো বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যে এ ধরনের উদ্যোগ জনজীবনকে আরো খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলবে। অভ্যুত্থানে পতিত বিগত সরকারের বিভিন্ন সময়ে নেয়া প্রকল্পগুলোয় অনেক হিডেন চার্জ বা লুক্কায়িত খরচ যুক্ত হয়েছে। এগুলোকে যৌক্তিকতার নিরিখে পর্যালোচনা হওয়া উচিত। সেটি করা গেলে গ্যাস-বিদ্যুৎ ও পানিতে খরচ কমানো অনেকাংশেই সম্ভব ছিল।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি নিয়ে বিগত সরকার যে পদ্ধতিতে চলেছে, এ সরকার তারই ধারাবাহিকতা রক্ষা করছে। বিগত সরকারের করা চুক্তি এমনকি যেসব প্রকল্পগুলোকে খতিয়ে দেখতে চাচ্ছে না। এগুলো গ্রাহক থেকে শুরু করে জনসাধারণের জন্য দুর্ভাগ্য তৈরি করেছে। পানির মূল্য নির্ধারণে একটি ওয়াটার রেগুলেটরি বডি তৈরির কথা বলা হয়েছিল। অর্থাৎ পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে রেগুলেটরি কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছিল। বিগত সরকার সেগুলো বাতিল করেছিল। ওয়াসা নিজের মতো করে পানির দাম বাড়াচ্ছে। যেখানে কোনো জবাবদিহিতা বা যৌক্তিকতা নেই। এতে ইউটিলিটি খাতের ভয়াবহ যেসব দুর্নীতিগুলোর বিষয়ে যেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া যাবে না, তেমনি দাম কমানোর সুযোগও তৈরি হবে না। বরং বাড়তেই থাকবে।’

 

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “৭১ প্রশ্নে জামায়াতে নতুন আলোচনা, আসতে পারে সিদ্ধান্ত”

মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে জামায়াতে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে কথা বলেছেন। সহসাই জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সভায় এ ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে। জামায়াতের একাধিক সূত্র বলছে, দলটি একাত্তর প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। দলটি কখনো এ নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। যদিও এ বিচার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। একাত্তর প্রশ্নে জামায়াতেও নানা সময় ভিন্নমত ছিল। দলটির নেতাদের কারও কারও মত ছিল, তখনকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতারা কখনও এ ব্যাপারে সাড়া দেননি। তবে জামায়াতের সব নেতাই দাবি করে আসছেন, জামায়াত নেতারা যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিলেন না।

৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াত অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। দেড় দশক পর দলটি প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে জামায়াতের লোকজন নিয়োগ পাচ্ছেন এমন আলোচনাও রয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধকালীন দলটির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা থামছে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত এ ব্যাপারে কী করতে পারে- তা নিয়ে দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা আলোচনা করেছেন।

জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা জানান, একাত্তরে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে দেশের জনগণের কাছে জামায়াত যেতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে দলের দুই-তিনজন শীর্ষ নেতাও একমত। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি তারা উপস্থাপন করবেন। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা কী ছিল তা জাতির সামনে পরিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি। তবে জামায়াত ক্ষমা চাইবে কি না কিংবা ক্ষমা চাইলেও কী প্রক্রিয়ায় চাইবে তা ওই নেতা খোলাসা করে বলেননি। তিনি বলেছেন, নির্বাহী পরিষদ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024