নেপথ্য কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, “আমাদের কাছে মনে হচ্ছে একটা সাময়িক মজুতদারির ঘটনা ঘটছে।”
ভারত থেকেও জিটুজি’র মাধ্যমে চাল আমদানির আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।
‘ব্যাপক আমদানির প্রস্তুতি চলছে’ বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যউপদেষ্টা
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ চাল উৎপাদন হয় চার কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন।
তবে এবার আমন মৌসুমে প্রত্যাশিত মাত্রায় চাল পাননি বলে দাবি চাল ব্যবসায়ীদের।
“ধানের চাহিদাটা এবার বেশি। এবার আমনের আবাদ তুলনায় ফলনের রেশিওটা (অনুপাত) কম হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন চাল ব্যবসায়ী মো. নিজাম উদ্দিন।
ব্যবসায়ীরাও অন্যতম কারণ হিসেবে গত অগাস্টের আকস্মিক বন্যার কথা বলছেন।
জুলাই থেকে অগাস্টের মাঝামাঝি সময় হলো রোপা আমনের রোপনের সময়। অগাস্টের শেষ ভাগে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে হঠাৎ বন্যা পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করে। এতে জনজীবনের মতোই বিপর্যস্ত হয় কৃষি উৎপাদনও।
তবে মজুত নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার বক্তব্যে মতভেদ আছে ব্যবসায়ীদের।
“অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রত্যেকটা মিলারের কাছে মজুত কম,” দাবি চালকল মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ লায়েক আলীর।
“একজন মিলারের ক্যাপাসিটি (সক্ষমতা) কতটুকু, সেই তথ্য সরকারের কাছে আছে। এখন যদি উপদেষ্টা মহোদয় মনে করেন কেউ মজুতদারি করতেছেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় তার লোক আছে তাদের দিয়ে অনুসন্ধান করে দেখুন,” বলেন মি. আলী।
মি. আলীর দাবি, যারা অন্যান্য কনজ্যুমার গুডস্ এর সঙ্গে চালটাকেও প্যাকেট করে বিক্রি করে তাদের কাছে মজুত থাকতে পারে।
যদিও এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া, সাধারণ মানুষ সংকটের আশঙ্কায় বেশি করে কিনে রাখছে কি না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন এই চালকল মালিক।
ধান কেনার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায়, দাম বেশি পড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ঢাকার বাবু বাজার চাল মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, এখন বড় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ধান কিনতে হয়, আগে এমনটা ছিল না।
“সেই প্রতিযোগিতার প্রভাব পড়ে চালের দামে,” যোগ করেন তিনি।
তবে এখনো বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক আছে জানিয়ে মি. উদ্দিন বলেন, ধানের দাম ভালো না পেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফলে এই প্রতিযোগিতারও একটা ইতিবাচক দিক আছে।
আমদানি করা চালের ক্ষেত্রে ডলারের হারের কারণেও দামে তারতম্য দেখা দেয় বলে দাবি তার।
এদিকে, পাইকারির সাথে খুচরা বাজারে দামের অসঙ্গতির যে অভিযোগ বাণিজ্য উপদেষ্টা তুলেছেন তার সঙ্গে দ্বিমত করছেন অনেক খুচরা ব্যবসায়ী।
মো. আল আমিন নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী জানালেন, পাইকারী বাজারেই সাত থেকে আট টাকা দাম বেড়েছে। তারা অতটা বাড়াননি।
“আমরা আগেও কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা লাভ করতাম। এখনো তাই করি,” যোগ করেন মি. আল আমিন।
নবাবগঞ্জ বাজারের চাল বিক্রেতা আব্দুল আলীম এক পর্যায়ে ক্রয় রশিদ বের করে দেখালেন যে তিনি ৭৯ টাকা দরে যেই চাল কিনেছেন, সেটা ৮১ টাকায় বিক্রি করছেন।
তার দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে ব্যবসা করতে হয় বলে খুচরা পর্যায়ে অতিরিক্ত দাম রাখা সহজ নয়।
বিবিসি নিউজ বাংলা
Leave a Reply