শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫১)

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১.০০ পিএম

শ্রী নিখিলনাথ রায়

গুডল্যাড সাহেব হেষ্টিংসের আজ্ঞাপ্রতিপালনে ত্রুটি করেন নাই। আজিও তাঁহার নাম রঙ্গপুর অঞ্চলে প্রবাদবাক্যের ন্যায় প্রচলিত রহি- য়াছে। দেবীসিংহ এই গুডল্যাড সাহেবের সহায়ক হইয়া রঙ্গপুর অঞ্চলের হতভাগ্য প্রজাদিগের উপর লাঠিবাজী করিয়াছিলেন। হেষ্টিংসের আদেশে ও গুডল্যাড সাহেবের যত্নে, কান্তবাবু বাহারবন্দ হইতে রীতিমত রাজস্ব আদায় করিতে লাগিলেন।

রাণী ভবানীর নিকট হইতে বাহারবন্দ বিচ্যুত হওয়ায়, দেশের যাবতীয় লোক দুঃখিত হইয়াছিল। বিশেষতঃ একজন ব্রাহ্মণ-বিধবার সম্পত্তি বলপূর্ব্বক অন্য এক ব্যক্তিকে প্রদান করায়, সকলে মর্মাহত হইয়াছিল। তৎকালে রাণী ভবানীর আয় যেরূপ সৎ- কার্য্যে ব্যয়িত হইত, সেরূপ আর কখনও হয় নাই বলিয়া লোকের বিশ্বাস। লোকে তাঁহার সম্পত্তিকে সাধারণের সম্পত্তি মনে করিত; কারণ সকলে কোন না কোন প্রকারে তাহা হইতে উপকার প্রাপ্ত হইত।

বিশেষতঃ ব্রাহ্মণগণকে তিনি যেরূপ প্রতিপালন করিয়া গিয়াছেন, তাঁহাদিগকে ব্রহ্মোত্তরপ্রদান ও অন্যান্য অনেক প্রকারে যেরূপ সাহায্য করিয়াছেন, বাঙ্গলা দেশে সেরূপ আর কেহ কখন করিতে পারিবেন কিনা সন্দেহ। সেই জন্য হিন্দুমাত্রেই দুঃখিত হইয়াছিলেন। কান্ত বাবুর হস্তে উক্ত সম্পত্তি পতিত হওয়ায়, তাঁহারা সেরূপ আশা করেন নাই; বরং বিপরীতই মনে করিয়াছিলেন।

কিন্তু এক্ষণে বলিতে হইতেছে যে, মহারাণী স্বর্ণময়ী মহোদয়ার ও তাঁহার উপযুক্ত বংশধর মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্রের সময়ে সাধারণে সেই উপকার কিয়ৎ পরিমাণে প্রাপ্ত হইয়াছেন। বাস্তবিক বাহারবন্দ পরগণা বলপূর্ব্বক কান্তবাবুকে প্রদান করা হেষ্টিংস-চরিত্রের একটি প্রধান কলঙ্ক। মহারাজ নন্দকুমার ১৭৭৫ খৃঃ অব্দের ৮ই মার্চ হেষ্টিংসের নামে যে অভিযোগ-পত্র লিখিয়া কাউন্সিলে উপস্থাপিত করেন, তাহার এক স্থলে, তিনি ইহার উল্লেখ করিয়াছেন। একথা পূর্ব্বেও লিখিত হইয়াছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024