শ্রী নিখিলনাথ রায়
১৭৭৩ খৃঃ অব্দে কান্ত বাবু প্রকাশ্য নীলামে ১৯টি পরগণার জমিদারী ৫ বৎসর মেয়াদে বন্দোবস্ত করিয়া লইয়াছিলেন। ১৭৭৩ খৃঃ অব্দের জন্ম ১৩,৩৩,৬৬৪; ১৭৭৪ খৃঃ অব্দে ১৩,৪৬,১৫২; ১৭৭৫ খৃঃ অব্দে ১৩,৬৭,৭৯৬; ১৭৭৬ খৃঃ অব্দে ১৩,৮৮,৩৪৬ এবং ১৭৭৭ খৃঃ অন্ধে ১৪,১১,৮৮৬ টাকায় তাঁহার সহিত পরগণাগুলির বন্দোবস্ত হয়। উক্ত ১৯ পরগণার মধ্যে দ্বিতীয় বর্ষের শেষে তিনি তিনটি পরগণা ইস্তাফা দিয়াছিলেন।
এতদ্ভিন্ন তিনি কোন কোন জমিদারী ক্রয়ও করিয়া- ছিলেন। তন্মধ্যে পঞ্চকূট রাজ্যের সাতাইশ সতর বা চাটবালিয়াপুর জমিদারী সর্ব্বপ্রধান। কয়লার খনিতে পরিপূর্ণ থাকায়, তাহা এক্ষণে অত্যন্ত লাভকর হইয়া উঠিয়াছে। হেষ্টিংস সাহেবের প্রিয় বেনিয়ান কান্ত বাবুর রাজস্ববন্দোবস্ত তৎকালে যে, অতি সুবিধাজনক ছিল, তাহা বলা বাহুল্যমাত্র। হেষ্টিংসের প্রিয়পাত্রগণকে যেরূপ রাজস্ব প্রদান করিতে হইত, তাঁহারা তদপেক্ষা অনেক অধিক গুণ লাভ করিতেন; সুতরাং উনবিংশ পরগণা হইতে কান্ত বাবুর কিরূপ আয় হইত, তাহা সকলে অনুমান করিতে পারেন।
যদি বাস্তবিক এই সমস্ত জমিদারী কান্ত বাবুর কেবল নিজেরই হইত এবং তিনি স্বীয় লালসাকে ক্রমে ক্রমে প্রসারিত করিতে পারিতেন, তাহা হইলে যে, কালে অর্দ্ধবঙ্গের একা- ধিপত্য লাভ করিতে সমর্থ হইতেন, তাহা কিয়ৎপরিমাণে বিশ্বাস করা যাইতে পারে। কিন্তু এই সমস্ত জমিদারীগ্রহণের মধ্যে কিছু গুপ্ত রহস্য ছিল বলিয়া বোধ হয় এবং বাধ্য হইয়া, পরিণামে তাঁহার এ লালসা দিন দিন সঙ্কুচিত করিতেও হইয়াছিল।
পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে যে, কাউন্সিলের তিন জন সদস্য হেষ্টিংস সাহেবের বিপক্ষ ছিলেন। তাঁহারা প্রথমতঃ, এ বিষয়ে যথাসাধ্য বাধা প্রদান করিতে লাগিলেন। যখন হেষ্টিংস সমস্ত বিধিব্যবস্থা পদদলিত করিয়া, যথেচ্ছাচারিতা অবলম্বনপূর্ব্বক নিজের প্রিয়পাত্রগণের উদর- পূরণের জন্য অনেকের মুখের গ্রাস কাড়িয়া লইতে আরম্ভ করিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানীর যথেষ্ট ক্ষতি করিতে লাগিলেন, তখন সদস্তগণ ডিরেক্টারদিগকে এ বিষয়ের আনুপূর্ব্বিক বিবরণ লিখিয়া পাঠাইলেন।
Leave a Reply