শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সহ ৫ জন খালাস ,মুক্তিতে বাধা নেই

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ৬.৩৫ পিএম

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রায় সাড়ে ১৭ বছর আগে গ্রেপ্তার বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সহ ৫ জনকে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। লুৎফুজ্জামান বাবরের এটিই ছিল তার বিরুদ্ধে সবশেষ মামলা। এ মামলায় খালাসের পর তার এখন মুক্তি পেতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

খালাস পাওয়া অন্য ব্যক্তিরা হলেন- রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, নুরুল আমিন, মহসীন তালুকদার ও এনামুল হক। এ ছাড়া যাবজ্জীবনের পরিবর্তে উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াকে ১৪ বছর এবং ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে আকবর হোসেন, লিয়াকত হোসেন, হাফিজুর রহমান ও শাহাবুদ্দিনকে। আর মৃত্যুজনিত কারণে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, দীন মোহাম্মদ, আব্দুর রহিম ও হাজী আব্দুস সোবহানের আপিল বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এবার অস্ত্র আইনের মামলায় খালাস, বাবরের মুক্তিতে বাধা নেই।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী শিশির মনির। এর আগে সবশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক হওয়ার ঘটনায বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় খালাস পেয়েছিলেন তিনি। বিএনপির এই নেতা দুর্নীতি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের (দুই মামলা) মতো ঘটনায় করা মামলায় দন্ডিত হয়েছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে খালাস পাচ্ছেন লুৎফুজ্জামান বাবর।

রায়ের পর সাবেবক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরকে ৭৮ দিন রিমান্ডে নিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে জবানবন্দি দিতে। এই জবানবন্দি দিলে তাকে (বাবরকে) আসামি না করে সাক্ষী করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৭৮ দিন রিমান্ডে থাকার পরও তিনি এই জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। যে কারণে তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়।’
আইনজীবী বলেন ‘আদালত আজকেই একটি অ্যাডভান্স আদেশ দেবেন। আশা করছি আজকেই এই আদেশ বাস্তবায়ন হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি জেল থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন। আদেশ যথাসময়ে পৌঁছার পর তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।’যাবজ্জীবন থেকে কমিয়ে যে চারজনকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে, তারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন। ফলে এই চারজনেরও কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ।
এর আগে ১৮ ডিসেম্বর একই ঘটনায় হওয়া অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় বাবরসহ ৭ আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে মৃত্যুদন্ড থেকে যাবজ্জীবন দন্ড দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে বন্দরনগরীর কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা করা হয়। সিলেটে চার মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর।

মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ হয় একই আসামিদের। বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দন্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024