প্রদীপ কুমার মজুমদার
ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে নাম সংখ্যা
ভারতীয় শাস্ত্রাদিতে অথবা গণিত গ্রন্থে সংখ্যার নামোল্লেখ না করে অথবা সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে কোন বস্তুর নামোল্লেখ করা হোত। সাধারণতঃ এই পদ্ধতিকে কোন কোন পণ্ডিত “শব্দ সংখ্যা” বলে উল্লেখ করেছেন। আবার কেউ কেউ আঙ্কিক শব্দ বলেছেন। সুপ্রসিদ্ধ গণিতাচার্য মহাবীর (৭৭৫ শকাব্দ) এই পদ্ধতিকে “সংখ্যা সংজ্ঞা” বলেছেন। মহাভাস্করীয়ের ভান্তকার সূর্যদেব যজা নিম্নোক্ত শ্লোকটি উল্লেখ করেছেন:
“অক্ষরসংজ্ঞা জেয়া কচিৎ কচিভূত সংজ্ঞিকা জেয়া।
সংখ্যাবস্তুনি যথা সুকরাণ্যুপ পাদয়িতুং তথা বক্ষ্যে।
পদ্ধতির নামকরণে যে যাই বলুন না কেন তবে এই পদ্ধতির মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে: (ক) সংখ্যাকে বস্তু দিয়ে নির্দেশ করা, (খ) বস্তুকে সংখ্যা দিয়ে নির্দেশ করা।আমরা সকলেই জানি পৃথিবীর একটি চন্দ্র ছাড়া দ্বিতীয় চন্দ্র নেই সুতরাং এক সংখ্যাকে নির্দেশ করতে “চন্দ্র” শব্দটি উল্লেখ করা হ’য়ে থাকে। ব্রহ্ম “একমেবা- দ্বিতীয়ম্ সুতরাং এক সংখ্যা বিবক্ষার্থে ব্রহ্ম উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
মানুষের দুটি কর এবং দুটি নেত্র সুতরাং দুই সংখ্যা নির্দেশনার্থে কখনও কর কখনও বা নেত্র শব্দ উল্লেখ করা হয়ে থাকে। ঠিক এইভাবে যদি আমরা ভারতীয় শাস্ত্র ও গণিতগ্রন্থ পাঠ করি তাহলে দেখতে পাব যে এক থেকে নয় এবং তার বেশী সংখ্যার নির্দেশনার্থে বিভিন্ন বস্তুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূর্যসিদ্ধান্তে বলা হয়েছে বৃহস্পতি গ্রহ এক মহাযুগে প্রদক্ষিণ করে “খদস্রাক্ষিবেদযড়বহ্নি” বার।
(চলবে)
Leave a Reply