আর্কাদি গাইদার
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
ওই একটা গ্রীষ্মের মধ্যে ফেদকা যেমন লম্বা হল তেমনি পাকাপোক্ত, ঝান, হয়ে উঠল একেবারে। লম্বা-লম্বা চুল রাখল, গায়ে চড়াল কালোরঙের রুশী ঢোলা কামিজ। আর হাতে ওর সব সময়েই থাকত একটা ব্রিফকেস। খবরের কাগজে বোঝাই এই ব্রিফকেস হাতে ও একটা ইশকুলের সভা থেকে আরেকটা ইশকুলের সভায় ছুটোছুটি করে বেড়াতে লাগল। ফেকাকে দেখা যেতে লাগল সর্বত্র।
ক্লাস কমিটির সভাপতি ফেঢুকা। বালিকা বিদ্যালয়ে কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিও ফেঢুকা। মা-বাপদের সভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি সেই ফেদ্কা। বক্তিমে দেয়ায় ও হয়ে উঠল চৌকস, যেন একেবারে দ্বিতীয় কুগলিকভ। ‘ছাত্ররা শিক্ষকদের কথার জবাব দেবে কি বসে, না দাঁড়িয়ে উঠে?’ কিংবা ‘স্বাধীন দেশে বাইবেল-ক্লাসে বসে তাস খেলা চলতে পারে কী?’
এই ধরনের বিষয় নিয়ে বিতর্ক সভায় ফেকাকে প্রায়ই দেখা যেত লাফিয়ে ডেস্কের ওপর উঠে দাঁড়িয়েছে। তারপর দেখতে-দেখতে একটা পা এগিয়ে দিয়ে, একটা হাত কোমরের বেলটে গজে বলতে শুরু করেছে: ‘নাগরিকবৃন্দ, আমরা আপনাদের আহবান জানাচ্ছি… পরিস্থিতি আজ এমন… বিপ্লবের ভবিষ্যৎ ফলাফলের দায়িত্ব আমাদেরই কাঁধে’ অর্থাৎ, কথায়-বার্তায় একেবারে, যাকে বলে, আঠারো আনা পোক্ত।
আমার সঙ্গে কিন্তু ফেক্কার তেমন বনছিল না। তখনও পুরো ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় নি বটে, তবে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক’ দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছিল।
আমি আবার সকলের থেকে আলাদা হয়ে পড়ছিলুম।
Leave a Reply