বেতের টুকরিটা ঘাড় য়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই মাওজারটা সঙ্গে করে নিয়ে খ্যান মিমাতিাহলেরে তাহলে নিশ্চয়ই কিছুক্ষণের জন্যে ওটা বাড়িতেই কোথাও লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু তা কোথায় হতে পারত? সঙ্গে সঙ্গে মনে হল, কাবার্ডের ওপর দিকের টানাটায় নিশ্চয়। কারণ ওই একটা টানাই ছিল চাবিবন্ধ।
আমার মনে পড়ল, অনেক দিন আগে একবার মা ওষুধের দোকান থেকে ‘করোসিভ সাব লিমেট’-এর ছোট-ছোট গোলাপী বড়ি কিনে এনে সেগুলো ওই টানায় চাবিবন্ধ করে রেখে দিয়েছিলেন। যাতে আমরা ওতে হাত না-দিতে পারি সেজন্যে। আমাদের ছোট্ট কুকুরের একটা থাবা সিমাকভরা ভেঙে দেয়ায় ফেকা আর আমি তাদের লালচে বেড়ালটাকে মেরে ফেলার মতলব এ’টেছিলুম। আর কতগুলো ভাঙাচোরা লোহায় আবর্জনার মধ্যে হাতড়াতে-হাতড়াতে আমরা তখন একটা চাবি পেয়ে গিয়েছিলুম, যেটা দিয়ে সেবার টানাটা খোলা গিয়েছিল। সে-সময়ে মাত্র একটা বড়ি চুরি করে আমরা চাবিটা ফের যথাস্থানে রেখে দিয়েছিলুম।
ভাঙাচোরা জিনিসপত্র রাখার ঘরটায় গিয়ে একটা ভারি ড্রয়ার টেনে বের করলুম। টুকরো-টুকরো পুরনো লোহা, নাটবল্টু, স্ফু এই সব হাতড়াতে-হাতড়াতে এক-টুকরো টিনে ঘ্যাঁচ করে হাতটা গেল কেটে। কিন্তু সেদিকে নজর দেবার সময় ছিল না। হঠাৎ গোটা তিনেক জং ধরা চাবি পেয়ে গেলুম। ভাবলুম, এর মধ্যে একটাতে নিশ্চয়ই টানাটা খুলবে… খুব সম্ভব এই চাবিতেই খুলবে।
কাবার্ডের কাছে ফিরে গিয়ে জোর করে তালার মধ্যে চাবিটা ঢোকালুম। কিছুক্ষণ ক্যাঁচকোঁচ আওয়াজ করতে করতে হঠাৎ খুট করে তালা গেল খুলে। টানাটা খুললুম। হ্যাঁ, ওই তো আমার মাওজার। আর ওই তো খাপটা আলাদা পড়ে আছে। দুটো জিনিসই উঠিয়ে নিয়ে টানাটা ফের চাবিবন্ধ করে চাবিটা জানলা গলিয়ে বাগানে ফেলে দিলুম। তারপর এক ছুটে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লুম। এদিক-ওদিক তাকাতে- তাকাতে এগোচ্ছি, হঠাৎ দেখি মা বাজার থেকে ফিরছেন। চট করে মোড় নিয়ে অন্য রাস্তায় চলে এলুম, তারপর কবরখানার দিকে লাগালুম ছুট।
Leave a Reply