প্রদীপ কুমার মজুমদার
অসুবিধার কথা বলতে গেলে প্রধানত একটি অসুবিধার কথাই মনে আসে। সেটি হচ্ছে-এই পদ্ধতিতে একই শব্দের সাহায্যে নানা ধরণের সংখ্যা নির্দেশ করতে পারে। যেমন ধরা যাক “পঙক্তি” শব্দটি। এটিতে পাঁচটি পাদ আছে এবং প্রতিটি পাদে ৮টি করে অক্ষর আছে। সুতরাং মোট ৪০টি অক্ষর আছে। অতএব পড়ুক্তি -৪০ ধরা হবে। কিন্তু বেদে পাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে পংক্তি-৫ ধরা হয়ে হয়েছে। আবার পরবর্তী কালে কোথাও কোথাও যেমন পদ্মপুরাণের পাতাল খণ্ডে পড়ুক্তি – ১০ ধরা হয়েছে।
এখানে বলা হয়েছে:
অযোধ্যায়াং মহারাজঃ পুরা পত্র ক্তিরখো বলী।
তক্ষাত্মজো রামচন্দ্রঃ সর্ব্বশূরশিরমণিঃ৪
এখানে “পঙক্তিরখ” শব্দটির অর্থ দশরথ অর্থাৎ পড়ুক্তি=১০ ধরা হয়েছে। “বিরাট” শব্দটি ঐতরেয় ব্রাহ্মণে ১০ সংখ্যা ধরা হয়েছে। কিন্তু কোথাও কোথাও বিরাট = ৩০ উল্লেখ করা হয়েছে। ঠিক এইভাবে ‘যটশতং’কে কেউ বলেন ৬০০, আবার কেউ বলেন ১০৬। সেইরূপ ‘পঞ্চশতং’কে কেউ বলেন ৫০০, আবার কেউ বলেন ১০৫।
ভারতবর্ষে কবে নাগাদ নাম সংখ্যার প্রচলন হয়েছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে রীতিমত বিরোধ রয়েছে।
জি. আর. ক্যে মনে করেন গ্রীষ্টীয় নবম শতাব্দীতে “নাম সংখ্যা” ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে প্রবেশ করে। ওয়েবার (বেবর) প্রমুখ ঐতিহাসিকেরা মনে করেন এই পদ্ধতি ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে অতি প্রাচীনকাল থেকেই আছে। আমরা যদি বেদ, পুরাণ, স্মৃতি প্রভৃতি ভারতীয় গ্রন্থ পর্যালোচনা করি তাহ’লে এই সব গ্রন্থে নাম সংখ্যার প্রয়োগ ভূরি ভূরি দেখতে পাবো। বেদের মধ্যে নাম সংখ্যার উল্লেখ আছে। এ গুলির কিছু কিছু নিয়ে আলোচনা করা যাক।
(চলবে)
Leave a Reply