সত্যেন্দ্রকুমার বসু
হিউএনচাঙ ছিলেন অল্পবয়সে সংসারত্যাগী বৌদ্ধ ভিক্ষু। সংসারের সাধারণ দৈনন্দিন ব্যাপার সম্বন্ধে বা বৌদ্ধ ছাড়া অন্য (‘বিধর্মী’) সম্প্রদায় সম্বন্ধে তাঁর বিশেষ কৌতূহল বা শ্রদ্ধা ছিল না। এমন কি, হিন্দু বা জৈন মন্দির, ভাস্কর্য ইত্যাদি তিনি প্রায় সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন।
তাঁর ভারতে আসার এক প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বৌদ্ধ তীর্থস্থানগুলি দর্শন করা। সমগ্র ভারতে সে সময়ে অসংখ্য বৌদ্ধ সঙ্ঘারাম স্তূপ ইত্যাদি ছিল।স্তূপগুলির কতক ছিল বুদ্ধের বা তাঁর প্রধান শিষ্যদের দেহাবশেষ বা ব্যবহৃত সামগ্রীর উপর।
বেশীর ভাগই ছিল কোনো-না-কোনো বৌদ্ধ পৌরাণিক ঘটনার স্মৃতিচিহ্ন।হিউএনচাঙের গ্রন্থ ও তাঁর শিষ্য হুই-লির লিখিত জীবনচরিত এ সমস্ত স্তূপ সংক্রান্ত কাহিনীগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণে ভরা। এগুলির প্রত্যেকটি, ভক্ত বৌদ্ধের কাছে মনোরম হলেও, সাধারণ পাঠকের চিত্ত বিনোদন করতে অক্ষম।
তা ছাড়া তেরো শো বছর আগে হিউএনচাঙ যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভিতর দিয়ে পর্যটন করেছিলেন, তা মনে রাখলে তাঁর ভ্রমণের কতকটা স্পষ্ট ছবি কল্পনা করা সম্ভব হয়।
বর্তমান গ্রন্থে, সাধারণের পাঠোপযোগী ক’রে হিউএনচাঙের ভ্রমণ- কাহিনী ও তাঁর দৃষ্ট দেশগুলির সমসাময়িক রাষ্ট্রীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা, যতদূর জানা গিয়েছে, সংক্ষেপে দেওয়ার চেষ্টা করা গেল।
চলবে
Leave a Reply