শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৬৫)

  • Update Time : সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০.০০ এএম

প্রদীপ কুমার মজুমদার

এখানে ত্রি অশীতি অর্থাৎ গায়ত্রী, উষ্ণী ও বৃহতী তৃচ বা এর প্রতিপাদ্য ইন্দ্র দেবতাকে বলা হয়েছে। কারণ ঐতরেয় আরণ্যকে বলা হয়েছে “গায়ত্রী তৃচাশীতিঃ ঔফিহী তৃচাশীতিঃ বার্হতী তৃচাশীতিঃ” অর্থাৎ গায়ত্রী অশীতি সংখ্যক, উফি অশীতি সংখ্যক, বৃহতী অশীতি সংখ্যক। অথর্ববেদে অন্য কোন এক জায়গায় সংখ্যা দিয়ে বস্তুকে নির্দেশ করেছে। যেমন:

নবৈব তা নবতয়ে। যা ভূমিব্যধূস্থত।

প্রজাং হিংসিদ্ধা ব্রহ্মাণীমসংভব্যং পরাভবন। ৫।১৯/১১.

শ্লোকটির অর্থ সম্পূর্ণভাবে না লিখলেও আমরা বলতে পারি, ‘নবনবতি সংখ্যা দিয়ে শম্বরের নবনবতিপুর বিবক্ষিত হয়ে থাকবে’। অথর্ববেদের এমন একটি উদাহরণ তুলে ধরছি যেখানে একই নাম সংখ্যার বিভিন্ন প্রকারের অর্থ হতে পারে এমন ইঙ্গিত দেওয়া আছে। যেমন এখানে বলা হয়েছে-“ও’ যে ত্রি সপ্তা পপিযস্তি”। এই ত্রি সপ্ত’র অর্থ করতে গিয়ে সায়নাচার্য তিন ধরণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এগুলি হচ্ছে-

(ক) ত্রয়ো বা সপ্ত বা। এখানে ত্রি অর্থ পৃথিবীব্যাপি ত্রিলোক এদের অধিষ্ঠাতৃ দেবতা অগ্নি, বায়ু এবঃ আদিত্য; ত্রিগুণ; অথবা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। সপ্ত অর্থ সপ্ত ঋষি, সপ্ত গ্রহ, সপ্তলোক অথবা সপ্ত ছন্দ, সপ্ত মরুদগণ,

(খ) ত্রিঃ সপ্ত অর্থাৎ তিনটি সাত, সপ্তদিশ, সপ্ত ঋত্বিজ, সপ্ত আদিত্য অথবা সপ্ত সিন্ধু, সপ্তলোক, সপ্ত দিক। অর্থাৎ এখানে সাতটা বস্তু নিয়ে একটি দল গড়া হচ্ছে এবং এ ধরণের তিনটি দলের কথা বলতে ত্রিঃ সপ্তকে উল্লেখ করা হয়েছে।

(গ) ত্রিগুণিতা সপ্ত সংখ্যা অর্থাৎ ২১, এখানে বার মাস, পাচাট ঋতু, তিনটি লোক এবং আদিত্য এই একুশকেই বোঝান হয়েছে। অথবা পঞ্চমহাভূত, পঞ্চ প্রাণ, পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয় ও এক অন্তকরণের কথা ধরা হয়েছে। তাহলে আমরা দেখতে পেলাম-অথর্ববেদে বস্তুর দ্বারা সংখ্যাকে এবং সংখ্যার দ্বারা বস্তুকে অনেক জায়গায় নির্দেশ করেছে।

(চলবে)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৬৪)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৬৪)

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024