সত্যেন্দ্রকুমার বসু
হিউএনচাঙের বয়স যখন মাত্র বারো বছর তখন অপ্রত্যাশিতভাবে এক রাজাজ্ঞা আসে যে, লোইয়াঙের মঠে চৌদ্দ জন ভিক্ষু সরকারী খরচে প্রতিপালিত হবেন। শত শত আবেদনকারী উপস্থিত হলেন।
হিউএনচাঙের বয়স নির্দিষ্ট বয়স অপেক্ষা কম হওয়ায় তিনি প্রার্থী হতে পারেন নি। তবু তিনি ফটকের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রাজকর্মচারী তাঁকে দেখতে পেয়ে বললেন-“তুমি কে ভাই?” “আমি অমুক।” “তুমি কি শ্রামণের হতে চাও?” “অবশ্য। কিন্তু নির্দিষ্ট বয়সের চেয়ে আমার বয়স কম।” “কি উদ্দেশ্যে তুমি শ্রামণের হতে চাও?” “তথাগতের (বুদ্ধের) ধর্ম দেশে-বিদেশে প্রচার করাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।”
রাজকর্মচারী তাঁর প্রতিভাব্যঞ্জক আকৃতি ও কথাবার্তা দেখে শুনে এতই আশ্চর্য হলেন যে, ঐ অল্পবয়সেই তাঁকে মঠের ব্রহ্মচারী (শ্রামণের) হবার অধিকার দিলেন। এমন কি, এই সময়েই তাঁর বুদ্ধি এত তীক্ষ্ণ ছিল যে, মঠের সন্ন্যাসীরা তাঁকে মধ্যে মধ্যে অধ্যাপনা করতে বলতেন। হিউএনচাঙ ভারতীয় দর্শন অধ্যয়ন করতে আরম্ভ করলেন।
বৌদ্ধধর্মে, মহাযান ও হীমযান নামক যে দুই শাখা আছে তার মধ্যে মহাযানের দিকেই তিনি প্রথম থেকে আকৃষ্ট হন। ‘নির্বাণসূত্রের’ শূন্যবাদ ‘মহাযানসম্পরিগ্রহ-সূত্রে’র বিজ্ঞানবাদ তাঁর এত চিত্তাকর্ষক হল যে তিনি আহার নিদ্রা ত্যাগ করে এরই অনুশীলন করতে থাকলেন।
চলবে
Leave a Reply