সারাক্ষণ ডেস্ক
ব্র্যাকের ‘মেধাবিকাশ’ কার্যক্রমের নতুন উদ্যোগ ‘কায়সার ও ওয়েন্ডি জামান ফেলোশিপ’-এর যাত্রা শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগটি হবে ব্র্যাকের ‘মেধাবিকাশ’ কার্যক্রমের অন্যতম মূল ভিত্তি যা মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ঝরে পড়া ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। ‘মেধাবিকাশ’ ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির (বিইপি) একটি উদ্যোগ যেখানে সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অব্যাহত রাখতে আর্থিক সহযোগিতা এবং সেই সাথে দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা দেয়া হয়।
প্রথম ধাপে এই ফেলোশিপ বা প্রণোদনা তহবিলের মাধ্যমে শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে যেখানে কিশোরীদের প্রাথমিক শিক্ষা, গণিত, এবং অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষাদানের মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করা হবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অংশগ্রহণকারীদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় ফিরিয়ে আনা অথবা বিভিন্ন কারিগরি পেশায় দক্ষ করে তোলা কিংবা স্বাধীন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করা।
‘কায়সার ও ওয়েন্ডি জামান ফেলোশিপ’-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা উপলক্ষ্যে ২১শে জানুয়ারি, মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক ও কায়সার জামানের পরিবারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ, ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ, ব্র্যাকের পিপল কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-এর ঊর্ধ্বতন পরিচালক মৌটুসী কবীর, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান এবং ফাইন্যান্স ও অ্যাকাউন্টস বিভাগের সহযোগী পরিচালক নাজমুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কায়সার ও ওয়েন্ডি জামানের পরিবারের পক্ষ থেকে ছিলেন নাজিয়া দু বোয়া, ইয়াসমিন হোসেন এবং সৈয়দ রেজাউল করিম।
কায়সার জামানের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এই ফেলোশিপ নিয়ে ব্র্যাকের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন তার ভাগনি নাজিয়া দু বোয়া। তিনি বলেন, এই উদ্যোগটি সমাজে পরিবর্তন আনতে শিক্ষার গুরুত্বকে তুলে ধরছে। তার মামা কায়সার জামান এটি বিশ্বাস করতেন এবং এই লক্ষ্যে তিনি কাজ করে গেছেন। নাজিয়া দু বোয়া বলেন, কায়সার জামান চেয়েছিলেন এই ফেলোশিপ সুবিধাবঞ্চিত কিশোরীদের সহায়তা করবে এবং তাদের স্বাধীনতা ও সম্ভাবনার পথ খুলে দেবে। এই উদ্যোগটি অন্যদেরও এমন আরো পদক্ষেপ হাতে নিতে উৎসাহিত করবে। মামার স্বপ্ন পূরণের জন্য ব্র্যাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।
কায়সার জামান ছিলেন একজন প্রকৃত মানবতাবাদী এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তিনি ব্র্যাকের শুরুর দিনগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ছিলেন ব্র্যাকের গভর্নিং বডির সদস্য এবং এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের আজীবন সমর্থক। কায়সার জামান তার কর্মজীবন উত্সর্গ করেছিলেন বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত মানুষের সেবায়। কাজ করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এ। তিনি এবং তার স্ত্রী ওয়েন্ডি জামান এমন একটি ফেলোশিপের স্বপ্ন দেখেছিলেন যা তরুণদের, বিশেষত কিশোরীদের জন্য শিক্ষা ও অন্যান্য সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করবে। ২০২৩ সালের ১৯শে জুন কায়সার জামান মৃত্যুবরণ করেন।
Leave a Reply