গত বছরের জুলাই থেকে এদেশের মানুষ একের পর এক অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখছে। যার প্রতিটিই হত্যা। ছাত্র হত্যা, শিশু হত্যা, নারী হত্যা, সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায়ের মানুষ হত্যা। পুলিশ হত্যা, র্যাব হত্যা, গর্ভবতী নারী ও গর্ভের শিশু হত্যা। খাবার দেয়ার নাম করে ছাত্র হত্যা।
আর এ সব হত্যার মধ্যে যেমন আছে ভয়াবহতা, তেমনি আছে বিভৎসতা। পশুর মতো করে শুধু নির্মমভাবে হত্যা নয়, হত্যার পরে গাছে, ল্যম্প পোস্টে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো বা হচ্ছে সে সব দেহ। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেও। আবার কেউবা কোন না কোন ভয়াবহতা সহ্য করতে না পেরে করছে আত্মহত্যা।
সব মিলে রাষ্ট্র জুড়ে যে নির্মমতার ও শৃঙ্খলহীনতার দৃশ্য জুলাই থেকে রাষ্ট্র’র কাছ থেকে আবার এক শ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে দেখা যাচ্ছে- কোন মতেই এমনটি একটি সমাজের ভবিষ্যতের জন্যে ভালো নয়। এ নির্মমতার ছাপ পড়ছে ছোট শিশুদের থেকে তরুণ প্রজম্মের ওপর। যেহেতু এখন তথ্য প্রযুক্তির কারণে এ সব দৃশ্য তারা দেখছে। মানুষের মনের ওপর এ সব দৃশ্য’র ছাপ কি প্রতিক্রিয়া ফেলে আর তার প্রভাব একটি সমাজকে কতকাল বয়ে বেড়াতে হয় তা চিন্তা করলে যে কেউই শিউরে উঠবে।
তাই রাষ্ট্র, সমাজও বিশেষ করে আগামী একটি সুস্থ প্রজম্মের জন্য অবিলম্বে এগুলো বন্ধ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সমাজের স্বাভাবিকতা। এ দায় যাদের সক্ষমতা আছে তাদের কাউকে না কাউকে নিতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে সমাজের ও রাষ্ট্রের স্বাভাবিক নিয়ম। যেখানে বিচারের বানী উচ্চ স্বর হবে। নীরবে কাঁদবে না কখনও। তাছাড়া রাষ্ট্রের সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের স্বাভাবিক কাজ করার পাবে সঠিক গ্যারান্টি। বন্ধ হবে রাস্ট্র ও সমাজ থেকে সব ধরনের প্রাইভেট বাহিনী। পিতা মাতা তাদের সন্তানদের প্রতি হবে মনোযোগী। তাদেরকে আবার ফিরিয়ে আনবে পড়ার টেবিলে। সমাজের সচেতন মানুষও রাষ্ট্র পরিচালকরা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন, জুলাই থেকে এ অবধি বিক্রি কমে গেছে বই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পারস্পারিক একটা দ্বন্ধ নিয়েই যেন সকলে ব্যস্ত। সেখানে অনেকের ভাষাও শালীনতাহীন। এসব কোনটাই সমাজের জন্য ভালো নয়। আর এ অবস্থাই সকল অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ হয়।
তাই সকল ক্ষুদ্র স্বার্থের উর্ধে উঠে দেশপ্রেম ও দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিশ্চিত হোক স্বাভাবিক জীবন যাপন । বন্ধ হোক সব ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যু।
Leave a Reply