শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

আলু চাষীদের মাথায় হাত

  • Update Time : শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ৩.০৩ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

১. চাষীরা আলু বিক্রি করছে ৯ থেকে ১২ টাকায় যা গত দুই বছরে ১৮ থেকে ২৪ টাকা ছিলো

২. টিসিবির তথ্য অুনযায়ী আলূর দাম ৫৫ শতাংশ কমে গেছে

৩. দিনাজপুরের এক কৃষক তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ৩০ হাজার টাকা

৪. আলু সংগ্রহ মৌসুমে ভারতের রফতানির জন্যে আরো  ৯টি স্থল বন্দর খুলে দিয়ে এ সংকট বেড়েছে

৫. আলু সংগ্রহ মৌসুমে কেন এত আমদানী করা হলো তা নিয়ে অনেকেই বিস্মিত

৬. এই অবস্থার ফলে একটা পর্যায়ে আলুর বাজারের আধিপত্য পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যেতে পারে

আলুর দাম তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা আলু চাষে তাদের বিনিয়োগ তুলতে না পেরে মাথায় হাত দিয়ে বসে গেছেন, কারণ এই ব্যাপক মূল্যহ্রাস ঘটেছে আলু উত্তোলনের মৌসুমের মূল সময়ে। অনেকেই দাবি করছেন, অন্তত তিন মাসের জন্য আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও হয়তো এমনটা ঘটতো না।

ঢাকার খুচরা বাজারে আলুর দাম কমে প্রতি কেজি ২০-৩০ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে মাত্র এক সপ্তাহ আগে এটি ছিল ৪০-৫০ টাকা এবং এক মাস আগে ৬০-৮০ টাকা।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের (ডিএএম) তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে আলুর দাম গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশেরও থেকেও কম।

ডিএএম-এর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে কৃষকরা প্রতি কেজি আলু ৯-১২ টাকায় বিক্রি করছেন, যা গত দুই বছরে ১৮-২৪ টাকার মধ্যে ছিল।

তিনি আরও জানান, উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, যেখানে প্রতি হেক্টরে খরচ পড়ছে অন্তত দুই লাখ টাকা। কৃষকরা সাধারণত প্রতি হেক্টরে ১.৫ টন বীজ ব্যবহার করেন, যা থেকে ১৮-২০ টন আলু উৎপাদন সম্ভব। বর্তমানে তারা প্রতি হেক্টরে সর্বোচ্চ ২.২ লাখ টাকা আয় করছেন, যা তাদের উত্‌পাদন খরচের থেকে কম।

বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন (টিসিবি)-এর তথ্য অনুসারে, এক মাসে আলুর দাম ৫৫ শতাংশ কমে গেছে এবং এটি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত বছরের ফসল তোলার মৌসুমে ঢাকার ভোক্তারা প্রতি কেজি আলু ৩৫-৪০ টাকায় কিনেছেন, যা ২০২৩ সালে ২৬-৩৫ টাকা ছিল।

স্থলবন্দর খুলে দেওয়া

সরকার ১৯ জানুয়ারি আলু আমদানির জন্য আরও নয়টি বন্দর খুলে দেয়। এর মধ্যে সিলেটে তিনটি, ময়মনসিংহে দুটি এবং কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি করে বন্দর অন্তর্ভুক্ত। এর আগে বেনাপোল, হিলি এবং অন্যান্য স্থলবন্দর ব্যবহৃত হতো।

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষক এবং ব্যবসায়ী রহমান মোল্লা জানান, তিনি ছয় বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন।তিন বিঘার আলু উত্তোলন করে ৩০,০০০ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বাকি তিন বিঘার আলু সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করছেন- এই আশায় যে ভবিষ্যতে দাম বাড়তে পারে, তবে তারপরেও উদ্বিগ্ন বিনিয়োগ উদ্ধার করা যাবে কিনা এই ভেবে।

তিনি আরও জানান, ক্ষুদ্র কৃষক এবং ভাগচাষিরা আরও বেশি সংকটে রয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্যানতত্ত্ব শাখার  একজন কর্মকর্তা জানান, অনুকূল আবহাওয়া এবং গত বছরের রেকর্ড দাম কৃষকদের এ বছর আলু চাষ বাড়াতে উৎসাহিত করে। “আমরা ১১ মিলিয়ন টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি,” তিনি বলেন।

মূল্য শৃঙ্খলা বিশ্লেষকদের মতে “যদি দাম উৎপাদন খরচের নিচে নেমে যায়, তবে আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। বাজারের প্রবণতা ইঙ্গিত দিচ্ছে, আগামী তিন মাসে আলুর ঘাটতি হবে না। তাই কৃষকদের জন্য দাম স্থিতিশীল করতে আমদানি নিষেধাজ্ঞা জরুরি।”

তাদের মতে , “প্রাথমিক ব্যবসা শেষ হওয়ার পর ব্যবসায়ী এবং কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা বাজারে আধিপত্য করবে এবং দাম বাড়িয়ে দেবে।” সংগ্রহ মৌসুমে কেন এত আলু আমদানী করা হলো তা নিয়ে অনেকেই বিস্মিত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024