প্রদীপ কুমার মজুমদার
রোটাস শিলাপিপিতে যোগবিধির নিয়মে নামসংখ্যার উল্লেখ আছে। এখানে বলা হয়েছে:
নবতিনবমুনীন্দ্রৈর্বাসরাণামধীশৈঃ
পরিকলয়তি সংখ্যাং বৎসরে সাহশাকে।
এখানে নবতি (৯০), নব (১), মুনি (৭), ইন্দ্র (১৪), বাসরাণামধীশঃ (-১২); যোগবিধির সাহায্যে এটি লিখলে হবে: ১০+৯+৭+১৪+১২-১৩২ অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে রোটাস শিলালিপি ১৩২ শকাব্দে উৎকীর্ণ হয়েছে। অতএব আমরা দেখতে পেলাম নামসংখ্যার প্রয়োগ ব্যাপক আকারে ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল। এবার জৈন শাস্ত্রে এবং গণিতগ্রন্থের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক।
লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে যে জৈন নানা আগমশাস্ত্রে নাম’ সংখ্যার বহুল ব্যবহার রয়েছে। বিশেষ করে অনুযোগদ্বারস্থত্রে, জিনভদ্রগনি লিখিত বৃহৎক্ষেএমাসে, নেমীচন্দ্র লিখিত গোম্মটসারে, ত্রিলোকসারে, তিলয়পন্নত্তিতে (ত্রিলোকপ্রজ্ঞপ্তি), ব্যবহার সূত্রে, সূর্যপ্রজ্ঞপ্তি প্রভৃতি গ্রন্থে ব্যাপক নাম সংখ্যার ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। যেমন ধরা যাক-
(ক) সুল্লিংদিয়দুগপংচয়ইওগতিগ- ৩১৫২৫০
(বৃহৎ ক্ষেত্রসমাস ১৪৮৫)
(খ) পণ সত্তগ তিগ গণ তিগ ছগ চউট, ঠিকো-১৮৪২৩৫৩৭৫ (ঐ ১/৩৯১)
(গ) নবচদুদুগখস্তিয়ভূগচউকেক্কক- ১৪২৩০২৪৯
(ঘ) বার খং ছক্কং-৬০১২ (গোস্মটসার; ১২৫ গাখা)
(৫) অট্টচ্ছানংসুংণংপঞ্চছরিগিগয়ণতিনহণবসুংণ
অংবর ছকেতো হিং অংককাম -১৬০০৯০৩০ ১২৫০০০০০০০০
(চ) পল্লাসমেকাদলংণবছপ্পন্নাসসুন্ননবসদরী
(পঞ্চাশদেকচত্বারিংশন্নবষট, পঞ্চাশচ্ছ, ন্যং নবসপ্ততি)
– ৭৯০৫৬৯৪১৫০
(ছ) ছাদালসুন্নসত্তয়বাবঘ্নং ৫২৭০৪৬
(ষট্চত্বারিংশচ্ছ, নাসপ্তকদ্বিপঞ্চাশৎ)
(জ) পণসুন্নৎচউরাসীয়-৮৪০০০০০
একক, দশক, শতক, সহস্র, কোটি বা ততোধিক অঙ্কস্থানের নাম করতে গেলে হয়তো ভারী হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে রাশির অন্তর্ভুক্ত অঙ্কগুলির নাম ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করার কথা অনেক ক্ষেত্রে বলা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে হেমচন্দ্র বলেছেন- “অয়ং চ রাশিঃ কোটিকোট্যাদিপ্রকারেণ কেনাপ্যভিধাতুং ন শক্যতে। অতঃ পর্য্যন্তাদারভ্যাঙ্কমানসংগ্রহার্থং গাথাদ্বয়ং।” (অনুযোগদ্বার সূত্র, ১৪২ সূত্রের টাকা দ্রষ্টব্য।) অর্থাৎ “এই রাশিকে কোটি-কোট্যাদি প্রকার বলিতে কেহই সমর্থ নহেন। তাই এক প্রান্ত হইতে আরম্ভ করিয়া অঙ্কমান সংগ্রহের জন্য গাথারে (উল্লেখ করা হইল)”।
(চলবে)
Leave a Reply