মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

স্থবির অর্থনীতি সরকারকে ব্যাংক ঋণে নির্ভরশীল করেছে: এ পর্যন্ত নিয়েছে ১৬,০০০ কোটি

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫, ২.৩০ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

২৫ সালের জানুয়ারি অবধি নিট ঋণের পরিমান দাঁড়িয়েছে ১৫,৭৫৯ কোটিআগের অর্থ বছরে এ সময়ে ছিলো ৭৭৮.৩০ কোটি

. উচ্চ সুদের হার এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বেসরকারি খাত এখন ঋণ নিতে আগ্রহী নয়।

. বেশিরভাগ সরকারি প্রকল্প এখন স্থবির অবস্থায় রয়েছেযার কারণে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো তহবিল ছাড়ছে না। এছাড়াব্যবসায়িক কার্যক্রমের ব্যাঘাতের কারণে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি।

. সরকারের ফোকাস যে অর্থনীতিতে তারও সঠিক প্রমান মিলছে না

দুর্বল কর সংগ্রহবেসরকারি খাতের ধীর ঋণ প্রবাহ এবং গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে সামগ্রিক অর্থনৈতিক চরম মন্দার ফলে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে,নিট ব্যাংক ঋণ হিসাব করা হয়সরকারের ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে ফেরত দেওয়া ঋণের পরিমাণ বাদ দিয়ে।

এফওয়াই ২৫ সালের জানুয়ারি ২২ পর্যন্তসরকারের নিট ব্যাংক ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৫,৭৫৯ কোটি টাকাযেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে এটি ছিল ঋণাত্মক ৭৭৮.৩০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ীএই বৃদ্ধি ঘটেছে।

তবেএফওয়াই২৫-এ নির্ধারিত লক্ষ্য ১,৩৭,৫০০ কোটি টাকার তুলনায় বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ বৃদ্ধি ধীর গতিতে হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ীজানুয়ারি ২২ পর্যন্ত সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে প্রায় ৭৪,৪২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং একই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ৫৮,৬৬১ কোটি টাকার কিছু বেশি পরিশোধ করেছে।

সাধারণত সরকার ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তেকেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাক্ষণকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণদান স্থগিত করায় সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি যোগ করেন যেউচ্চ সুদের হার এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বেসরকারি খাত এখন ঋণ নিতে আগ্রহী নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ীবেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ নভেম্বর মাসে কমে ৭.৬৬ শতাংশে নেমে এসেছেযা মে ২০২১ এর ৭.৫৫ শতাংশের পর থেকে সর্বনিম্ন।

ফলে বেসরকারি খাত ঋণ নিতে আগ্রহী না হওয়ায়ব্যাংকগুলোর কাছে অতিরিক্ত তহবিল রয়েছে এবং তারা সরকারের ট্রেজারি বিল এবং বন্ডে বিনিয়োগ করতে অত্যন্ত আগ্রহী।

সরকারের অর্থের বড় প্রয়োজন রয়েছেযা জরুরি ভিত্তিতে দরকারবলেছেন  একজন সরকারি ব্যাংকের এমডি ও অর্থনীতিবিদ। তিনি আরও বলেনবেশিরভাগ সরকারি প্রকল্প এখন স্থবির অবস্থায় রয়েছেযার কারণে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো তহবিল ছাড়ছে না। এছাড়াব্যবসায়িক কার্যক্রমের ব্যাঘাতের কারণে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি।

ওই ব্যাংকার আরো বলেন, সরকার ব্যাংক থেকে উচ্চ ঋণ নিলেও বেসরকারি খাতে এর প্রভাব কম পড়বেকারণ এই মুহূর্তে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা আগ্রহী নয়। তারা এখন অনেকে ব্যবসা গুটাচ্ছে অনেকে ওয়েট এন্ড সি পলিসিতে আছে। আবার কেউ কেউ এই সরকারকে শিল্প ও ব্যবসা বান্ধব মনে করছে না

একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বলেনসরকার তার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বিদেশি তহবিলের প্রবাহও ধীর হয়ে গেছেফলে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুকএন বি আর এর একজন প্রাক্তন চেয়ারম্যান বলেন, এর চেয়েও খারাপ হলোএফওয়াই২৫-এর জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১,৫৬,৪৪২ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছেযা বছরের ভিত্তিতে ০.৯৮ শতাংশ হ্রাস দেখায়। ফলে সরকার সঞ্চয়পত্র এবং ব্যাংকিং খাতের ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।নতুন কোন পথ সরকার খুঁজছে বলে দৃশ্যমান নয় এমনকি সরকারের ফোকাস যে অর্থনীতিতে তারও সঠিক প্রমান মিলছে না

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024