সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “এবার ইসি নিজেই আইন পর্যালোচনা করছে”
এবার নিজেরাই নির্বাচন–সংক্রান্ত আইনবিধি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব তৈরির কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটার তালিকা আইন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালার মতো বিষয় পর্যালোচনা করছে তারা। যদিও এসব বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রয়েছে।
পর্যালোচনা শেষে ইসি কিছু আইনবিধি সংস্কারের জন্য নিজেদের একটি প্রস্তাব অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়ার চিন্তা করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন সংস্কার কমিশনের অন্তত চারটি সুপারিশ নিয়ে জোরালো আপত্তি তুলেছেন। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের অনেকগুলো সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে। এরপর সামনে এল নিজেদের মতো করে আইন পর্যালোচনার বিষয়টি।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আসার আগে ইসির এমন উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সংস্কার কমিশন আর ইসির প্রস্তাবের মধ্যে একটি সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি হয় কি না বা ইসি সংস্কার কমিশনকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে।
নির্বাচনী ক্ষেত্রে সংস্কার আনার লক্ষ্যে গত অক্টোবরে বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনসহ অংশীজনদের মতামত নিয়ে ১৫ জানুয়ারি কমিশন তাদের সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছে। এই কমিশনসহ প্রথম ধাপে গঠন করা ছয়টি সংস্কার কমিশন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে সরকার। তার মধ্য দিয়ে সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। এর মধ্যে ইসির এই উদ্যোগ সামনে এল।
আজ বৃহস্পতিবার ইসি এমন চারটি আইন ও নীতিমালা পর্যালোচনায় বসছে, যেগুলোর বিষয়ে সংস্কার কমিশনের নিজস্ব সুপারিশও আছে। সেসব সুপারিশ এখনো বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি নারী প্রতি বছর মারা যান”
প্রতিরোধযোগ্য হলেও দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি নারী প্রতি বছর মারা যাচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী অসংক্রামক রোগের মধ্যে নারীদের জরায়ুর ক্যানসার অন্যতম। নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের অভাব, বাল্যবিবাহ, ঘন ঘন সন্তান প্রসব, একাধিক নারী-পুরুষের সঙ্গে মেলামেশাসহ বিভিন্ন কারণে জরায়ুমুখে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। ফলে নিয়মিত স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন। আর কমবয়সি নারীদের ক্ষেত্রে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা নেওয়া জরুরি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে বাংলাদেশের মেয়েরা জরায়ুর ক্যানসারের ঝুঁকিতে থাকে। দেশে প্রতি বছর ৮ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫ হাজার নারী এই ক্যানসারে প্রতি বছর মারা যান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রাথমিকভাবে ধরা পড়লে চিকিৎসায় রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব। এই ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি নামের ক্ষতিকর ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা নিতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে এবং এই ক্যানসারের ঝুঁকি ও প্রতিরোধ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা বাড়াতে হবে এবং নিয়মিত স্ক্রিনিং করাতে হবে।
জানুয়ারি মাস জুড়ে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা মাস-২০২৫। সচেতনতা বাড়াতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। জন হপসকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. হালিদা হানুম আখতার বলেন, আমাদের দেশে তথা অনুন্নত দেশে যতজনের ক্যানসার ধরা পড়ছে, তার অর্ধেকের বেশি প্রতি বছর মারা যাচ্ছে। এটি একটি জরুরি পর্যবেক্ষণ। কেন মারা যাবে এতজন? যে রোগ প্রতিরোধযোগ্য, যেটি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা যায় এবং সুন্দর করে চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেখানে কেন অর্ধেকের বেশি বা ৬০ শতাংশ ধরা পড়ার পর মারা যাবে? এটি একটি বড় প্রশ্ন। এর উত্তর হলো, আমরা নিজেরা সচেতন নই। আমরা জানি না, এই রোগ হতে পারে। আর এই সচেতনতার ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, আমাদের জানতে হবে যে রোগটি প্রতিরোধযোগ্য। এখন নতুন বিজ্ঞান এসেছে, এইচপিভির ভ্যাকসিন বের হয়েছে। এই ভ্যাকসিন ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সের মেয়েদের দিলে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাংলাদেশে এখন ইপিআইর মাধ্যমে স্কুল-কলেজের মেয়েদের এটি দেওয়া হচ্ছে। ২৬ বছর পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন কাজে লাগে। তবে তিনটি ডোজ নিতে হয়।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম”বিপুল বকেয়া সিস্টেম লস চুরি আড়াল করে বারবার দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ”
দেশে গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলোর বিপুল পরিমাণ পাওনা অর্থ গ্রাহকের কাছে আটকে রয়েছে। পেট্রোবাংলার সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, এর পরিমাণ ৩৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ বকেয়ার সঙ্গে কোম্পানিগুলোর আর্থিক চাপকে আরো বাড়িয়ে তুলছে গ্যাসের সিস্টেম লস ও চুরি। এর মধ্যেই রাজস্ব আয়ের বড় একটি অংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হচ্ছে কোম্পানিগুলোকে। আবার একই সঙ্গে বাড়ছে উচ্চমূল্যে আমদানি করা এলএনজির ওপর নির্ভরতা। পতিত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রকট হয়ে ওঠা গ্যাস খাতের এ অদক্ষতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও একই ধারায় রয়েছে। আর চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে এর খেসারত দিতে হচ্ছে ভোক্তাকে। কিন্তু উৎপাদন থেকে বিক্রি পর্যন্ত নানা পর্যায়ের এমন লোকসান-অসংগতি আর অপচয়কে এড়িয়ে আবারো গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এভাবে বারবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর চেষ্টা দেশের অর্থনীতিকে আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর খাতটির অদক্ষতা ও অনিয়ম দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাপনাকে আরো জটিল করে তুলেছে। অভ্যুত্থানের পর গ্যাসসহ সার্বিক জ্বালানি খাতে বড় ধরনের সংস্কার ও পরিবর্তনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা পূরণ হয়নি। বরং দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও আমলাতান্ত্রিকতাকে সঙ্গে নিয়ে বিগত সরকারের দেখানো পথে পরিচালিত হচ্ছে দেশের গ্যাস খাত।
যদিও জ্বালানি বিভাগ বলছে, গ্যাস খাতে সিস্টেম লস, বকেয়া আদায় ও এ খাতের দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে আগামীতে বকেয়া ও সিস্টেম লস কমে আসার পাশাপাশি গ্যাসের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গ্যাস খাতের বকেয়া আদায়, সিস্টেম লস, চুরি এগুলো আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। গ্যাসের সিস্টেম লস কমাতে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পয়েন্টে মিটার বসিয়েছে। এগুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। বকেয়া আদায়, সিস্টেম লস, চুরি এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে কমিয়ে আনা কঠিন। এগুলো জোরালো তদারকির মাধ্যমে আমরা যৌক্তিকভাবে কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “আওয়ামী লীগের কর্মসূচি, কঠোর অবস্থানে সরকার”
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আবারো কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে নানা কর্মসূচির সঙ্গে আছে হরতালের ঘোষণাও। এর আগেও এমন কর্মসূচি ঘোষণা করে পালন করতে পারেনি দলটি। নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর বার্তা দেয়া হয়েছে। গণহত্যার বিচার হওয়া এবং দলটি গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার আগে তাদের কর্মসূচি পালনের সুযোগ নেই। এমন কোনো কিছু করার চেষ্টা করলে দেশের জনগণই তাদের প্রতিহত করবে। ওদিকে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে কর্মসূচি ঘোষণার পর বিএনপি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, গণহত্যাকারীদের বিচার হওয়ার আগে তাদের রাজনীতি করতে দেয়ার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক পেজে আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ই ফেব্রুয়ারি বুধবার লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করবে দলটি। ৬ই ফেব্রুয়ারি দেশে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১০ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ১৬ই ফেব্রুয়ারি রোববার অবরোধ এবং ১৮ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘কঠোর’ হরতাল কর্মসূচি পালনের কথা বলা হয়।
৫ই আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে দলটির কোনো সক্রিয় কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়নি। দলের প্রধান নেতা-কর্মীর বেশির ভাগই দেশের বাইরে আছেন, কেউ পলাতক রয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন নেতা একাধিক মামলায় আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন। গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর সেখানেই অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি হত্যা, গণহত্যা, গুম ও নির্যাতনসহ অনেক মামলা করা হয়েছে। চলমান মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় ‘পলাতক’ ঘোষণা করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। তার প্রত্যর্পণের জন্য গত ২৩শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে। এমন অবস্থায় দলটির কর্মসূচি পালন দুরূহ বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে গত ১০ই নভেম্বর রাস্তায় নামার ঘোষণা দিলেও দলটির কাউকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষিদ্ধ এই সংগঠনও ফেব্রুয়ারিতে কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ যত দিন না ক্ষমা চাচ্ছে, যত দিন না তাদের নেতৃত্বকে বিচারের মধ্যে আনা হচ্ছে এবং যত দিন না জবাবদিহির মধ্যে আসছে, তত দিন তাদের কোনো প্রোটেস্ট (প্রতিবাদ কর্মসূচি) করতে দেয়া হবে না।
বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগ নিয়ে সরকারের এ অবস্থানের কথা জানান শফিকুল আলম। এর আগে এদিন সকালে নিজের ফেসবুকে এক পোস্টেও এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
Leave a Reply